দিনাজপুরে ইউএনওকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা
প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৩৮
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ২৩:১৩

প্রভাত ফেরী: দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে পরিকল্পিতভাবে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে তাঁর বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ। আহত নির্বাহী অফিসারকে রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকে এবং তার বাবাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত আড়াইটা থেকে ৩ টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে তাঁর সরকারি বাসভবনে।
জানা গেছে, বুধবার রাত আড়াইটা থেকে ৩ টার দিকে তাঁর সরকারি বাসভবনে ২য় তলার ভেন্টিলেটর দিয়ে ১ থেকে ২ জনের কে বা কারা ভিতরে প্রবেশ করে। প্রবেশকারীরা প্রথমেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শয়নকক্ষে প্রবেশ করে হাতুরী দিয়ে এলো পাতাড়ি আঘাত শুরু করে। এক পর্যায়ে পাশের রুমে অবস্থানরত তাঁর পিতা ওমর আলী শেখ তাহাজ্জতের নামায পড়তে উঠে এ দৃশ্য নজরে পড়লে মেয়েকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে। প্রবেশকারীরা তাঁর পিতাকে হাতুরী দিয়ে আঘাত করলে সে মেঝেতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়।
অপরদিকে প্রবেশকারীদের হাতুরীর বেদম আঘাতে রক্তাত অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজ্ঞান হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। পাশে থাকা ৩ বছরের শিশু পুত্রের আর্তনাদে নাইট গার্ড শুনে বের হওয়ার চেষ্টা করলে দেখে ভিতরের দরজা তালা দেয়া। এরপর তার চিৎকারে পাশের ভবনে অবস্থানরত বিভিন্ন অফিসের লোকজন এসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তাঁর পিতাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঘোড়াঘাট হাসপাতালে ভর্তি করায়। আহতদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর প্রেরণ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে রংপুর ডক্টর ক্লিনিকে এবং পিতাকে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম, জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাফে খন্দকার শাহানসা। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও পাশ্ববর্তী উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছেন। এখন পর্যন্ত জানা যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় স্থানান্তর করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তোফায়েল হোসেন ভুঁইয়া জানান, ইউএনও এর মাথার বাম দিকে বেশি আঘাত লেগেছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। ধাতব কোন বস্তু দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তার শরীরের ডান দিকে অবশ হয়ে গেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা আমিরুল ইসলাম জানান, ধারনা করা হচ্ছে রাত আনুমানিক ৩টার দিকে নির্বাহী কর্মকতার বাসভবনের দ্বিতলায় বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে। ঘটনাস্থলে নীচে একটি মই পাওয়া গেছে। প্রথমে নির্বাহী কর্মকতার বাবাকে আহত করে বাথরুমে আটকিয়ে রাখে। এর পর নির্বাহী কর্মকতা ওয়াহিদা খানকে হাতুড়ী দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। বাসভবনে নাইটগার্ডকে নীচে তালা দিয়ে আটকিয়ে রাখে। কাজের মেয়ে নীচে ছিল।
দুস্কৃতকারী ১/২ জন থাকতে পারে। তবে পুলিশ জানিয়েছে এটি কোন ডাকাতি ছিলনা। সম্ভবত হত্যার উদ্দেশ্য ছিল। এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম জানান, আমি বর্তমানে ঘোড়াঘাটে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। কেন এই ঘটনা ঘটলো তা এখনো জানা যায়নি। তবে কার্যক্রম চলছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, দিনাজপুর ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ওয়াহিদা খানম এর স্বামী রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা মেজবাহুল হোসেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: