হায়দরাবাদের হাতে শেষ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের আইপিএল
প্রকাশিত:
৭ নভেম্বর ২০২০ ২২:৫৫
আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩৬

প্রভাত ফেরী: যে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ সবার শেষে এবার আইপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে, তারাই উঠে গেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। শুক্রবার এলিমিনেটর ম্যাচে কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের দল। আগের ১২টি আইপিএলে তিনবার ফাইনালে উঠেও শিরোপা জেতা হয়নি ব্যাঙ্গালোরের। ফাইনালে ওঠা দূরে থাক, আরেকটি আইপিএল ব্যাঙ্গালোরকে শিরোপার হাতছানি দেখিয়ে দূরে সরে গেল প্লে-অফ থেকেই। প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৩১ রান করেছিল ব্যাঙ্গালোর। দুই বল বাকি থাকতে হায়দরাবাদ তা টপকে গেছে ৬ উইকেট হাতে রেখেই।
বিরাট কোহলি যেমন নকআউটের আসল চাপের ম্যাচে বারবার ব্যর্থ হন আইসিসির সীমিত ওভারের টুর্নামেন্টে, তেমনি ভারতের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএলেও যে চাপ সামলাতে পারেন না তা প্রমাণ হলো আবারও। সন্ধ্যার শিশির বোলারদের জন্য বোলিং করাটাকে কঠিন করে তোলে। সুতরাং প্রথমে ব্যাট করলে যতটা পারা যায় বড় স্কোরই করা দরকার যাতে বোলাররা সেটি রক্ষা করতে পারে। কিন্তু টস হেরে ব্যাঙ্গালোর ১৩১ রানের বেশি করতে পারেনি।
কোহলি ইনিংস উদ্বোধন করেন দেবদূত পাড়িক্কালের সঙ্গে। কিন্তু এই উদ্ভাবন কাজে লাগেনি। দ্বিতীয় ওভারেই ক্যারিবীয় টেস্ট অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের বলে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক। ৮ রান পর সংগ্রাম করতে থাকা পাড়িক্কালও হোল্ডারের শিকার। হাত খুলে খেলতে না পারা অ্যারন ফিঞ্চকে বিদায় করেন বাঁহাতি স্পিনার শাহবাজ নাদিম। পর পরই রানআউট কয়েকটি ম্যাচ পর দলে আসা ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলী। ১১তম ওভারে ৬২ রানে ৪ উইকেট হারানো ব্যাঙ্গালোর ততক্ষণে রান বাড়ানোর চাপে পড়ে গেছে। এ অবস্থায় একাই করেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান শেষ পর্যন্ত থাকতে নিশ্চিতই ইনিংসটা আরও বড় হতো, কিন্তু ১৭.৫ ওভারে তার বিদায় ব্যাঙ্গালোরের সম্ভাবনা শেষ করে দেয়। মিডিয়াম পেসার নটরাজনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৫ চারে ৫৬ করেছেন ডি ভিলিয়ার্স।
১৩১ রানের পুঁজি নিয়ে হায়দরাবাদের মতো দলকে আটকানো কঠিন। বিশেষ করে যে দলে ডেভিড ওয়ার্নার, কেন উইলিয়ামসন, মনীশ পান্ডেদের মতো ব্যাটসম্যান আছেন। ওয়ার্নার (১৭) ও পান্ডে বড় রান পাননি, কিন্তু কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন তার অভিজ্ঞতার পরশ বুলিয়ে খেলেছেন অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংস, তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন হোল্ডার। দুই বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে গেছে হায়দরাবাদ। ব্যাঙ্গালোরের আত্মতৃপ্তি এখানেই যে এত কম রান নিয়েও দুর্দান্ত লড়েছে তারা বোলিং-ফিল্ডিংয়ে।
শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য হায়দরাবাদের দরকার ছিল ২৮ রান। একটা কী হয় কী হয় উত্তেজনা তখনও ছিল। দ্বিতীয় শেষ ওভারে সিরাজ ৯ রান দিয়ে হায়দরাবাদকে শেষ ওভারের সামনে দাঁড় করান ৯ রানের প্রয়োজনীয়তায়। তরুণ নবদীপ সাইনির করা ওভারটির প্রথম বলে উইলিয়ামসন সিঙ্গেল নেন, পাঁচ বলে দরকার তখন ৮ রান। দ্বিতীয় বলটি ডট যায়। এখানেই ফারাক অভিজ্ঞতার। তরুণ সাইনি অফে বেশ জায়গা দিয়ে ফেলেন শট খেলার জন্য, পর পর দুই চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন হোল্ডার। বোলিংয়ে দুই উইকেট, ব্যাটিংয়েও ম্যাচ জেতানো জুটির অংশীদার। হোল্ডার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতেই পারতেন, কিন্তু বিচারকদের বিচারে ম্যাচের সেরা উইলিয়ামসন।
২০১৬ আইপিএলে ব্যাঙ্গালোরকে ফাইনালে হারিয়েই প্রথম শিরোপা জিতেছে হায়দরাবাদ। এবার তাদেরই এলিমিনেটরে হারিয়ে উঠে গেল দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। আগামীকাল সেখানে প্রতিপক্ষ দিল্লি ক্যাপিটালস। আবার কি ফাইনালে উঠতে চলেছে হায়দরাবাদ?
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ব্যাঙ্গালোর: ২০ ওভারে ১৩১/৭ ( ডি ভিলিয়ার্স ৫৬, ফিঞ্চ ৩২, সিরাজ ১০*, হোল্ডার ৩/২৫, নটরাজন ২/৩৩, নাদিম ১/৩০) ও হায়দরাবাদ: ১৯.৪ ওভারে ১৩২/৪ ( উইলিয়ামসন ৫০*, হোল্ডার ২৪*, পান্ডে ২৪, সিরাজ ২/২৮, জাম্পা ২/১২)।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: