ইরানের পাল্টা হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা
প্রকাশিত:
৫ জানুয়ারী ২০২০ ২৩:২৩
আপডেট:
১০ মে ২০২৪ ১২:১৮
প্রভাত ফেরী ডেস্ক: বাগদাদে চালানো ড্রোন হামলায় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর পাল্টা হামলার আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি বড় শহরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এসব শহরের বাসিন্দাদের সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কর্মকর্তারা বলছেন, স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। মার্কিন বিমান হামলায় দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হারিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান। ‘উপযুক্ত সময়ে, যথাস্থানে’ এই হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মাজিদ তাখতে রাভানচি সরাসরিই সামরিক হামলার কথা বলেছেন। শনিবার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা যে হামলা চালিয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে হামলা। এই হামলা একটি নতুন অধ্যায়, যা ইরানের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধের সূচনা করল। সামরিক হামলার জবাব সামরিক হামলা দিয়েই হয়। আর সেটা কখন, কীভাবে এবং কোথায় হবে, ভবিষ্যতই তা বলে দেবে।’ সিএনএনের অনুষ্ঠানে ইরানের রাষ্ট্রদূত পরিষ্কার করে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় ইরান এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার সব ধরনের অধিকার রাখে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী শাদ ওলফ বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যদের সঙ্গে মিলে দেশ জুড়ে কাজ করছে তার দফতর। এখন পর্যন্ত কোনো হুমকি শনাক্ত না হলেও যেকোনো কিছুর জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশের সঙ্গে আলোচনার কথা জানিয়েছেন নিউইয়র্কের মেয়র বিল ড্য ব্লাসিনো। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে ইরান বা তাদের সন্ত্রাসী মিত্রদের যেকোনো হামলা ঠেকাতে প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, এই হুমকি মোকাবেলায় দীর্ঘদিন সজাগ থাকবে শহর কর্তৃপক্ষ।
নিউইয়র্কের পুলিশ কমিশনার ডারমোট শো বলেছেন, ইরান ও ওই অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট ঘটনাপ্রবাহের ওপর নজর রাখছে তার বাহিনী। শহরের ওপর কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্য সময়ের মতো কিছু দেখলেই আপনারা জানান।’
ইরানি বংশোদ্ভ‚ত মার্কিন নাগরিকদের বড় অংশের বাস লস অ্যাঞ্জেলস শহরে। কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই শহরে সতর্কতা জারি করা হয়। শহরের ওপর বর্তমানে কোনো হুমকি না থাকার কথা জানিয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গেই যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হবে।
ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান। ইতোমধ্যে সামরিক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে দেশটি। ইরানের সমস্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিগুলোকেও রাখা হয়েছে উচ্চ-সতর্কতায়। নিজেদের আকাশসীমায় মহড়া শুরু করেছে যুদ্ধবিমান। মোতায়েন করা হয়েছে এফ-১৪ যুদ্ধবিমানও।
সামরিক প্রস্তুতি নিলেও এখন পর্যন্ত ইরানের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। তবে দেশটির কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্যে যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামিনি বলেন, ‘অপরাধীদের জন্য ভয়াবহ প্রতিশোধ অপেক্ষা করছে।’ ইরানের সেনাবাহিনীর (ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস বা আইআরজিসি) মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রমজান শরিফ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তোমরা কড়া জবাবের জন্য অপেক্ষা কর।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: