দ. আফ্রিকাকে ৩৩১ রানের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের


প্রকাশিত:
৩ জুন ২০১৯ ০৬:১৬

আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৪:৩১

দ. আফ্রিকাকে ৩৩১ রানের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের

দ্বাদশ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ৩৩১ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁরে দিয়েছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমের দুরন্ত ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।  



রোববার (২জুন) লন্ডনের কেনিংটন ওভালে টস জিতে শুরুতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ও সৌম্য। এই জুটির ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। এক প্রান্তে বোলার পরিবর্তন করে ডু প্লেসিস বল তুলে দেন আন্দেলু ফেহলুখায়োর হাতে। তাদেই ব্রেক থ্রু এনে দেন এই পেসার। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তামিমকে শিকার করেন ফেহলুখায়ো। ২৯ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৬ রান করে আউট হন তামিম। তার আগে  ৬০ রানের এক জুটি গড়েন তিনি।



তামিমের বিদায়ের পর বিধ্বংসী সৌম্যকেও পরাস্ত করেে ক্রিস মরিস। তার বলটি সৌম্য সরকারের গ্লাভসের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের হাতে। বিদায়ের আগে ৩০ বলে ৯ বাউন্ডারিতে ৪২ রান করেন সৌম্য। তামিম-সৌম্যর বিদায়ের পর ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহীম।  



দুর্দান্ত ব্যাট করে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। হাফ সেঞ্চুরি করেন মুশফিকও। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৩তম হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সাকিব। ভারতের বিপক্ষে ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে প্রস্তুতি ভালো না হলেও মূল মঞ্চে ফিরেছেন তিনি চেনা রূপে। ৫৪ বলে পৌঁছান এই মাইলফলকে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের পরপরই হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন মুশফিক। এটা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৪তম হাফসেঞ্চুরি। ফিফটি পূরণ করেন তিনি ৫২ বলে।



সাকিব আল হাসান তার হাফসেঞ্চুরিকে যে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারলেন না। ইমরান তাহিরের বল অফ স্টাম্পে দিকে এগিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন সাকিব। তার আগে ৮৪ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় ৭৫ রানে থেমেছেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। আউট হওয়ার আগে মুশফিকের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে গড়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।



তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১৪১ বলে ১৪২ রানের জুটি গড়েন তারা। তৃতীয় উইকেট তো বটেই, বিশ্বকাপে যে কোনো উইকেটেই বাংলাদেশের সর্ব্বোচ্চ জুটির রেকর্ড এটি। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মুশফিকের ১৪১ রানের জুটি ছিল আগের সেরা। বড় এই জুটি ভাঙার পর ২১ বলে ২১ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলে তাহিরেরই বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন মোহাম্মদ মিঠুন।



এরপর সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ৭৮ রানে আউট হয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। আন্দিলে ফেলুকাওয়ের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে রাসি ফন ডার ডাসেনের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। মুশফিকের বিদায়ের পর পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ আর মোসাদ্দেক হোসেনের ৪১ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন।



৪৯তম ওভারের শেষ বলে ২০ বলে ২৬ রান করে আউট হন মোসাদ্দেক। বাকি সময়টায় ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৩ বলে ৩ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৪৬ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন তিনি। সেই সঙ্গে স্কোর বোর্ডে বাংলাদেশের পাশে জমা হয় ৩৩০ রান।  



দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আন্দেলো ফেহলুখায়ো, ইমরান তাহির আর ক্রিস মরিস।



এদিন বাংলাদেশ দলে যাকে নিয়ে শঙ্কা ছিল বেশি সেই তামিম ইকবাল খেলছেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন আছেন একাদশে। সেরা একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, উদ্বোধনী ম্যাচে চোট পাওয়া হাশিম আমলাকে ছাড়াই নেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাঁর জায়গায় দলে ঢুকেছেন ডেভিড মিলার। বাংলাদেশের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েছেন ক্রিস মরিসও। তবে এই ম্যাচে দলে রাখা হয়নি ডেল স্টেইনকে। এখনো তিনি চোট থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে পারেননি।



বাংলাদেশ  একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি মুর্তজা ও মোস্তাফিজুর রহমান।



দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: কুইন্টন ডি কক, এইডেন মার্করাম, ফ্যাফ ডু প্লেসি (অধিনায়ক), রেসি ফন ডার ডুসেন, ডেভিড মিলার, জেপি ডুমিনি, আন্দিলে পেলিকোয়া, ক্রিস মরিস, কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি ও ইমরান তাহির।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top