প্রেসিডিয়ামে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে আওয়ামী লীগ?


প্রকাশিত:
৩০ জুন ২০১৯ ০৬:২৪

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩৬

প্রেসিডিয়ামে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে আওয়ামী লীগ?



আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে অক্টোবরের কাউন্সিল তারা কোনো অবস্থাতেই পিছাবে না। এই অক্টোবরের কাউন্সিলকে সামনে রেখেই আওয়ামী লীগ তার সাংগঠনিক তৎপরতা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারক একাধিক সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এবার আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে কোনোরকম বড় পরিবর্তন হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই- এ কথা সবাই জানে। ১৯৮১ সাল থেকে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও শেখ হাসিনা বার বারই বলে আসছেন এবারই তার শেষ। কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কারণে এই মেয়াদেই তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। অর্থাৎ এটিই শেষ মেয়াদ- সেই শর্তেই তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।



দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও ওবায়দুল কাদেরের একটি মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। দ্বিতীয় মেয়াদেও তাকে রাখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলেছেন, এই মুহূর্তে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের কোনো বিকল্প নেই। তবে আওয়ামী লীগ এবারের নেতৃত্বে তারুণ্যের প্রতি জোর দেবে। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছাড়া কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক উভয়েই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিয়ে কাজ করছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যদিও এখনো এগুলো বিষয় নিয়ে কিছু চূড়ান্ত নয়। তারপরেও আওয়ামী লীগ সভাপতির আগ্রহে এবার প্রেসিডিয়ামকে অনেক বেশি কার্যকর এবং সক্রিয় করার জন্য প্রেসিডিয়ামের পুরো রূপটাই পাল্টে দেওয়া হতে পারে। প্রেসিডিয়ামে জায়গা পেতে পারেন দলের তরুণ এবং সক্রিয় নেতারা।



ধারণা করা হচ্ছে যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের চারজনেই প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন। প্রেসিডিয়ামে যারা অপেক্ষাকৃত প্রবীণ, তাদেরকে প্রেসিডিয়াম থেকে সরিয়ে উপদেষ্টামণ্ডলীতেও নেওয়া হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মো. নাসিমসহ আরও কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে দলের উপদেষ্টামণ্ডলীতে অন্তর্ভূক্ত করা হতে পারে। উপদেষ্টামণ্ডলীকে ‘সিনিয়র ক্লাব’ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা। সেখানে উপদেষ্টামণ্ডলীর এখন যেমন কার্যক্রম সীমিত, সেটা পরিবর্তনের করে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে উপদেষ্টামণ্ডলীর কার্যক্রম সুর্নিদিষ্ট করতে চাইছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে প্রেসিডিয়ামকে সাংগঠনিক বিষয়সহ দলের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণীসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আরও বেশি পরিমাণে সম্পৃক্ত করা, অধিক সংখ্যক প্রেসিডিয়ামের বৈঠক অনুষ্ঠিত নিশ্চিত করা, প্রেসিডিয়ামকে দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসার একটা পরিকল্পনা চলছে।



আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছেন যে, কাউন্সিলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে এবং গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রস্তাবনা নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি কমিটি কাজ করছে। এই সংশোধনীর সুপারিশগুলো চূড়ান্ত হলে তা আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে দেওয়া হবে। সভাপতি যদি অনুমোদন দেন তাহলে সংশোধিত গঠনতন্ত্র কাউন্সিলের বিবেচনার জন্য উপস্থাপিত হবে। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে যেসব প্রস্তাবনা বিবেচনা করা হচ্ছে তার মধ্যে প্রেসিডিয়ামকে শক্তিশালী করা ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যক্রম বৃদ্ধি, সম্পাদকমণ্ডলীর দায়িত্ব এবং ক্ষমতাবৃদ্ধির প্রস্তাব করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে যেমন দলের অপেক্ষাকৃত তরুণদের প্রাধান্য দেওয়া হবে, তেমনি কেন্দ্রীয় কমিটিতে মনোনয়নবঞ্চিত ত্যাগী, পরিশ্রমীদের প্রাধান্য দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। আওয়ামী লীগ গত ৫ বছর ধরেই দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে সরকারকে আলাদা করার প্রক্রিয়া চলছে যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। সেই লক্ষ্যেই এবারও আওয়ামী লীগের অধিকাংশ পদে যারা নির্বাচিত হবেন তারা মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য হবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।



তবে সবকিছুই চূড়ান্ত হবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার অনুমোদনের সাপেক্ষেই। এই কর্মকাণ্ডগুলোও পরিচালিত হচ্ছে তার নির্দেশেই।



বাংলা ইনসাইডার


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top