করোনাকালের দ্বিতীয় বাজেট পেশ
 প্রকাশিত: 
 ৪ জুন ২০২১ ২২:০৫
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৯
স্বাস্থ্যবিধি শতভাগ নিশ্চিত করে করোনাকালের দ্বিতীয় বাজেট সংক্ষিপ্ত সময়ে পেশ করা হয়েছে। এবার ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনে সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা। অধিবেশনের শুরুতে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ৫০ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরা হয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাজেট পেশকালে অধিবেশনে উৎসবের আমেজ দেখা যায়নি। বরং সর্বত্র ছিলো কঠোর সতর্কতা।
অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এ সময় সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ স্বল্পসংখ্যক সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বাজেট পেশের পর বৈঠক শেষ হয় ৪টা ৩২ মিনিটে। বাজেট পেশ ছাড়াও এ সময় অর্থ বিল-২০২০ পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগামী ২৯ জুন এই বিল পাস হবে। আর বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। এর আগে রোববার থেকে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে। সবমিলিয়ে বাজেট পাসের জন্য ১০ দিন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে বাজেট পেশের শুরুতে ১৯৭১ সাল থেকে নিয়ে বর্তমানের বাংলাদেশকে ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। সংক্ষিপ্ত পরিসরে উত্থাপিত লিখিত বাজেট বক্তৃতা ছিল ১৯২ পৃষ্ঠার। গত কয়েক অর্থবছরে বাজেট পেশের পাশাপাশি তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় দেখানো হলেও এবারই প্রথম অর্থমন্ত্রী পাঠ না করে প্রায় পুরো অংশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপস্থাপন করেন। সেখানে কীভাবে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে, তা দেখানো হয়। উপস্থাপনার শুরুতেই বলা হয়, শূন্য ক্যানভাসে কী নিখুঁত শিল্পীর মতো পুনর্গঠনের ছবি আঁকা শুরু করেন জাতির পিতা। পরিকল্পনা কমিশন, কৃষি গবেষণা, বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, পরমাণু শক্তি কমিশন, বিসিএসআইসহ অপরিহার্য প্রতিষ্ঠানগুলো বঙ্গবন্ধু নিজেই প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, অথবা শুরুটা করে গেছেন তিনি। সোনার বাংলা গঠনের মজবুত ভীতের নির্মাণ তাঁর হাতেই।
প্রতিবছর বাজেট পেশের দিনটিতে সংসদ ভবনজুড়ে থাকে উৎসবের আমেজ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর থেকে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশে ছিল কড়াকড়ি। প্রবেশকারী সবাইকে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হয়েছে। মূল ভবনে দায়িত্ব পালন করেছেন স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী। সংসদ ভবনের প্রবেশমুখে সবাইকে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের তাপমাত্রা মাপা হয়। অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন গ্রহণ করেন। এক থেকে দুটি আসন পর পর বসেছিলেন তারা। প্রায় সবার মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস ও মাথায় ক্যাপ ছিল। সংসদ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেন।
প্রতিবছরই বাজেট উত্থাপনের দিন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন। তবে এবার কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আগেই সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার স্থগিত করা হয়। তবে বরাবরের মতো রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে উপস্থিত থেকে বাজেট পেশ প্রত্যক্ষ করেন। অধিবেশন শুরুর আগে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাক্ষর করেন তিনি। দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে এর অনুমোদন দেওয়া হয়।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, একই সতর্কতা মেনে আগামী রোববার থেকে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত আলোচনা চলবে। সংসদ সদস্যরা কে, কবে অংশ নেবেন তা ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার সম্পূরক বাজেট পাস হবে। এরপর বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হবে।
বিষয়:

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: