সিডনী রবিবার, ১২ই মে ২০২৪, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩১

দেশের বাজেট পেশ আজ


প্রকাশিত:
৭ জুন ২০১৮ ০৬:০০

আপডেট:
১২ মে ২০২৪ ১৬:১১

দেশের বাজেট পেশ আজ

২০১৮-১৯ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট চূড়ান্ত করেছে সরকার। দশম সংসদের ২১তম অধিবেশনে আজ বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদে এই বাজেট পেশ করবেন। চলতি মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের এটাই শেষ বাজেট পেশ।



বাজেট পেশ হওয়ার পর দীর্ঘ আলোচনা শেষে তা পাস হবে আগামী ২৮ জুন। এই অর্থবছরে প্রায় ৪ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী।



বাজেটের নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে ও সংসদে এনিয়ে আলোচনায় সহযোগিতা করতে সংসদ সদস্যদের জন্য জাতীয় সংসদে চালু করা হয়েছে বাজেট ‘ইনফরমেশন হেল্প ডেস্ক’।



 



জানা গেছে, এ অধিবেশেনে ৪টি বিল, কমিটিতে পরীক্ষাধীন ৭টি ও উত্থাপনের অপেক্ষায় ৬টি বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে।



বাজেট প্রস্তুতের আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বাজেট সংশ্লিষ্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিভিন্ন পেশাজীবী ও গবেষণা সংগঠনের সঙ্গে অংশ নেয় প্রি-বাজেট আলোচনায়।



এসব আলোচনায় উঠে আসে বিগত বাজেটগুলোর নানা দুর্বল দিক এবং নতুন বাজেট প্রস্তুতে বেশকিছু পরামর্শ। এর মধ্যে প্রাধান্য পায় কিভাবে বাজেটে ঘাটতি কমিয়ে আনা যায়। কারণ হিসেবে উঠে আসে, বাজেটে ঘাটতি বৃদ্ধি পেলে রাজস্বের উপর চাপ বৃদ্ধি পায়। এ চাপ কমাতে বৈদেশিক ঋণ সুবিধা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বৈদেশিক ঋণ ব্যবহারের সোচ্চার হওয়ার পরামর্শও দেন অনেকে।



বিগত সময়ে দেখা গেছে বাজেটে উল্লেখিত বৈদেশিক ঋণের সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ ব্যহৃত হয়েছে। ফলে বাজেটে বড় ধরনের ঘাটতি ছিল বাজেটের অন্যতম সঙ্গী। এর ফলে জিওভির টাকার উপর চাপ পড়েছে বেশি। এজন্য মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির ভুক্তভোগী হতে হয়েছে জনসাধারণকে।



অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাজেট পাসের মাত্র কয়েক মাস পরেই দেশে জাতীয় নির্বাচন। তাই জনগণের মন তুষ্টির বিপরীত কিছু না ঘটে তার প্রভাব থাকবে বাজেটে। বাজেট-পূর্ব আলোচনায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত নিজেও বলেছেন, এবারের বাজেটে মৌলিক কোনো পরিবর্তন থাকবে না। এ বছরের বাজেট হবে গতানুগতিক বাজেট।



তবে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব পাবে এ বাজেটে। তাদের জন্য ১৫ থেকে ১৬ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হচ্ছে।



সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর বিষয়টিকে কোনভাবে যৌক্তিক বলছেন না বাজেট বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করতেই এ ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এভাবে দফায় দফায় বেতন বৃদ্ধি রাজস্বের উপর চাপ বৃদ্ধির বিকল্প দেখছেন না তারা।



এবিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এবার বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে কিনা এটা প্রথমে ভাবতে হবে। সরকারের এমন সিদ্ধান্ত সারাদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচন প্রভাবে ইনফ্লুয়েন্স করছে কিনা সেটাও প্রশ্ন উঠবে।



তিনি বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার প্রভাব প্রাইভেট সেক্টরেও পড়ে। ফলে প্রাইভেট সেক্টরেও বেতন বৃদ্ধির ডিমান্ড তৈরি হয়। ফলে প্রডাক্ট কস্ট বৃদ্ধি পায়। এতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবেই।



এ বাজেটে বেহাল দশায় পড়া বেসরকারি ব্যাংকিং খাতকে পুনরুদ্ধার করতে নেই কোনো উল্লেখযোগ্য দিক নির্দেশনা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যাংকিং খাতকে মনিটর করতে দরকার কঠিন রেগুলেটরি কমিশন। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংক মালিকরা অনেক বেশি প্রভাবশালী। তারা সরকারকে নির্বাচনে টাকা দেয়। তারা প্রভাব খাটিয়ে উল্টো আরও কিছু কিছু আইন কানুনকে হ্রাস করে নিচ্ছেন।



তিনি বলেন, ব্যাংকিং কমিশন করার কথা ছিল, তাও হয়নি। যদি ব্যাংকিং কমিশন থাকতো তাহলে তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে অ্যাকশন নেয়া হতো। তখন এতো বেশি বেহাল দশা তৈরি হতো না।



বৃহস্পতিবার পেশ হতে যাওয়া বাজেটে গুরুত্ব পাচ্ছে মেগা প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড়ের বিষয়টি। নির্বাচনী বছরে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলসহ জনগণের সাথে সম্পৃক্ত মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত শেষ করতে যাতে অর্থ ছাড়ে কোনো বিড়ম্বনা পোহাতে না হয় সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে এ বাজেটে।



পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতা বাড়িয়ে অধিক সংখ্যক দরিদ্র মানুষের কাছে এর সুফল পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা থাকছে। ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে করপোরেট কর হার কমানো হচ্ছে। উপরন্তু নতুন করে কর আরোপ করা হচ্ছে না।



ভোটের বছরে বিশালাকারের বাজেটে ঘাটতি থাকছে প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। সে কারণে আসন্ন বাজেটকে ঘাটতি নির্ভর ভোটের বাজেট হিসেবে অভিহিত করছেন সিপিডির গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।



তিনি বলেন, ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎসের উপর চাপ কমিয়ে বৈদেশিক ঋণ সুবিধার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। বৈদেশিক ঋণ সুবিধার বাস্তবায়ন হার ভালো


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top