ভাষা সংগ্রামী ‍‍‍‌‌"রওশন আরা বাচ্চুর" ইন্তেকাল


প্রকাশিত:
৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৫১

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০১:২৫

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: হৃদয়ে ৮ ফাল্গুন সংগঠনের আহবায়ক ভাষা সংগ্রামী ‍‍রওশন আরা বাচ্চু মঙ্গলবার ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্না....রাজিউন)।  আমরা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। বায়ান্নোর উত্তাল একুশে ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় মেয়েদের যে মিছিল পুলিশের ব্যারিকেডে ভেঙেছিল, সেই মিছিলের প্রধান মুখ ছিলেন এই রওশন আরা বাচ্চু।মঙ্গলবার ভোর রাতে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে গণমাধ্যমকে জানান তার মেয়ে তাহমিদা বাচ্চু।

তিনি বলেন, “মা বেশ কদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।” ভাষা সৈনিক রওশন আরা বাচ্চুর মৃত্যুর খবরে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। 

বাংলা একাডেমির জনসংযোগ কর্মকর্তা পিয়াস মজিদ জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রওশন আরা বাচ্চুর মরদেহ আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টায় বাংলা একাডেমিতে নিয়ে যাওয়া হবে।

পরে তার কফিন নিয়ে যাওয়া হবে রাজধানীর পশ্চিম মণিপুরের বাসায়। আসরের পর জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি কুলাউড়ায়।  সেখানে রাতেই তাকে দাফন করা হবে বলে জানান মেয়ে তাহমিদা।

মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া থানার উছলাপাড়া গ্রামে ১৯৩২ সালের ১৭ই ডিসেম্বর রওশন আরা বাচ্চুর জন্ম। পিরোজপুর গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে অনার্স ও পরে ইতিহাসে এমএ পাস করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলোতেই রওশন আরা গণতান্ত্রিক প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্টে যোগ দিয়ে জড়িয়ে পড়েন ছাত্র রাজনীতিতে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্সের সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

একুশে ফেব্রুয়ারিতে যে ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙতে চেয়েছিলেন তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। সেদিন তার নেতৃত্বেই ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমাবেশস্থলে সমবেত হয়।

সমাবেশস্থলের বাইরে তখন পুলিশ ব্যারিকেড দিয়েছে। আরও কয়েকজন ছাত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রওশন আরা বাচ্চু সেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন এবং দলের অন্যদের নিয়ে বেরিয়ে যান। পুলিশ এলোপাথাড়ি লাঠিপেটা শুরু করলে আহত হন দুজন, তাদের একজন রওশন আরা। ঢাকার আনন্দময়ী স্কুল, লিটল অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গার্লস স্কুল, নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুলে তিনি শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘ দিন। সবশেষে ২০০০ সালে বিএড কলেজের অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান সংগ্রামী এই নারী।

তার স্মৃতিচারণে শাহান আরা জাকির পারুল বলেন,  একদিন আমন্ত্রণে তাঁর বাসায় গিয়েছিলাম।  তার গাছ ভর্তি কাঁঠাল গাছ থেকে প্রত্যাককে এক বা একাধিক কাঁঠাল উপহার দিয়েছিলেন।  যা আজও স্মৃতিতে ভাসে।   অনেক ভালোবাসতেন আমাকে।  কিন্তু সবকিছুই আজ স্মৃতি।  রাব্বুল আলামীন জান্নাতবাসী করুক তাকে।  আমিন


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top