সড়ক দুর্ঘটনায় পাশাপাশি সমাহিত হলো মা-মায়ের স্বপ্ন


প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:০২

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩৬

সড়ক দুর্ঘটনায় পাশাপাশি সমাহিত হলো মা-মায়ের স্বপ্ন

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন কতশত স্বপ্ন নিভে যাচ্ছে। স্মৃতির পাতায় ঠাঁই হচ্ছে দুর্ঘটনায় হারানো প্রিয়জনের স্বপ্ন। মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিন যোগ হচ্ছে তাজা তাজ প্রাণ। কলিজার টুকরো সন্তানকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে যাচ্ছেন প্রতিদিন কত বাবা-মা, এতিম হচ্ছে কত সন্তান।



<iframe frameborder="0" height="250" id="924" name="738e1ae42c1c5cf608a884732dea182a" scrolling="no" width="300"></iframe>



সড়ক দুর্ঘটনা মা-মেয়ের স্বপ্নকে নিভিয়ে দিয়েছে। গত বুধবার এক সড়ক দুর্ঘটনায় একই সঙ্গে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়া এলাকার বাসিন্দা সামিনা নুর নীলা (২৫) ও তার মা রুবিনা বেগম (৪৫)।



সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষত বাবা আলফু মিয়া (৬৫) ও ছোট ভাই আসিফকে দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন আগামী মাসেই মেহেদীর রঙে হাত রাঙাতে যাওয়া নীলা।



বাবার চিকিৎসা শেষে গত বুধবার দুপুরে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার রামপুরা এলাকায় এনা পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি খাদে পানিতে ডুবে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অপর এক যাত্রীসহ নিহত হন নীলা ও তার মা।



আগামী ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে নীলার বিয়ে ঠিক করা ছিল। নীলার মৃত্যুতে ভেঙে গেছে দুটি পরিবারের স্বপ্ন। দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক অনেক দিনের। কেউ অপেক্ষা করছিলেন নববধূকে বরণ করার। আর নীলার মা অপেক্ষা করছিলেন মেয়ের একাকীত্ব ঘুচিয়ে সুন্দর একটা পরিবারের হাতে তুলে দেয়ার। সব চাওয়া পাওয়া মিলেছিল খুব কাছাকাছি। সময় এসেছিল স্বপ্ন সত্য করার। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে দেখা হলো না কারোর। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সঙ্গে নামাজে জানাজা পাশাপাশি সমাহিত করা হয়েছে তাদের।



পরিবারের দুইজনকে হারিয়ে নির্বাক বাবা-ছেলে। মুখে সামান্য পানিও নিতে চাচ্ছেন না তারা। বড় বোন ছিল আসিফের বন্ধু। আর মা তো ছিল তার পৃথিবী। এক সঙ্গে তাদের হারিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সে।



মা-বোনকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে গেছে নীলার ছোট আসিফ। বোনকে হারিয়ে তিনি বলেন, এমন ঘটনা একটি পরিবারকে কি করে মুহূর্তেই তছনছ করে দিতে পারে, তা শুধু সেই বুঝবে যার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর যেন এমন ঘটনা কারও জীবনে না ঘটে সেই ব্যবস্থা করুক সরকার।



স্ত্রী আর মেয়ের শোকে নির্বাক আলফু মিয়া। নিজেও ছিলেন সেই গাড়িতে। দুর্ঘটনায় তিনিও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন। কিন্তু ওষুধ খাওয়াতো দূরের কথা সামান্য পানিও মুখে নিচ্ছেন না তিনি। কারও সঙ্গে কথাও বলছেন না। শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top