আলোয় ভুবন ভরা : মালিহা পারভীন
প্রকাশিত:
৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৯:৩২
আপডেট:
১৪ মার্চ ২০২৫ ১৮:২৩

ছোটবেলায় খেলা করতাম যে মাঠে
তার একদিকে ছিল মসজিদ, অন্যদিকে গির্জা।
সন্ধ্যে হলেই গির্জায় ঘন্টা বাজতো ,
মসজিদ থেকে আজান,
তাপসিদের বাড়ির উলুধ্বনি তাও শোনা যেতো --
মিলিত আহবানের এই আলাম্পনে
ক্রমে গভীর হতো আমাদের বন্ধুত্ব সব ভেদাভেদ ভুলে।।
এখনও সন্ধ্যাগুলি তেমনি আছে
শুধু পথহারা ঘুনে পোকা এক নিউরনে ঘুরপাক খায়
লু হাওয়া বইয়ে দেয় বিবেকের অলিন্দ গলিতে ।
আমাদের শৈশবে পিযুসদের লক্ষিপুজার নাড়ু হামিদের ইফতারিতে পার্থক্য ছিল না।
মাসি, খালা , ভাই, দাদা ডাকে সম্পর্কের ফারাক ছিল না।
আমরা তো জানিই
আস্তাকুঁড়ের শিশুকে যখন কোলে তুলে নেয় সন্তানহীনা মা,
ধর্ম তোলে না দেয়াল মাতৃস্নেহে !
শিরায় শিরায় প্রবাহিত রক্ত বাঁচায় যে প্রান
রক্তদাতার ধর্মের খোঁজ রাখে না কেউ !
যে জয়ন্তি ভালবেসে ঘর ছেড়ে 'আমিনা' হয়
সেই ভালবাসাবাসির কোনো ধর্ম থাকে না।
সন্ধ্যা মালতি, ভোরের শিউলিকে বলি
পুজোর থালায় আর গলার মালায় সে কি আলাদা কেউ ?
যে মাটি ফলায় ধান তাকেও বলি
ক্ষুধার্তের মুখে অন্ন যোগায় কোনো ভেদাভেদে?
যে গোলাপ কোরক ফোটে, ছড়ায় সুবাস
সে সবার জন্য।
'পানি ' 'জল' যাই বলি তৃষ্ণা মেটায় সমান।
আকাশ, সূর্য , বর্ষা, বসন্ত এতো যে আয়োজন
সবই বৈষম্যহী ধর্ম বর্ণে।
প্রগাঢ় শান্তির বাজুক ঐক্যতান
' মানবিকতা' রোগ সংক্রামিত হউক জীবনে জীবনে।
হিংসা, ক্রোধ হউক দূর --
আলোর নুপুর বাজুক হৃদয় নিখিলে
সুবাসিত হউক অন্তর
ধর্ম মোড়ক খুলে মানুষ হউক সত্যি মানুষ
কেবলই মানুষ।।
ডা: মালিহা পারভীন
কবি ও কথা সাহিত্যিক
সেগুনবাগিচা, ঢাকা
বিষয়: ডা: মালিহা পারভীন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: