ম্যাঙ্গো জরিপ: খুলনায় শেখ হাসিনা ৮১.৫% খালেদা জিয়া ১৮.৫% জনপ্রিয়


প্রকাশিত:
৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:২৪

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৮:৩০

ম্যাঙ্গো জরিপ: খুলনায় শেখ হাসিনা ৮১.৫% খালেদা জিয়া ১৮.৫% জনপ্রিয়

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুলনা বিভাগে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এখন ৮১.৫০ শতাংশ। তার বিপরীতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা ১৮.৫০ শতাংশ। সামাজিক মাধ্যমে এই দুই শীর্ষ নেত্রীকে নিয়ে সাধারণের কথা-বার্তা ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া থেকে এমনটাই জানাচ্ছে ম্যাঙ্গো জরিপ।



জরিপে দেখা গেছে- ব্যক্তি শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে করা দুটি মন্তব্যেও সাধারণের সাড়ার মধ্যে রয়েছে বড় ধরনের ফারাক।



“শেখ হাসিনার হাতে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ” ও “হাজার বছর বেঁচে থাকুক_বিচক্ষণতার আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’-এমন দুটি মন্তব্যে সামাজিক মাধ্যমে বিচরণকারীদের প্রতিক্রিয়ায় দেখা গেছে- ৯৬.৫৭ শতাংশ মানুষের সাড়া মিলেছে শেখ হাসিনার পক্ষে করা মন্তব্যে। তার বিপরীতে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে দেওয়া মন্তব্যে সাড়া মিলেছে মাত্র ৩.৪৩ শতাংশ মানুষের।



‘শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই’-এমন একটি বক্তব্যে সরাসরি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেনএই অঞ্চলের ৪৮.৬১ শতাংশ মানুষ ।



সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের এই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের পক্ষ থেকে তুলে ধরা কথা-বার্তা, মত-অভিমত, পছন্দ-অপছন্দর ওপর ভিত্তি করে এই জরিপ চালানো হয়েছে। ‘Machine learning Artificial Intelligence And Network Analysis for Good Governance’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ ‘ম্যাঙ্গো’ (MANGO) এই জরিপ চালিয়েছে।



আন্তর্জাতিক সংস্থা লুজলি কাপলড টেকনোলজিস’র তৈরি সফটওয়্যারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে আসা তথ্যগুলো বিচার বিশ্লেষণ করেই এই তথ্য-উপাত্ত সামনে আনা হয়। সফটওয়্যারভিত্তিক এমন জরিপ এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়।



খুলনা অঞ্চলে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে চালানো জরিপ মতে, কেবল শেখ হাসিনাই নন- তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও এখন সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ফলে আওয়ামী লীগের পক্ষে করা একটি মন্তব্যে দেখা গেছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অর্থাৎ ৮৪.৭০ শতাংশ মানুষ তাদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মন্তব্যটি ছিলো এরকম- “আওয়ামী লীগ স্বপ্ন দেখেছে এবং বাস্তবায়ন করেছে। আর এটিই বাস্তবতা, জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু”। অন্যদিকে বিএনপি’র পক্ষে করা- “এগিয়ে যাবে বিএনপি এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ”এমন একটি মন্তব্যে সাড়া মিলেছে মাত্র ৯.৯০ মানুষের। এদিকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল। বর্তমানে ঐক্যজোটের শরীক আসম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাসদ-কে নিয়ে “এসো সবাই দলেদলে জাসদের পতাকা তলে”এমন একটি স্লোগান খুলনা অঞ্চলে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৩.৮৩ শতাংশের সাড়া পেয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে করা ‘বীর জামায়াত’ এমন একটি মন্তব্য ১.৪৩ শতাংশ মানুষের এবং জাতীয় পার্টিকে নিয়ে করা একটি মন্তব্যে ০.১৫ শতাংশ মানুষের সাড়া মিলেছে।



ম্যাঙ্গো জরিপ জানাচ্ছে- এই জরিপে কেবল তাদের বক্তব্যই মিলছে যারা সামাজিক মাধ্যমে বিচরণ করেন। সামাজিক মাধ্যমের বাইরে যারা রয়েছেন তাদের মতামত এখানে অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। এটি একটি দুর্বল দিক। তবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর সমান এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই মানুষ যেহেতু তার মনের কথাটি সবচেয়ে খোলামেলা মন নিয়ে বলেন সে কারণে এই জরিপে ফুটে ওঠা তথ্য প্রকৃত চিত্রটাই সামনে আনে।



জরিপে অঞ্চলভিত্তিক নেতৃত্ব নিয়েও তথ্য দেওয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে ওই অঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি কথা বলেছে একসময়ের তারকা ফুটবলার, পরে ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক খুলনা-৪ অঞ্চলের আবদুস সালাম মুর্শেদীকে নিয়ে। এর সংখ্যা ১১.১০ শতাংশ। সাতক্ষীরা-৪ এর এসএম জগলুল হায়দার এমপি রয়েছেন দ্বিতীয় অবস্থানে। তাকে নিয়ে কথা বলেছেন ৯.০৫ শতাংশ মানুষ। বাগেরহাট-১ এর শেখ হেলাল উদ্দিনকে নিয়ে ৭.৪৭ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গা-১ এর সোলায়মান হক জোয়ার্দারকে নিয়ে ৭.২৫ ও খুলনা-৬ অঞ্চলের শফিকুল ইসলাম মোনাকে নিয়ে ৭.১৩ শতাংশ মানুষ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।



এছাড়া ঝিনাইদহ-৩ এ বিএনপি সমর্থত সঙ্গীত শিল্পী মনির খান ৬.৬৭ শতাংশ, ঝিনাইদহ-৪ এর সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ৬.৩৭ শতাংশ মানুষের দৃষ্টি কাড়তে পেরেছেন সামাজিক মাধ্যমে। ৩.২৮ শতাংশ নিয়ে খুলনা-২ এর নজরুল ইসলাম মঞ্জু ৩.১৫ শতাংশ সাড়া নিয়ে খুলনা-২ এর হাসানুল হক ইনু (তথ্যমন্ত্রী) ও ২.৮৭ শতাংশ সাড়া নিয়ে ঝিনাইদহ-৩ মো. নবী নেওয়াজ এই দৌড়ে টিকে রয়েছেন।



এই নেতারা ছাড়াও কুষ্টিয়া-৩ এর মাহবুবুল আলম হানিফ, খুলনা-৩ এর রকিবুল ইসলাম বকুল, ঝিনাইদহ-৪ এর আনোয়ারুল আজিম, যশোর-৪ এর তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব, মাগুরা-১ এর শর্মিলা রহমান (খালেদা জিয়ার পুত্রবধু), ঝিনাইদহ-৪ এর সাবিহা সুলতানার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে।



দেশের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে যে ঐক্যফ্রন্ট ও যুক্তফ্রন্টের সৃষ্টি হয়েছে- তাদের ব্যাপারে সাধারণের মনোভাব জানারও চেষ্টা করা হয়েছে এই জরিপে। এতে দেখা গেছে- খুলনা অঞ্চলের ৬৩.৩৯ শতাংশ মানুষ এই প্রচেষ্টাকে ইতিবাচক ভাবে দেখছে। তারা এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দৃঢ়তর হবে বলেই মনে করছেন। অন্যদিকে ১৬.০৭ শতাংশ মানুষ এই প্রক্রিয়ার প্রতি তীব্র নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। আর ২০.৫৪ শতাংশ মানুষ এই বিষয়ে মন্তব্য করতেই চাননি।



 



 



 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top