দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে বিএনপি আমলেও
প্রকাশিত:
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১০:৫৫
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১১:২৭

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নতুন বই ‘অ্যা ব্রোকেন ড্রিম’ নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। সেখানে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে তাকে জোর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করানোর অভিযোগ তুলেছেন। তবে ক্ষমতাসীন সরকার বলছে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর তারই সহকর্মী বিচারপতিরা তার সঙ্গে বেঞ্চে বসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ কারণেই তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
কিন্তু শুধু আওয়ামী লীগ সরকারই নয়, বিএনপি সরকারের আমলে দৃশ্যত সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশনে। এমনটি সিনহা নিজেই লিখেছেন তার বইয়ে।
তখনকার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে তিনি লিখেছেন, বিএনপি যখন ২০০১ সালে সরকার গঠন করলো, তখন আওয়ামী লীগের প্রখ্যাত নেতারা সহ ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হলো। সংগঠনটির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আটক করা হলো।
মুক্তি পেলেও তাদেরকে ফের বিভিন্ন জেলায় দায়েরকৃত এক ডজন খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
আমি সব মামলা স্বপ্রণোদিত আদেশে খারিজ করে দিলাম। এছাড়া পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় কাউকে কিভাবে আটক দেখাতে হবে সেই ব্যাপারে গাইডলাইন দিয়ে দিলাম। এছাড়া আমি বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতাকে জামিনে মুক্তি দিলাম।
এ ঘটনা তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি সরকারকে ভীষণ ক্ষুব্ধ করে। তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ প্রকাশ্যে সংসদে আমার সমালোচনা করেন। তিনি আমাকে ঘোরতর আওয়ামী লীগ সমর্থক বিচারক হিসেবে আখ্যা দেন। আমি এ ধরণের সমালোচনা দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যাই।
চ্যানেল আই-এ আমার বন্ধু আবদুর রশিদের পরামর্শে আমি দেখছিলাম যে ওই অধিবেশন সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হচ্ছিল।
এটি তখন এক ধরণের নিয়ম হয়ে গিয়েছিল যে বড় দুই দলের যে-ই ক্ষমতায় আসে, সে-ই প্রতিপক্ষের নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে মামলা দায়ের করে।
এদিকে ওই ঘটনার পর বিশেষ গোয়েন্দা বিভাগ আমার বিরুদ্ধে অবিশ্বাস্য সব দুর্নীতির অভিযোগ দাখিল করে। আমি এই বিষয়টি জানতে পারি বিচারপতি সুলতান হোসেন খানের (এখন মৃত) কাছ থেকে, যিনি তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন।
আমি তাকে বলেছিলাম এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হোক। আমি তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। কিন্তু সুলতান হোসেন খান বললেন, এটি খুব বাজে নজির সৃষ্টি করবে। এছাড়া সংবিধানও এ ধরণের প্রক্রিয়া সমর্থন করে না। আমি তাকে বললাম, ওই বিশেষ সংস্থা আমার নাজেহাল করার চেষ্টা থামাবে না। আমি এ-ও জানতাম যে, কেন এই বিভাগ আমাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারক হিসেবে তুলে ধরতে এত আগ্রহী।
উৎসঃ mzamin
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: