বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য তাইজুল অমূল্য সম্পদ: তামিম


প্রকাশিত:
২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:০২

আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ২১:৪৬

মিরপুরে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দলে নেই বিশ্ব ক্রিকেটের তারকা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তার শূনতা মেহেদী হাসান মিরাজ পূরণ করবেন- এমন প্রত্যাশা থাকলেও ২১ অক্টোবর, সোমবার মিরপুরে আলো ছড়ালেন তাইজুল ইসলাম। ক্যারিয়ারে ১৩তম বার পাঁচ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চাপে রেখেছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ২০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন সাকিবকেই পেছনে ফেলে। এই কীর্তির পর তাকে অভিনন্দন জানালেন তামিম ইকবাল।

নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে সাবেক এই অধিনায়ক লিখেছেন, ‘অভিনন্দন তাইজুল ইসলাম। ২০০ টেস্ট উইকেট মানে বাংলাদেশের বাস্তবতায় দারুণ এক অর্জন। ৪৮ টেস্ট খেলে ২০০ উইকেট নেওয়া মানে আরও বড় অর্জন।’

‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, বাংলাদেশের ক্রিকেটে যথেষ্ট গুরুত্ব ও প্রাপ্য সম্মান সে সবসময় পায় না। ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করেও নায়কের মর্যাদা সেভাবে অনেক সময় পায় না। তবু নিজের কাজটুকু করে গেছে, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর।’

বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্ব ক্রিকেটেও বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে অন্যতম সেরা তাইজুল বলে মনে করেন তামিম। এ নিয়ে তিনি লিখেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, বিশ্ব ক্রিকেটেও যথেষ্ট আলোচনা তাকে নিয়ে হয় না। অথচ অনেক গ্রেট বোলারের চেয়েও কম টেস্ট খেলে ২০০ উইকেট হয়ে গেল তার। বড় কোনো দলের ক্রিকেটার হলে হয়তো তাকে নিয়ে আলোচনা আরও বেশি হতো।’

‘তার পরিসংখ্যান বলে, গত ১০ বছরে বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা স্পিনারদের একজন সে। তার পারফরম্যান্স, একাগ্রতা ও নিবেদন বলে, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সে অমূল্য এক সম্পদ।
আবারও অভিনন্দন তাইজুল। পথের এখনো অনেক বাকি।’

মিরপুর টেস্টে প্রথম দিন শেষে ৩৪ রানের লিড নিয়েছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে দেয় প্রোটিয়া বোলাররা। জবাব দিতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান তুলেছে। টেস্টের প্রথম দিনেই দুই দলের মিলিয়ে পড়েছে ১৬ উইকেট।

দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে ২১ অক্টোবর, সোমবার মিরপুরে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রোটিয়া পেসার উইয়ান মুলদার ও কাগিসো রাবাদার বোলিং তোপে পড়ে শান্ত বাহিনী। মাত্র ২৬.১ ওভারে ৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র ৪৬ রানে বাকি চার উইকেট হারায় শান্তরা।

এদিন দলের পক্ষে মুলদার,রাবাদা ও কেশব মহারাজ তিনটি করে উইকেট নেন। আর ডেইন পিড নেন একটি উইকেট।

স্বাগতিকদের অল্প রানে গুটিয়ে ব্যাট করতে নামা সফরকারীদের শিবিরে শুরুতেই আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে প্রোটিয়া ওপেনার এইডেন মার্করামকে বোল্ড করেন ডানহাতি টাইগার পেসার। হাসানের ভেতরে ঢোকা বল ডানহাতি ব্যাটার মার্করামের (৭ বলে ৬) ব্যাটের কোনা স্পর্শ করে স্টাম্প ভেঙে দেয়। দলীয় ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

দ্বিতীয় উইকেটে পিচে সেট হয়ে ব্যাটিং করছিলেন টনি ডি জর্জি ও ত্রিস্টান স্টাবস। ৪১ রানের জুটিও করে ফেলেছিলেন তারা। অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার এই জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বল ডানহাতি স্টাবসের ব্যাটের কাণায় লেগে স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে জমা হয়। ২৭ বলে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরত যান প্রোটিয়া ব্যাটার।

তৃতীয় সেশনের শুরুতে আরও একটি শিকার ধরলেন তাইজুল ইসলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার ডানহাতি ব্যাটার ডেভিড বেডিংহামকে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৫ বলে ১১ রান করেন বেডিংহাম। ৭২ রানে তৃতীয় হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইনিংসের ২৮তম ওভারে একে জোড়া শিকার করেন তাইজুল। ওভারের দ্বিতীয় বলে পিচে থিতু হয়ে থাকা টনি ডি জর্জিকে শর্ট লেগে মাহমুদুল হাসান জয়ের ক্যাচ বানান তিনি। ৭০ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফেরত যান প্রোটিয়া ওপেনার।

ওই ওভারের শেষ বলে নতুন ব্যাটার ম্যাথিউ ব্রিটজকে (৪ বলে ০) বোল্ড করে দেন তাইজুল। দলীয় ৯৯ রানে ৫ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর সেট ব্যাটার রায়ান রিকেলটনকে আউট করে প্রোটিয়াদের ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটান তাইজুল। উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দেওয়ার আগে রিকেলটন করেন ৪৯ বলে ২৭।

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top