সিডনী মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ ২০২৪, ৫ই চৈত্র ১৪৩০

একা এবং একা (পর্ব নয়) : আহসান হাবীব


প্রকাশিত:
১০ আগস্ট ২০২০ ২২:০০

আপডেট:
১৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:১৯

 

(আহসান হাবীব মূলত একজন প্রফেশনাল কার্টুনিস্ট। তিনি পেশাগত কারণে সাধারনত কমিকস, গ্রাফিক নভেল ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেন। তিনি যখন লিখেন তখন তার মাথায় থাকে কমিকস বা গ্রাফিক নভেলের কনটেন্ট। তার গল্পের পিছনে থাকে স্টোরি বোর্ডের মত ছবির চিত্রকল্প। এই কারণেই তার লেখায় একটা সিনেমাটিক ড্রামা থাকে প্রায়শই। তিনি মনে করেন যেকোনো গ্যাজেটেই/ফরম্যাটেই হোক, স্ক্রিনে যে গল্প পাঠক পড়ছে, সেখানে তার সাব-কনসান্স মাইন্ড ছবি খুঁজে। আর তাই ‘প্রভাত-ফেরী’র পাঠকদের জন্য তার এই ধারাবাহিক ইন্ডি নভেল ‘একা এবং একা ’ )

 

ছোট্ট শহরটা যেন গুজবের শহর হয়ে উঠেছে। নানারকম গুজব ছড়াতে লাগল সবার মুখে মুখে। স্থানীয় পত্রিকায় বড় বড় হেডিং আসল ‘অবশেষে মেয়রের হত্যাকারী হাতে নাতে  গ্রেফতার’,  ‘হত্যাকারী রফিকের দুঃসাহসী উক্তি - “নবী নগরে খারাপ মানুষ রাখব না”। ‘হত্যাকারীকে পাগল সাব্যস্ত করে মামলা দুর্বল করার পায়তারা’  ‘ইংরেজীর শিক্ষক রফিকউদ্দীন কি সত্যিই পাগল? না সবই তার অভিনয়?’, ‘সরযুবালা বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষককে থানায় জরুরী তলব’, ‘সরযুবালা বিদ্যানিকেতনের দপ্তরী কুদ্দুসের সাহসিকতায় খুনি রফিক গ্রেফতার...’ এ জাতীয় নানান খবরে ভরে গেল স্থানীয় পত্রিকাগুলোর পাতা, তবে দ্বিতীয় খুনটি প্রাধান্য পেল না খুব একটা। কিন্তু জাতীয় পত্রিকায় দ্বিতীয় খুনটিই প্রাধান্য পেল, কিছু পত্রিকায় প্রথম পাতায় বড় হেডিং আসলো ‘মাফিয়া ডন কোকেন সম্রাট কালাম (ওস্তাদ) অবশেষে খুন’ মেয়রের খুন গুরুত্বহীনভাবে প্রকাশিত হল, যেন এরকম ঘটনা হর-হামেশাই ঘটছে মফস্বল শহরগুলোতে।

শহরের সব জায়গায় তুমুল উত্তেজনা। সরযুবালা বিদ্যানিকেতনে উত্তেজনটা যেন একটু বেশী। দপ্তরী কুদ্দুস রাতারাতি হিরো হয়ে গেছে। টিচার্স রুমে সবাই তাকে ঘিরে ধরেছে।

--আচ্ছা কুদ্দুস, তুমি রফিক স্যারকে ঠিক কখন দেখলা?

-এই ধরেন আটটার দিকে, দেখি আমার বাসার বারিন্দায় বিরাট রামদাও হাতে নিয়া বইসা আছে। দাও থাইকা টপ টপ কইরা রক্ত পড়তাছে

-কি বল পত্রিকায় তো লিখছে তার হাতে ছিল চায়নিজ কুরাল

-এ্যাঁ ইয়ে... হ্যাঁ চায়নিজ কুরালও একটা ছিল সাথে, ছোট সাইজ।

-তুমি ভয় পাইলা না?

-না, কিসের ভয়। আমি উল্টা ধমক দিয়া কইলাম স্যার আপনার হাতে রাম দাও, ঘটনা কি? আপনি শিক্ষক আপনার হাতে থাকব কলম; খুইলা বলেন ঘটনা কি?

-ভাল বলছ, তারপর?

-স্যার মনে হইল আমার ধামকিতে একটু ভরকাইল। কইল, কুদ্দুস নবী নগরে খারাপ মানুষ রাখব না, মেয়ররে মারছি এখন আমারে মজিদ স্যারের বাড়িতে নিয়া চল... তারেও কতল করব।

-তার মানে মজিদ স্যারকে খারাপের দলে ফালাইল?

এই সময় মজিদ স্যারকে দেখা গেল টিচার্স রুমের দরজায়। ফ্যাকাশে মুখে দাড়িয়ে তিনি, গাল বসে গেছে মনে হচ্ছে, খোচা খোচা দাড়িও গজিয়েছে ভাঙা গালে।

-আপনারা ক্লাশে যান সবাই। এই কুদ্দুস আমার রুমে একটু আস। বলে মজিদ স্যার আর দাড়ালেন না।

-জি স্যার আসতেছি।

-তারপর বল রফিক স্যাররে থানায় নিলা ক্যামনে?

-তো রফিক স্যার রাম দাওটা আমার বুকের উপর ধইরা কইল কুদ্দুস জানে বাঁচতে চাইলে আমারে মজিদ স্যারের বাড়িতে নিয়া চল এক্ষন

-বল কি তোমার বুকে রাম দাও ধরল? মাহফুজা ম্যাডাম শিউরে উঠলেন

-রক্তমাখা রাম দাও! আরেকজন পাশ থেকে মন্তব্য করে।

-আর চায়নিজ কুরালটা কি করল?

-এ্যাঁ... ইয়ে ঐটাতো স্যারের বাম হাতে ধরা আছেই

-তারপর কি হল?

-আমি কইলাম রফিক স্যার, জান নেওনের মালিক উপরওয়ালা ... আমি জীবন থাকতে মজিদ স্যারের বাসায় আপনেরে নিব না

-বল কি! তুমি খুনির সাথে আরগুমেন্টে গেলা? তোমার সাহসতো কম না!

-স্যার আপনেগো চাকরী করি... আপনেগো নুন খাই...

-তারপর কি হল বল?

-মজিদ স্যারকে নেক্সট টার্গেট করল তার মানে বুঝতে পারছেন এই লোকতো সিরিয়াল কিলার, আচ্ছা কুদ্দুস বল, তারপর কি হল?

-এই সময় মাগরেবের আজান পড়ল। আমি রফিক স্যাররে কইলাম স্যার নামাজটা পইরা লই। নামাজ আমি কাজা করতে পারব না।

-রফিক স্যার নামাজ পড়তে দিল তোমাকে?

-নামাজে খাড়ায়া আমি কইলাম আল্লাহ-পাক আমি মরি বাঁচি যেমনে পারি খুনি রফিক স্যারেরে থানায় নিমু... স্কুলের চারকি করি, স্কুলের নুন খাই ... সেই স্কুলের হেড স্যার মজিদ চাচার বাড়িতে খুনিরে নিয়া যাব এমন নাদান আমি না...

-হেড স্যার তোমার চাচা লাগে?

-এ্যাঁ... ইয়ে... মানে...

 

মনিকা ম্যাডামের যথেষ্ট বিরক্ত লাগছিল। কুদ্দুস যে বানিয়ে বানিয়ে গল্প শুরু করেছে তা বেশ বোঝা যাচ্ছে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এখন আর কেউ মারুফ আর মবিনের প্রসঙ্গ আনছে না, গতকাল পর্যন্ত সবাই নিশ্চিত ছিল খুনি মারুফ না হয় মবিন, দুজনের একজন কিংবা দুজনেই এক সাথে কাজটা করেছে।

কিন্তু মারুফ স্যারের সঙ্গে একটু কথা বলা খুবই জরুরী মনিকার ।  তার কন্টাক্ট নম্বরটা কার কাছে পাওয়া যেতে পারে। হেড স্যারের অফিস ফাইলে থাকতে পারে, স্যারকে বললে কি দিবে? তিনি এখন যথেষ্ট নাজুক পরিস্থিতিতে আছেন বোঝা যাচ্ছে, তারপরও পরিস্থিতি বুঝিয়ে একবার চেষ্টা করা যেতে পারে।

 

তিনবার রিং হতেই ফোনটা ধরল কেউ একজন, তবে মারুফ স্যার না।

-এটা কি মারুফ স্যারের নাম্বার?

-জি মনিকা ম্যাডাম আমি মবিন। ম্যাডাম কেমন আছেন?

-ভাল। এটা মারুফ স্যারের ফোন না?

-জি ম্যাডাম, স্যার একটু বাইরে, ধরেন দিতাছি

-হ্যাঁ একটু দাও

-জি ধরেন

 

একটুক্ষন পর মারুফ স্যারের গলা শোনা গেল।

-হ্যালো?

-মারুফ স্যার বলছেন?

-হ্যাঁ বলেন, আপনার শরীর এখন ভাল?

-জি ভাল। ঐদিন আসলে আপনাকে ঝামেলায় ফেলেছিলাম

-না না ঠিক আছে। বলুন কি বলবেন

-আপনার সঙ্গে একটু জরুরী কথা ছিল ফোনে বলা যাবে না। কোথাও কি আমরা বসতে পারি একটুক্ষনের জন্য?

-কোথায় বলুন?

-ডিসি পার্কে

-এটা কোথায়?

-নদীর পারে উত্তর দিকে।

-ও আচ্ছা মনে পড়েছে। কখন?

-কাল দশটায়, সেকেন্ড গেটে আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব। খুব জরুরী কিন্তু

-আচ্ছা। আমি অবশ্যই আসব।

 

হেড স্যারের রুমে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে কুদ্দুস। রক্ত চক্ষু মেলে তাকিয়ে আছেন মজিদ স্যার

হারামজাদা রফিক স্যাররে কই ছাইরা আসছিলি? পরের দিন আ্ইসা হাজির হইছে?

-স্যার অনেক দূরে রসুলপুর স্টেশনে।

-আবার মিছা কথা কয়, হারামজাদা এখন সব জায়গায় উল্ডাপাল্টা গপ্পো মারতেছ? হিরো হয়া গেছ না? পত্রিকায় ইন্টারভ্যূ দেও? আরেকবার ইন্টারভ্যূ দিলে জীব টান দিয়া ছিইরা ফালামু তোমার...

এইসময় ইতিহাসের শিক্ষক রহমান সাহেব ঢুকলেন। মজিদ স্যার নিজেকে সামলে নিয়ে হাসি মুখে তাকালেন। এই লোকটাকে মজিদ স্যার একবারেই পছন্দ করেন না। একজন মেম্বারের অনুরোধে নিতে হয়েছে, অতি ধুরন্দর লোক। রহমান সাহেব পান চিবাতে চিবাতে বসলেন।

-কি কুদ্দুস তোমারে ওসি সাবে নাকি ১০,০০০ টাকা পুরস্কার দিছে? খুনি ধরায়া দিস বইলা?

-জি, স্যার বলছেন । ট্যাকা এখনো হাতে আসে নাই।

-ভাল ভাল, টাকা ঠিকই পাইয়া যাইবা। ওসি সাহেবের কাছে দশ-বিশ হাজার কোন বিষয় না। তবে স্যার আপনেরে একটা সত্যি কথা বলি, এই কুদ্দুস চা নিয়া আস দুইটা। স্যার যা বলতেছিলাম... এই রফিক স্যার কিন্তু বদ্ধ পাগল। ‘পাগল খুনি’ দেখবেন  ঠিকই ছাড়া পায়া যাইব, জামিনে বের হবে তারপর প্যারোলে থেকে একের পর এক খুন করতে থাকবে... যাকে বলে সিরিয়াল কিলার। ... ঐদিন একটা হিন্দি সিরিয়ালে দেখলাম এই কাহিনী। এক সিরিয়াল কিলার জেল থাইকা পালাইসে, তারপর শুরু করল একের পর এক খুন...।  প্রথমে মারল একটা মেয়েরে রামদাও দিয়ে একদম দুই টুকরা... তারপর একটা ছেলেরে ... সেও তিনটুকরা... কি ভয়ানক, তারপর ঠিক আপনের মত একজন বয়স্ক লোকরে... একদম ঘাড় প্যাঁচায়া...

-ইয়ে... স্যার কিছু বলতে আসছিলেন?

-ও হ্যাঁ ... আপনের বিপদ কিন্তু এখনো কাটে নাই। আমি বলি কি...। এই পর্যায়ে এসে গলা নামিয়ে ফেলেন রহমান সাহেব ‘আপনি মাস খানেকের জন্য ছুটিতে চলে যান। এসিসটেন্ট হেড মাস্টারতো আমি আছি চিন্তা করবেন না, ম্যানেজ করে নিব। পুলিশ আপনেকে একবার ডাকছে আরো ঘন ঘন ডাকবে, আপনার কলিজা দেখবেন ভাজা ভাজা করে দিবে।  এর চেয়ে ছুটিতে চলে যান।’

মজিদ স্যার ঘোলা চোখে তাকিয়ে থাকলেন রহমান স্যারের দিকে। এই লোকটা যে মহা বদ, মজিদ স্যার নতুন করে  বেশ বুঝতে পারছেন। এখন মনে হচ্ছে এই লোকটা তার থেকেও বদ!     

ডিসি পার্কের উত্তর গেটে অপেক্ষা করছে মনিকা ম্যাডাম।

আচ্ছা মারুফের সাথে কিভাবে কথাটা শুরু করবে মনিকা? প্রথমেই ঐ দিনের বৃষ্টিতে ভিজে ঘরের ফেরার ব্যাপারটা বলা উচিৎ? বলবে যে ...

-ঐ দিন আপনাকে কষ্ট দিলাম... বৃষ্টিতে ভিজে আপনি এতটা রাস্তা... তখন হয়ত মারুফ বলবে

-না না ঠিক আছে, আমিতো ঐদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম হঠাৎ দেখলাম আপনি ঐ ভাবে পরে যেতে, তাই...

-আচ্ছা আসলে আপনাকে যে জন্যে ডেকেছি সেটা বলে ফেলি

-বলুন

-আপনি কি জানেন আপনাকে স্কুল থেকে বাদ দেওয়ার জন্য আপনার সমস্ত তথ্য মেয়র সাহেব যোগার করেছিলেন?

-আমার কি তথ্য?

-মানে ... বলব? আপনি যদি কিছু মনে না করেনতো?

-না না বলুন

-আপনি আসলে একজন ঠিকানাহীন মানুষ। আপনি বড় হয়েছেন একটা এনজিওর শেল্টারে ... । আপনি যাদের বাবা মা জানতেন তারা আসলে আপনার পালক বাবা মা।

-এসবতো জানি। এগুলো বলতে এখানে এনেছেন?

-না না ঠিক তা না

-তাহলে?

-আসলে এটা বলা ঠিক হবে না... তারপরও বলা উচিৎ কারণ মেয়র লোকটা ভাল না ও আপনাকে...

না না ছিঃ  এসব বলা যাবে না, আসলে এগুলো বলা যায়ও না। বিষয়টা অন্যভাবে আনা যেতে পারে। বরং প্রথম প্রশ্নটা মারুফ স্যার করাই ভাল। অফেন্স ইজ দ্যা বেস্ট ডিফেন্স...!

-ও স্যরি ম্যাডাম অনেক দেরী করে ফেললাম,

-না না ঠিক আছে... আসলে ঐ দিন আপনাকে ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিলাম

-না না ওটা কোনো ঝামেলা না। আমি ওদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি... আচ্ছা বাদ দিন। বলুন কেন ডেকেছেন?

-ব্যাপারটা আপনাকে জানানো জরুরী মনে করছি যেহেতু মেয়রকে কেউ মেরে ফেলেছে এখন বিষয়টা মনে হচ্ছে আপনাকে জানিয়ে রাখা ভাল

-কি বিষয় বলুন?

-আপনি যত দ্রুত সম্ভব এই শহর থেকে চলে যান...

-কেন বলুনতো?

-কারণ মেয়র কিন্তু ...

নাহ এভাবেও বলা যায় না। মনিকা ঘড়ির দিকে তাকায় এক ঘন্টার উপর হয়ে গেছে! তাহলে ঠিক কিভাবে শুরু করবে মনিকা? সাথে শর্মিকে আনলে কি ভাল হত? শর্মি হয়তো ফট করে বলে বসত ‘স্যার আপু আপনার প্রেমে পড়েছে... যাকে বলে রেইন ফলিং লভ!’ শর্মিটা একটু ফাতরা টাইপ হয়েছে, হুট হাট যা কিছু বলে ফেলে। কারণ ছারাই মনিকার কানদুটো গরম হয়ে উঠে।

দু ঘন্টার উপর ডিসি পার্কের উত্তর গেটে অপেক্ষা করছেন মনিকা। মারুফের কোন পাত্তা নেই। ফোন করেছে দুবার; কেউ ধরল না। প্রথম বার রিং হয়েছে দ্বিতীয়বার মনে হল ফোনই অফ। এর মানে কি? প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে। তাহলে কি ফিরে যাবে মনিকা? দশটায় আসার কথা এখন বাজে বারটা দশ। আরো আধা ঘন্টা অপেক্ষা করে ফিরে চলল মনিকা। লোকটা কথা দিয়েও কেন আসল না?

মনিকা তখনও জানে না। সকাল নয়টার সময় মারুফকে ঢাকা থেকে আসা স্পেশাল ব্রাঞ্চের পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে সরাসরি হত্যার অভিযোগ, একটি নয় দুটি। 

 

হাজতখানায় রফিক স্যার মারুফকে দেখে বেশ খুশী হয়ে উঠলেন!

-আরে মারুফ স্যার না?

-হ্যাঁ

-আপনাকে কেন ধরল? এ নিশ্চয়ই কুদ্দুসের কাজ। ও একের পর এক মিসটেক করতেছে। তারপরই রফিক স্যার গলা নামিয়ে ফেলেন, ফিস ফিস করে বলেন ‘দেখছেন এই হাজতখানাটা আমাদের স্কুলের ক্লাশ রুম থেকে বড় না?’-

-হ্যাঁ বড়

-আচ্ছা এখানেতো আমরা ক্লাশ নিতে পারি।

-তা পারি কিসের ক্লাশ নিবেন?

-কেন কমন মিসটেকস ইন ইংলিশ। ঐ একটা ক্লাশ নেয়াই বাদ আছে আমার, বাকি সিলেবাসতো আগেই শেষ করছি। স্যার আপনি কি সেলফ ডিফেন্সের ক্লাশ নিতে পারছিলেন?

-না পারি নাই, এবার মনে হয় নিতে হবে। মারুফ হাসে। দুজনেই সিগারেট ধরায়।

-মারুফ স্যার, আচ্ছা আমাদের ধরল কেন? কি বিপদ বলেনতো! র্দীর্ঘশ্বাস ফেলে রফিক স্যার। তারপর এক মুখ ধূয়া ছেড়ে বলে ‘বুঝলেন মানুষের জীবনটা আসলে ভয়ঙ্কর সব বিপদ-আপদে ভরা; বেশির ভাগই কিন্তু  ঘটে না, তবে কারো কারো আবার ঘটে... তাইনা?’

মারুফ অবাক হয়ে তাকায়, রফিক স্যারকে এখন আর পাগল মনে হচ্ছে না, কাচা পাকা চুল দাড়িতে তাকে দেখাচ্ছে প্রাচীণ কোনো মুনি-ঋষির মত। এই লোকটা কি সত্যিই মেয়র মোরতাজুলকে হত্যা করেছে? 

 

(চলবে)

একা এবং একা - পর্ব এক
একা এবং একা - পর্ব দুই
একা এবং একা - পর্ব তিন
একা এবং একা - পর্ব চার
একা এবং একা - পর্ব পাঁচ
একা এবং একা - পর্ব ছয়
একা এবং একা - পর্ব সাত
একা এবং একা - পর্ব আট

 

লেখক: আহসান হাবীব
কার্টুনিস্ট/ সম্পাদক
উম্মাদ, স্যাটায়ার কার্টুন পত্রিকা
 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top