রাশেদ খান মেননের শাস্তি চেয়ে আলেমদের বিক্ষোভের ডাক


প্রকাশিত:
৬ মার্চ ২০১৯ ১৩:৪৮

আপডেট:
১৬ মার্চ ২০২৫ ০০:২২

রাশেদ খান মেননের শাস্তি চেয়ে আলেমদের বিক্ষোভের ডাক

জাতীয় সংসদে গত ৩ মার্চে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাংসদ রাশেদ খান মেননের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।



এছাড়া মেননের ওই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী। একই সঙ্গে এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রাশেদ খান মেননকে অনতিবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।



এদিকে কওমী মাদরাসাকে বিষবৃক্ষের সাথে তুলনা, ইসলামী অনুশাসনকে ‘মোল্লাতন্ত্র’ ও আলেম সমাজকে কটাক্ষ্য করে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে রাশেদ খান মেননের অনতিবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমা ও শাস্তি চেয়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী।



বুধবার (৬ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হবে। এতে বাংলাদেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম ও ইসলামী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন এবং বক্তব্য রাখবেন।



মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেছেন, জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে কাদিয়ানীদের দোসর রাশেদ খান মেনন কুরআন-সুন্নাহর বিধান ও ইসলামী অনুশাসনকে ‘মোল্লাতন্ত্র’ আখ্যায়িত করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে (সা.) অপমানিত করেছেন। তিনি আল্লামা আহমদ শফিকে কটাক্ষ করে শুধু আলেম সমাজ নয়, প্রধানমন্ত্রী, স্পীকারসহ গোটা সংসদকে অপমানিত করেছেন। তিনি আল্লাহ ও রাসূলকে (সা.) অবমাননা করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মেননকে শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।



আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা নুরুল ইসলাম বলেছেন, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন সংসদে কাদিয়ানীদের পক্ষে এবং কওমী শিক্ষা ও আল্লামা শফী’র বিরুদ্ধে অশালীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য রেখেছেন। তিনি পঞ্চগড়েও কাদিয়ানীদের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। এসব কারণে মেনন আদৌ মুসলমান আছেন, না কাদিয়ানী হয়েছেন, এ নিয়ে মানুষ সন্দেহ পোষণ করেছেন।



হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী মহাজোটের শরীক নেতা রাশেদ খান মেননের দেয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘রাশেদ খান মেননকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। রাশেদ খান মেনন মূলত তার প্রদত্ত বক্তব্যের মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে ধর্মবিদ্বেষ মনোভাব প্রকাশ করেছেন। অনতিবিলম্বে তিনি যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান তাহলে তৌহিদি জনতা এসব কটূক্তি, অপপ্রচার ও ধর্মবিদ্বেষী বক্তব্যের সমুচিত জবাব দেবে।’



উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় আওয়ামী লীগের জোট শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘পাঠ্যক্রমগুলোকে ধর্মীয়করণের প্রচেষ্টা, তেঁতুল হুজুরের আবদারে সংস্কার করা হয়েছে। কুসুম কুমারী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলালের কবিতা বাদ দেওয়া হয়েছে। হয়ত পাকিস্তান আমলের মতো ‘সজীব করিব মহাশ্মশানের স্থলে সজীব করিব গোরস্থান’ আবৃত্তি করতে হবে।



কওমী সনদের স্বীকৃতি দিয়ে বিষবৃক্ষ রোপণ করা হচ্ছে কি না- সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজকে তেঁতুল হুজুরের দল প্রধানমন্ত্রীকে কওমী জননী উপাধি দিয়েছেন। এই ব্যাপারে আমরা সতর্ক না হলে বুঝতে হবে আমরা কোনো বিষবৃক্ষ রোপন করতে যাচ্ছি।’



আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণা, তাদের ওপর আক্রমণ- মোল্লাতন্ত্রের এ ধরনের পাকিস্তানি অনুকরণ রাষ্ট্রপতি যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা তার ভাষণে উল্লেখ করেছেন- সেটাকে চরম বিপদে ফেলছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত সরকারের এই মন্ত্রী।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top