সিডনী শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


কী বার্তা নিয়ে আসছেন পোপ ফ্রান্সিস


প্রকাশিত:
২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৯:২৯

আপডেট:
১৭ মে ২০২৪ ২২:৪৯

কী বার্তা নিয়ে আসছেন পোপ ফ্রান্সিস

০১৪ সালের আদমশুমারিতে মিয়ানমারের জনসংখ্যা ৫ কোটি ১৪ লাখ ১৯ হাজার ৪২০। জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে দেশটিতে বৌদ্ধদের পর দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা। খ্রিস্টান অনুসারীর সংখ্যা ৬ দশমিক ২ শতাংশ। তবে অনুপাতে কম হলেও এ মুহূর্তে মিয়ানমারে বসবাসকারী দ্রুতবর্ধনশীল জাতি হিসেবে বৌদ্ধদের চেয়েও এগিয়ে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী। তারা সচ্ছলও বটে। জাতীয় ও বৈশ্বিক দিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের ফেরানো ইস্যুতে প্রতিবেশী দেশটির খ্রিস্টান নাগরিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।



খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বীরা বলছেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নয়, মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে মিয়ানমারের সব মানুষের হৃদয়ের তীর্থযাত্রী হিসেবে ২৭ নভেম্বর দেশটিতে যাচ্ছেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। অবস্থান করবেন ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। তিন দিনের ওই সফরে রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিকতা দেখাতে মিয়ানমারে বসবাসকারী খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সম্প্রীতির বার্তা দেবেন পোপ ফ্রান্সিস। রোহিঙ্গাদের নিজ আবাসস্থল মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে দেশটির খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের অটুট বন্ধন রাখারও আহ্বান জানাবেন। এ ছাড়া স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি, বৌদ্ধধর্মীয় সংগঠনসহ সিভিল সোসাইটি, যুব সংগঠনের সঙ্গে সাক্ষাতে রোহিঙ্গাদের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরবেন পোপ ফ্রান্সিস। মিয়ানমারে তিন দিন অবস্থানের পর ৩০ নভেম্বর তিনি বাংলাদেশে আসবেন।



বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েসনের সভাপতি নির্মল রোজারিও আমাদের সময়কে বলেন, হোক মুসলিম রোহিঙ্গা বা হিন্দু সম্প্রদায়, ক্যাথলিক বা খ্রিস্টানরা কোনো ধর্মের মানুষের ওপর নির্যাতন পছন্দ করে না। মিয়ানমারে বসবাসকারী ক্যাথলিক বা খ্রিস্টানরাও রোহিঙ্গা নিধন বা নির্যাতনে একমত নয়। রোহিঙ্গা নিধন শুরু হওয়ার পর পোপ এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছেন। এবার পোপ নিজে মিয়ানমার গিয়ে ধর্মীয় নেতা, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে একই দাবি তুলবেন।



নির্মল রোজারিও বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের বিষয়টি কোনো জাতিগত সমস্যা নয়। হত্যা-নির্যাতন-বিতাড়নের ঘটনাগুলো আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের নিজ আবাসভূমিতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য শুধু মিয়ানমারকেই ভূমিকা রাখতে হবে। পোপ দ্রুত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের কাছ থেকেই সমাধান করতে চাইবেন।



ইতালির রোম থেকে প্রচারিত ‘ভ্যাটিকান রেডিও’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২৬ নভেম্বর রোমের বিমানবন্দর থেকে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের উদ্দেশে রওনা করবেন পোপ ফ্রান্সিস। পৌঁছবেন স্থানীয় সময় পরদিন দুপুরে দেড়টার দিকে। ২৮ নভেম্বর বিকালে নেপিদোতে অং সং সু চি এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। একই দিন সোয়া পাঁচটায় সেখানকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বৈঠক করবেন মিয়ানমার রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, সিভিল সোসাইটি, কূটনৈতিক দলের সঙ্গে। ২৯ নভেম্বর ইয়াঙ্গুনে কয়েকটি ধর্মীয় উপসানালয়ে গমন ছাড়াও মিয়ানমারে বসবাসকারী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ‘সুপ্রিম কাউন্সিল অব বুড্ডিস্ট মঙ্কস’ বা ‘সাঙহা’ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।



মিয়ানমার থেকে ৩০ নভেম্বর ঢাকায় তিন দিনের সফরে এসে খ্রিস্টীয় উপসানালয়, সাভারের স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, রাষ্ট্রপতির বাসভবন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎসহ শান্তিবিষয়ক কয়েকটি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন পোপ।




উৎসঃ   আমাদের সময়

বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top