করোনা ভাইরাস : মহামারীর শঙ্কা চীনে, মৃত বেড়ে ৯০
প্রকাশিত:
২৭ জানুয়ারী ২০২০ ২২:২১
আপডেট:
২৮ জানুয়ারী ২০২০ ০২:২১
প্রভাত ফেরী ডেস্ক: চীনে প্রাণঘাতী নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। রোববার পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০ জনে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার। তবে স্থানীয় এক চিকিৎসাকর্মী দাবি করেছেন, সরকার মিথ্যা বলছে এবং চীনে প্রায় এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি বিশেষ বিমানে করে ওই মার্কিন কর্মকর্তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমিত আসনের একটি বিমানের ফ্লাইটে উহান থেকে দূতাবাস কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সাধারণ নাগরিককেও ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিতে আরও জানায়, আগামী ২৮ জুন উহান থেকে সান ফ্রান্সিসকোর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে বিমানের একটি সিঙ্গেল ফ্লাইট। ওই ফ্লাইটে করে অল্পসংখ্যক সাধারণ নাগরিকও দেশে ফিরতে পারবেন। ওই নাগরিকরা ইতোমধ্যেই বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন। ওই বিমানের ধারণক্ষমতা কম। যদি সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হয় তবে এ ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের বেশি ঝুঁকিতে আছে এমন লোকজনকে আগে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
চীনে বন্য প্রাণী কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যেই সেখানে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে এ ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে ইতোমধ্যেই বন্য প্রাণী কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন।
দেশের বাজার নজরদারি, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বন্য প্রাণী বিষয়ক ব্যুরো এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশের মার্কেট, সুপার মার্কেট, রেস্টুরেন্ট এবং ই-কমার্স সাইটে বন্যপ্রাণী কেনাবেচা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রোববার থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরেই প্রথম এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তারপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। একটি সামুদ্রিক বাজার থেকেই ওই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই উহানের বাসিন্দা।
ভারতে উচ্চ সতর্কতা জারি
বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে রহস্যময় করোনা ভাইরাস। চীনে এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪১ জন মারা গেছেন। আর রোগে দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় দেড় হাজার মানুষ। নেপালেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। এ পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার ভারতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের পাশাপাশি চূড়ান্ত সতর্কতা থাকছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, ভারতে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে চারটি শহরে ১১ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ শনাক্ত করা গেছে। তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নেপালে এক ব্যক্তির দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মেলার পর ভারতের চিন্তা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে শনিবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব পি কে মিশ্র।
ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি চীন : শি জিনপিং
প্রাণঘাতী নতুন করোনা ভাইরাস দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দেশটিতে নতুন এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় শনিবার দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ এক বৈঠকে তিনি ওই সতর্কবার্তা দেন। চীনের সরকারি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বৈঠকে শি জিনপিং বলেছেন, ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে চীন।
বিষয়: করোনা ভাইরাস চীন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: