কোন দেশে কতোবার গেল বিশ্বকাপ
প্রকাশিত:
৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:৩১
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৮:৫৭

বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর মাঠে গড়াচ্ছে আগামীকাল। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ ‘বিশ্বকাপ।’ ক্রিকেটের তীর্থস্থান ভারতের মাটিতেই হবে এবারের মহারণ।
১০ দলের অংশগ্রহণে ১০ ভেন্যুতে ৪৬ দিনে অনুষ্ঠিত হবে ৪৮ ম্যাচ। আহমেদাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লি, ধর্মশালা, হায়দারাবাদ, কলকাতা, লখনউ, মুম্বাই ও পুনেতে ব্যাটে-বলে মুন্সিয়ানা দেখাবেন ক্রিকেটাররা। বেরিয়ে আসবে নতুন কোনো তারকা।
ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের আসর বিশ্বকাপের ১৩তম প্রতিযোগিতা। ১৯৭৫ সাল থেকে হয়ে আসছে এই শিরোপার লড়াই। যেখানে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল অস্ট্রেলিয়া। ৫ বার শিরোপা উল্লাস করেছে হলুদ বাহিনীরা। একাধিকার স্বাদ পেয়েছে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চলুন দেখে আসি গত ১২ আসর-
প্রথম বিশ্বকাপ (১৯৭৫)
ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৫ সালে। আট দলের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ক্রিকেটের বৃহৎ এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ইংল্যান্ডে। তখন খেলা হতো ইনিংস প্রতি ৬০ ওভারে। যেখানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় বিশ্বকাপ (১৯৭৯)
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেরও আয়োজক ছিল ইংল্যান্ড। বৈশ্বিক এই আসরেও আটটি দল অংশগ্রহণ করে। এবারও শিরোপা জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এবার ফাইনাল স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারায় তারা।
তৃতীয় বিশ্বকাপ (১৯৮৩)
এবারের আসরের আয়োজকও ছিল ইংল্যান্ড। এই বিশ্বকাপেও অংশ নেয় ৮টি দল। যেখানে লর্ডসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে শিরোপা জয় করে কপিল দেবের নেতৃত্বাধীন ভারত।
চতুর্থ বিশ্বকাপ (১৯৮৭)
চতুর্থ বিশ্বকাপ আসর আয়োজিত হয় ভারতীয় উপমহাদেশে। আয়োজক ছিল ভারত ও পাকিস্তান। এবারই প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজিত হয় ৫০ ওভারে। তাছাড়া সাদা বলের প্রচলন শুরু হয় এখান থেকেই। এই আসরে ফাইনালে ইংল্যান্ড হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় অস্ট্রেলিয়া।
পঞ্চম বিশ্বকাপ (১৯৯২)
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ছোঁয়া লাগে আধুনিকতার। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ মঞ্চে রঙিন পোশাক, সাদা বল, উভয় প্রান্তে নতুন বল, ডে-নাইট ম্যাচ, নির্দিষ্ট ফিল্ডিং রেসট্রিকশন ইত্যাদি সংযুক্ত হয়। এছাড়াও এই বিশ্বকাপেই প্রথম যুক্ত হয় বৃষ্টি আইন। যৌথভাবে এই আসর আয়োজন করে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। মেলবোর্নের ফাইনালে ইংলিশদের হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে ইমরান খানের পাকিস্তান।
ষষ্ঠ বিশ্বকাপ (১৯৯৬)
বিশ্বকাপের ষষ্ঠ আসর আয়োজিত হয় ভারতীয় উপমহাদেশে। ভারত ও পাকিস্তানের সাথে এবার আয়োজকের দায়িত্ব পায় শ্রীলঙ্কা। এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে ১২টি দল। ফেভারিট তকমা না থাকলেও সবাইকে অবাক করে করে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নেয় অর্জুন রানাতুঙ্গার শ্রীলঙ্কা।
সপ্তম বিশ্বকাপ (১৯৯৯)
১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় ক্রিকেট বিশ্বকাপে সপ্তম আসর। এই বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ। অভিষেক বিশ্বকাপ বেশ স্মরণীয় করে রাখে বাংলাদেশ। যেখানে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারায় বাংলাদেশ। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তোলে অস্ট্রেলিয়া।
অষ্টম বিশ্বকাপ (২০০৩)
বিশ্বকাপের অষ্টম আসর যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ায়। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করে ১৪টি দল। এই বিশ্বকাপ ছিল বাংলাদেশের জন্য চরম হতাশার। একটা ম্যাচও জিততে পারেনি দল। তবে এই আসরের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা জেতে অস্ট্রেলিয়া।
নবম বিশ্বকাপ (২০০৭)
এবার আয়োজক ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যেখানে অংশ নেয় ১৬টি দল। এই বিশ্বকাপে শক্তিশালী ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায় বাংলাদেশ। সুপার এইটে আয়ারল্যান্ডের কাছে হারলেও এই বিশ্বকাপ বাংলাদেশকে দিয়েছে দুহাত ভরে। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক বিশ্বকাপ জয়ের রেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়া।
দশম বিশ্বকাপ (২০১১)
২০১১ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সাথে যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা ওঠে দশম ক্রিকেট বিশ্বকাপের। এই আসরে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড বধ করে বাংলাদেশ। তবে ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা জেতে ভারত।
একাদশ বিশ্বকাপ (২০১৫)
২০১৫ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ আবারো ফেরে তাসমান সাগরের পাড়ে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই স্বাগতিক দেশ। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পঞ্চম বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তোলে অস্ট্রেলিয়া।
দ্বাদশ বিশ্বকাপ (২০১৯)
এই বিশ্বকাপ ছিল সাকিব আল হাসানের। ব্যাটে-বলে পুরো বিশ্বকে তাক লাগান তিনি। ব্যাট হাতে ৮৬.৫৭ গড় ও ৯৩.০৩ স্ট্রাইক রেটে ৬০৬ ও বল হাতে ১১ উইকেট তুলে নেন সাকিব। তার এমন পারফরম্যান্সের পরও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।
এদিকে লর্ডসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড। শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে সুপার ওভারে জিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপের জয়ের আনন্দে ভাসে ইংল্যান্ড।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: