অভিনব কৌশলে ৩০০ কোটি টাকা হাতিয়েছে তারা
প্রকাশিত:
২ মে ২০১৯ ১৬:০০
আপডেট:
১৬ মার্চ ২০২৫ ০৯:৩৭

অভিনব বিভিন্ন কৌশলে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই এদের পেশা ও নেশা। কখনও পাওয়ার কয়েন, কখনো ম্যাগনেটিক পিলার, তক্ষক, ভাঙা জাহাজের লোহা, বিদেশি কাপড় দেশে বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা প্রতারণা করেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় এক বা একাধিক প্রতারণার মামলাও রয়েছে।
বুধবার (১ মে) বিকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর কাফরুলসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরু কবির।
গ্রেফতাররা হলেন- নুরুল ইসলাম (৩৭), মিনার মিয়া (৪২), মিজান (৫০), তোফাজ্জল করিম ওরফে তানভীর (৪১), আক্তার ফারুক (৪৩), রাজু (৪১), গোলাম মোস্তফা শাকিল(৪২), শাকিল খান (৩০), জাহাঙ্গীরুল আবেদীন (৪৫), আজগর আলী হাওলাদার (২৭), সিরাজুল ইসলাম (৪৫), শামিম মিয়া (৪০), অজয় চাকী (৪০), হারুন-উর-রশিদ (৪৭) ও তুষার আহমেদ (২০)।
র্যাব কর্মকর্তা চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির জানান, প্রতারকরা ধনী ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বিভিন্ন ধরনের ধাতব পণ্য বিক্রির প্রলোভন দেখায়। টার্গেটেড ব্যক্তিকে কম দামে পণ্য কেনার সুযোগ দিয়ে ফের তা বিদেশে বেশি দামে বিক্রির ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলে। প্রতারণার কৌশল হিসেবে তারা ম্যাগনেটিক কয়েন ব্যবহার করে। এই কয়েনের কার্যকারিতা দেখানোর জন্য ধানের মধ্যে সুঁইয়ের মাথা লুকিয়ে রাখে। কয়েনটি কাছে নিয়ে আসলে ধান ম্যাগনেটের প্রভাবে আকর্ষিত হয়। এটা দেখিয়ে কয়েনগুলো অনেক মূল্যবান বলে তা বিক্রির প্রলোভন দেয়া হয়। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে কেউ ওই কয়েন কিনতে চাইলে কোটি টাকার বিনিময়ে তা বিক্রি করে। অগ্রিম হিসেবে ক্রেতার কাছ থেকে তারা ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা নিয়ে নেয়। কিন্তু কয়েন কেনার পর টার্গেটেড ব্যক্তিকে না চেনার ভান করতো প্রতারকরা এবং বাড়াবাড়ি করলে হুমকি দিতো তারা।
তিনি আরো বলেন, একইভাবে প্রতারণার মাধ্যমে শাটিং ফেব্রিক্স, জাহাজ ভাঙা লোহা, ম্যাগনেটিক পিলারসহ তক্ষকও বিক্রি করতো এই চক্রটি। গত এক দশকের বেশি সময় ধরে এই চক্রের সদস্যরা দুই শতাধিক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
প্রতারকদের তক্ষক বিক্রির কৌশল সম্পর্কে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, প্রতারক চক্রের এজেন্টরা ভিকটিমদের জানায় যে, যদি ১৫ ইঞ্চির বড় এবং তক্ষকের ওজন কমপক্ষে ২৫৩ গ্রাম হয়, তাহলে ওই তক্ষকের মূল্য ১০০ থেকে ২০০ কোটি টাকা। প্রতারকচক্রের সদস্যরা টার্গেট ব্যক্তিদেরকে কম দামে তক্ষক কিনে কোটি কোটি টাকা উপার্জনের লোভনীয় অফার দেয়। ভিকটিম যখন তক্ষক কেনার জন্য রাজি হন, তখন প্রতারক চক্রের সদস্যরা কৌশলে ছোট ভিডিও’র মাধ্যমে তক্ষক দেখায় এবং ভিকটিমের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। আবার কখনও কখনও ভিকটিম তক্ষক কেনার পর প্রতরকচক্রের সদস্যদের মধ্যে কেউ একজন তক্ষক বিশষজ্ঞ হিসেবে পরিচয় দেয় এবং ভিকটিমের কেনা তক্ষকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানায়, এই তক্ষক বিদেশে বিক্রির উপযুক্ত নয়। আবার যদি তক্ষকটি সঠিক মাপের ও ওজনের হয়, তখন প্রতারকচক্রের সদস্যরা সু-কৌশলে তক্ষকটি মেরে ফেলে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: