সিডনী শুক্রবার, ১০ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক কোম্পানি গুলোর আইন সংস্কার


প্রকাশিত:
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:১৮

আপডেট:
১০ মে ২০২৪ ০২:২২

 

ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংস্কার এখনো চূড়ান্ত না হওয়ার বিষয়টি হতাশাজনক। জানা যায়, মূলত এ আইনের সংস্কার না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুত বাজেট সহায়তার দ্বিতীয় কিস্তির ২৫ কোটি ডলার বা প্রায় ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা প্রাপ্তির বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এ অর্থ আগামী মার্চের মধ্যে ছাড়ের আশা করা হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের কাছে মোট ১২৫ কোটি ডলার বা প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ।

এর মধ্যে রয়েছে নতুন করে ১০০ কোটি ডলার বা প্রায় ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা; আর আগের প্রতিশ্রুত ২৫ কোটি ডলার। সাধারণত বাজেট সহায়তা আসে বেশকিছু শর্ত পূরণসাপেক্ষে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের শর্ত ছিল সরকারের আর্থিক ও রাজস্ব খাত সংস্কার;

এ লক্ষ্যে বাংকগুলোর জন্য এমন একটি নীতিমালা তৈরি করা, যাতে খেলাপি ঋণ কমে আসে। সেই সঙ্গে ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আইন সংশোধনের কথা বলা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংককে জানানো হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনীর কাজ চলছে।

বস্তুত বিশ্বব্যাংকের শর্ত পূরণের চেয়েও দেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারের স্বার্থে এ আইনের সংশোধন বেশি জরুরি। দেশে এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ছড়াছড়ি। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ খাতে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ, লুটপাট ও দুর্নীতি বেড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংক পরিচালকরা ভাগাভাগির মাধ্যমে নিজের ও অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে যে ঋণ নিচ্ছেন, তার অধিকাংশই আর ফেরত আসছে না।

এর ফলে মন্দ ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, যা অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত। খেলাপি ঋণ ও জালিয়াতিসহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের অনিয়ম-দুর্নীতির অবসান ঘটাতে হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবশ্যই আইনি কাঠামোর আওতায় ক্ষমতা প্রয়োগে সক্ষম হতে হবে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে, অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংকের মালিক ও পরিচালক রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকেন।

পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকরাও রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পান। এর ফলে তাদের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব অনেকটাই শিথিল। এ সুযোগে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তারা নানা ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারির জন্ম দিচ্ছেন।

ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ে থাকা ব্যক্তিদের দুর্নীতি দেশের সামগ্রিক আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে গ্রাস করে ফেলছে এবং এর ফলে খেলাপি ঋণ, অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা বাড়ছে। এ বাস্তবতায় ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী দ্রুত চূড়ান্ত করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top