দুই বাঙালি ভাষা সৈনিকের স্বপ্নপূরণ এবং অভ্রর জন্মবৃত্তান্ত : ডঃসুবীর মণ্ডল


প্রকাশিত:
১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:২০

আপডেট:
১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:৩৪

ছবিঃ মেহেদী হাসান খান এবং লেখক

 

অভ্রর জন্ম ও মেহদী হাসান ও মোস্তফা জব্বার নামক দুই  অদম্য বাঙালি ভাষাযোদ্ধার স্বপ্নপূরণের এক মানবিক গল্প। আমাদের কাছে এক বিস্ময়কর প্রেরণা।বিশ্ব মানচিত্রে আলোড়িত দু'ই তরুণ প্রজন্মের নক্ষত্র। আরো এই ধরনের নক্ষত্রের জন্ম হোক আগামীর দু-বাংলার মাটিতে। এই দুই তরুণের অদম্য প্রয়াস আমাদের বাঙালির এক আকাশ অহংকার।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের কোনো এক স্থানে ক্যাম্পাসেরই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া জুনিয়র-সিনিয়র) ছাত্রের মাঝে কথা হচ্ছিল।

বড় ভাই: কত করে নিবি?
ছোট ভাই: মানে? কীসের কত করে নিবো?
বড় ভাই: আরে, তোর সফটওয়্যারের দাম কত করে রাখবি?
ছোট ভাই: দাম রাখবো কেন? ওটা তো ফ্রি। কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না।

জুনিয়রের কথা শুনে সিনিয়র এবার যারপরনাই অবাক। বলিস কী? বলা ছাড়া আর কোনো কিছুই বের হয়নি তার গলা দিয়ে। ওদিকে জুনিয়রের বরাবরের মতোই স্বাভাবিক উত্তর, "হ্যাঁ। ভাষার জন্য টাকা নেবো কেন?

গল্পের শুরুটা ছিল ঠিক এরকম। তখন ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে চলছিল বাঙালির প্রাণের উৎসব বইমেলা। একাডেমি চত্বর জেগে উঠেছিল বাঙালিয়ানার হরেক রকম সাজে সজ্জিত অসংখ্য বইয়ের স্টলে। একাডেমির বাতাসে তখন নতুন বইয়ের ঘ্রাণ। সেবারের সেই বইমেলায় একটি সংগঠন অংশ নিয়েছিল, নাম বাংলা ইনভেনশ থ্রু ওপেন সোর্স, সংক্ষেপে বায়োস। তবে বায়োস বই বিক্রেতা সংস্থা নয়। তারা বইমেলায় এসেছিল একটি প্রদর্শনী করতে। এই সংগঠনের সদস্যরা মেলায় সম্পূর্ণ বাংলায় লোকালাইজ করা একটি লিনাক্স ডিস্ট্রোর প্রদর্শনী করেছিল। এর নাম ছিল বাংলা লিনাক্স।
সেবারের মেলায় বায়োসের ঐ প্রদর্শনীতে দর্শকদের ভিড়ে দাঁড়িয়ে ছিল একজন ক্ষুদে দর্শক। ছেলেটির প্রোগ্রামিংয়ে ছিল ভীষণ আগ্রহ। প্রদর্শনীর অন্যান্য দর্শকদের সাথে তার একটি পার্থক্য ছিল। ঘরে ফেরার সময় আর সবাই যখন মেলার উত্তেজনা নিয়ে ঘরে ফিরেছিল, তখন সে ঘরে ফিরেছিল প্রদর্শনীর বিষয়বস্তুটি স্নায়ুতে বয়ে নিয়ে। সেদিন থেকেই তার মাথায় কাজ করছিল- কীভাবে এমন একটা কিছু বানানো যায়, যা দিয়ে অতি সহজেই সবাই বাংলা লিখতে পারবে।


মেলা থেকে সেদিন ঘরে ফিরেই মেহদী বায়োসের লিনাক্স নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন। কিন্তু তার কম্পিউটারে উইন্ডোজ থাকায় ইচ্ছা সত্ত্বেও বাংলা লিনাক্স দিয়ে কাজ করতে পারছিলেন না তিনি। কিন্তু প্রোগ্রামিংয়ে আসক্ত ছেলেটির মনে এই ব্যাপারটি গভীর এক কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিল। আর তাই তিনি বাংলা লিনাক্সের ঐ ফন্টটি ইনস্টল করেন। আর এ সময়ই তার চোখে পড়লো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড কিবোর্ডের ইনসার্ট ক্যারেক্টার ব্যবহার করে ঐ ফন্টের ক্যরেক্টারগুলো আনা যায় এবং বেশ চমৎকার কাজও করে। তবে সেসময় এটি খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাপার ছিল। আরো কষ্টকর ছিল যুক্তাক্ষর লেখা। কিন্তু এরপরও মেহেদীকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি এই ফন্ট। কেননা, এভাবে লেখাটা ছিল বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, যা টাইপকারীর মাঝে বিরক্তির উদ্রেক করে। কিন্তু মেহদী তো বিরক্তি এনে দিতে এই প্রজেক্ট নিয়ে নামেননি। তিনি তো চান বাংলা লেখার এমন একটি সিস্টেম, যার সাহায্যে যে কেউ অনায়াসে বাংলায় লিখে ফেলতে পারবে তার মনের কথাগুলো।
তবে এ পর্যায়ে এসে মেহদী উপলব্ধি করলেন- তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এখন প্রয়োজন একটি কিবোর্ডের, যা দিয়ে ইউনিকোড দিয়ে খুব সহজেই বাংলা লেখা যাবে। কিন্তু এখানেই সমস্যাটি বাঁধে। মেহদী ভেবেছিলেন, কিবোর্ডটি ইনস্টল করে নামিয়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু তা আর হয়ে উঠলো না। কেননা, সেটি কোথাও খুঁজে পেলেন না তিনি। তিনি বুঝতে পারলেন, এমন কিবোর্ড পেতে হলে তাকে কিবোর্ড তৈরি করতে হবে। কিন্তু কীভাবে সম্ভব সেটা?
এজন্য তো অনেক সময় ও পরিশ্রমের প্রয়োজন। এত সময় যে মেহদীর ছিল না। কেননা ততদিনে তিনি সেই ছোট ছেলেটি আর নেই। তিনি তখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়ালেখা করছেন। কিন্তু সৃষ্টির নেশা পেয়ে বসেছিল তাকে। এ -এক মারাত্মক নেশা। মেহদীর বেলায়ও যেন তা-ই হলো।
ক্লাসে, ক্যাম্পাসে সরব প্রাণোচ্ছ্বল ছেলেটি কেমন যেন উদাস হয়ে গেলো। কারো সাথে আগের মতো মেশে না। নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল নেই, ঠিক নেই নাওয়া-খাওয়ার। হোস্টেল রুমের দরজা জানালা বন্ধ করে সারাক্ষণ বসে বসে কী যেন করে! শিক্ষকরা ভাবলেন, উচ্ছন্নে গেল বুঝি ছেলেটা। বন্ধুরা ভাবলো, কী করছে ও? কিন্তু মেহদী জানতেন তিনি কী করছেন। একদিকে পড়াশোনা অন্যদিকে ইউনিকোডভিত্তিক কিবোর্ড বানানোর চেষ্টা। সব সন্দেহ পাশ কাটিয়ে তিনি চলছিলেন তার গতিতে। আর এভাবেই একদিন তিনি তৈরি করে ফেললেন একটি প্রোটোটাইপ।
এই অ্যাপ্লিকেশনটি মেহদী প্রথমে বানিয়েছিলেন মাইক্রোসফটের ডটনেট ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করে। কেননা অ্যাপ্লিকেশনটি তিনি বানিয়েছিলেন উইন্ডোজের জন্য। কিন্তু ঝামেলাটা তখন হলো, যখন ভারতে আয়োজিত বাংলা ফন্ট তৈরির একটি প্রতিযোগীতায় মেহদী নিজের তৈরি প্রোটোটাইপটি পাঠালেন। কারণ, মেহদীকে তারা জানালো, তার তৈরি প্রোটোটাইপটি ঘন ঘন ক্র্যাশ হচ্ছে।
মেহদী আন্দাজ করতে পারলেন ঘটনাটা কী। তবে দমে গেলেন না। বরং এবার তিনি যেটা করলেন তা হলো, তিনি ডটনেট বাদ দিয়ে ক্ল্যাসিক ভিজু্য়্যালের ওপর ভিত্তি করে আবার প্রোটোটাইপ তৈরি করলেন। এবার তিনি বুঝতে পারলেন, ক্র্যাশের ঝামেলাটা আর নেই। আর এভাবেই তৈরি হলো অভ্রর বর্তমান ফ্রেমওয়ার্ক। এবার যেন স্বার্থক হলো তার সেই বইমেলায় বায়োসের তৈরি   ফন্ট দেখে অনুপ্রাণিত  হয়ে শুরু করলেন এক দীর্ঘ যাত্রা। এই যাত্রপথ মসৃণ ছিল না,পদে পদে বাধার পাহাড়।কিন্তু   আত্মবিশ্বাস হারান নি কখনও। এরপর শুধুই এগিয়ে চলা। মেহেদী হাসানের উর্বর মস্তিষ্কের সৃষ্টি অভ্রর ওয়েবসাইটটির  নাম 'ওমিক্রন' ল্যাব । অভ্রও  ওমিক্রন ল্যাব মূলত একই বয়সী, কেননা,অভ্রর সাথেই ওমিক্রন ল্যাব আপনা আপনি দাঁড়িয়ে যায়নি। আসলে একে দাঁড় করোনাটা ছিল তার আরেকটি চ্যালেঞ্জ, সাইটটিকে সবার নিকট গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সচেষ্ট হলেন।সাইটটি যাতে প্রফেশনাল ওয়েব সাইট হয় সে ব্যাপারে বিশেষ নজর দেন। এর জন্য পরিশ্রম করতে হয়েছে সীমাহীন। লেখাপড়া-ব্যক্তিজীবনের  অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছিল, সেই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বিদ্রুপের বাঁকা  হাসি, কিন্তু হাসি মুখে তাকে সব সহ্য করতে হয়েছিল। মাটি কামড়ে পড়ে রইলেন। সব কিছুকে অগ্রাহ্য করলেন।এক সময় মেডিকেল কলেজের অধ্যাপকগন  তাকে  কলেজ   ছেড়ে দিতে বলেন।  মন্তব্য করেছিলেন 'মেহেদী হাসান কোনদিন ডাক্তার হতে পারবে  না।'  তখন এসব নিয়ে ভাবার অবকাশ তার ছিল না। সে তখন স্বপ্নপূরণের   নেশায় মেতে উঠেছে, সে  ভীষণ ব্যস্ত  সাইটে নিয়মিত আপডেট নিতে, ম্যানুয়েল লিখতে, ভার্সান  নম্বর বাড়াতে আর ইউজারদের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে। মেহেদী  হাসানের অদম্য ইচ্ছা ও চেষ্টায় ধীরে ধীরে অভ্র পৌঁছে যায় ইউজারদের কাছে। জীবনের প্রথম স্বীকৃতি লাভ ঘটে 'কম্পিউটার টুমরো' নামে একটি  মাসিক ম্যাগাজিন  কাছ থেকে। এই সামান্য স্বীকৃতি জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়, একটা অদম্য আত্মবিশ্বাসকে ভরকরে এগিয়ে যেতে লাগলেন।

এই সাইটের জন্য কারোর  কাছে কোনো পয়সা নিলেন না, তার ভাবনা ছিল ---"ভাষার জন্য টাকা নেব কেন?"তিনি বাংলা ভাষাকে সবার জন্য উন্মুক্ত  করে দিয়েছেন একক প্রচেষ্টায় , ২০০৬সাল থেকে অভ্র কিবোর্ড পোর্টালটি তিনি বিনামূল্যে  ব্যবহারের জন্য  উন্মুক্ত  করেন  তথ্যপ্রযুক্তিতে  ।অভ্রের হাত ধরে আজ সরকারি অফিস, আদালত,মূদ্রণ শিল্পে ও গবেষণা মূলক কাজ  চলছে জোর কদমে। এক মুক্ত আকাশে বাঙালির পদচিহ্ন। ভাবতে বেশ ভালো লাগলো সমস্ত বাঙালির। এমনকি নির্বাচন কমিশনও তাদের প্রয়োজনীয়  কাজ সম্পন্ন করতে ব্যবহার করছে অভ্র। ফলস্ববূপ  দেশের কোটি কোটি টাকা খরচ বেঁচে যাচ্ছে। প্রচারবিমুখ মেহেদী হাসানের বিনিময়ে কোন প্রত্যাশা নেই, শুধুস্বপ্ন দেখেছিলেন--"বাংলা ভাষা হোক উন্মুক্ত।"   

অভ্রের আভিধানিক অর্থ আকাশ। মেহেদীর তৈরি এই আকাশে বাংলা ভাষা যেন আজ সত্যিই উন্মুক্ত। পরবর্তীকালে অভ্রকে বাংলা কিবোর্ড রিসোর্স হিসেবে ইউনিকোড ওয়েবসাইটে অন্ততর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলা তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এ- এক মহান বিপ্লব।  বিশেষ  অবদানের জন্য ১০১৬ সালে স্পেশাল কন্ট্রিবিউশন অ্যওয়ার্ড পান। এছাড়াও টপ টেন আউটস্টান্ডিং ইয়ং পার্সনস পুরস্কারে ভূষিত হন। এত খ্যাতি অর্জন করলেও তার পা ছিল মাটিতে।ডাক্তারি পেশা ছেড়ে আজ তিনি বুঁদ হয়ে আছেন প্রোগ্রামিং-এর নেশায়। দুঃখের বিষয় বড় ধরনের স্বীকৃতি লাভ ঘটেনি, তিনি এই উপমহাদেশে উপেক্ষিত হয়েছেন। নিভৃতে জীবন কাটাচ্ছেন ভাষাকে উন্মুক্তকারী এক স্বীকৃতি না পাওয়া ভাষা সৈনিক।  এবার আরো এক বাঙালি তরুণের অদম্য ইচ্ছা পূরণের ইতিবৃত্ত কাহিনী শোনাবো আপনাদের।

 

বাংলা অক্ষরের বিশ্ব পরিচিতি। কথাটা শুনলে খুব ভালো লাগে। আর এক অদম্য বাঙালির স্বপ্নপূরণের ইতিবৃত্ত অন্বেষণে এই নিবন্ধটি। আজ সারা পৃথিবীতে খুব সহজেই বাংলা শেখার জন্য ও বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে অভ্র-কীবোর্ড বিশেষ ভাবে সমাদৃত। এ -এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

বাংলা ভাষাকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এ এমন সহজ ব্যবহারে তুলে ধরার ক্ষেত্রে ওপার বাংলার এবং এপার বাংলার কয়েকজন মানুষের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং উল্লেখযোগ্য। একটুখানি ইতিহাসের পাতায় ফিরে এলাম। উল্টে দেখতে পাই মোস্তফা জব্বারের উজ্জ্বল নামটি। বাংলা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং-এর ইতিহাসে আজ তিনি ভীষণ ভাবে প্রাসঙ্গিক। তরুণ প্রজন্মের নক্ষত্র মোস্তফা জব্বার ১৯৮৮ সালে বিজয় বেঙ্গলী কী-বোর্ডের প্রচলন করে পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন।এ-এক নীরব বিপ্লব। সেখানেই সূত্রপাত এমন কিছু নতুন ভাবনার। সময়ের হাত ধরে পরবর্তীতে বৃহত্তর বাঙালি সমাজ পায় অভ্র-কীবোর্ড।

বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানাচ্ছে যে , অভ্র-কীবোর্ড ৫,৫০-এর অরিজিনাল অথরস্ মেহেদী হাসান খান ও রিফাত নবী। ডেভেলপার omicronlab প্রাথমিকভাবে প্রকাশ হয়েছিল ২০০৩-এর ২৫শে মার্চ। বাংলা টাইপের ক্ষেত্রে অভ্র-র যুগান্তকারী ভূমিকা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ও তাৎপর্যপূর্ণ।যে কোন বাঙালি বা বাংলাভাষী যদি উচ্চারণ অনুযায়ী ইংরেজিতে টাইপ করেন, তাহলে তা অনায়াসে বাংলায় রূপান্তরিত হবে অতি সহজেই। মূল বিষয় হল, English to Bengali phonetic typing হল এর  প্রধান বৈশিষ্ট্য। যেমন, যদি কেউ লেখেন' ami banglay gan gai' তাহলে বাংলায় সেটা সঙ্গে সঙ্গেই হয়ে যাবে--'আমি বাংলায় গান গাই,'

এমন যুগান্তকারী ও অভাবনীয় আবিস্কারের জন্য বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ এবং সমগ্র বাঙালি এই অকল্পনীয় চিন্তা -ভাবনার প্রতি আজীবন ঋণী থাকবেন।

আজ সারা পৃথিবীতে অভ্র-কীবোর্ড সমস্ত বাঙালির কাছে ভীষণ আদরনীয়। বিশ্বজুড়ে বাংলা ভাষা চর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে । সেই কারণে আজ সাদরে গৃহীত হয়েছে অভ্র। এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। এর প্রধান কারণ, এর সহজ প্রয়োগ পদ্ধতির জন্য। আর একটি গর্বের বিষয়,  এক দশকের বেশি লক্ষ্য করেছি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিতরে -বাইরে বাংলা ভাষার প্রচলন ও প্রয়োগ। বাংলা দেশের মানুষের কাছে বাংলা প্রাণের ভাষা। এপার বাংলার সর্বক্ষেত্রে বাংলাভাষা অনেক খানি অবহেলিত ও উপেক্ষিত। এটা শুধু লজ্জা নয়, চরম অপমানের। লেখাপড়া জানা মানুষও  অনেক খানি এড়িয়ে যান, বাংলা ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না। এটা আমাকে গভীর ভাবে পীড়িত করে। বাংলাদেশ থেকে মনে হয় ,অনেক কিছুই শেখার আছে আমাদের । রূপসী বাংলার দেশ বাংলাদেশে সর্বত্র বাংলা। কিন্তু আমরা পারলাম না। সেখানে বিজ্ঞাপনে বাংলা, হোডিং-সাইনবোর্ড বাংলায়, মুদ্রায় বাংলা,আলাপ-আলোচনা সব কিছুতেই বাংলা। ভীষনভাবে আমি আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি বাংলাভাষার এমন রাজকীয় মর্যাদা দেখে। আজো সেই আবেগ ও মর্যাদায় মজে আছে এপার বাংলার বাঙালি মানস। 

তথ্যসূত্র-বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের পত্রিকা, রোর-বাংলা এবং বিষয় বাংলাদেশ-সমাজ-সাহিত্য- সংস্কৃতি সম্মাদনা ধনঞ্জয় ঘোষাল‌।

 

ডঃ সুবীর মণ্ডল
লোক -গবেষক প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প- অনুগল্প, রম্যরচনা ও চিত্রনাট্য এবং ভ্রমণকাহিনীর লেখক। বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top