সিডনী শুক্রবার, ৬ই ডিসেম্বর ২০২৪, ২২শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১


সিডনিতে ছুরিকাঘাতের মর্মান্তিক ঘটনা,তদন্তে উঠে এলো রক্তাক্ত ৩ মিনিটের কাহিনী


প্রকাশিত:
১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৬

আপডেট:
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:১৭

চলতি বছর ১৩ এপ্রিল, সিডনির একটি জনপ্রিয় শপিং সেন্টারে মাত্র তিন মিনিটে ঘটে যাওয়া ছুরিকাঘাতের মর্মান্তিক ঘটনায়,৬ জন নিহত এবং আরও ১০ জন আহত হয়। নিউ সাউথ ওয়েলসের কোর্টে ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার তদন্ত চলাকালে বলা হয়,৪০ বছর বয়সী জোয়েল কাওচি নামের এক মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি এই হামলার সাথে যুক্ত ছিলেন। খবর  বিবিসির। 

জানা যায় তিনি মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ ছেড়ে দিয়ে গৃহহীন অবস্থায় জীবনযাপন করছিলেন।কাওচিভমানসিক রোগ সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন।

এই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ায় যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়, তা জাতীয়ভাবে লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে সচেতনতার প্রসঙ্গ এনে দেয়। ঐদিন হামলায় নিহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনই নারী ছিলেন এবং হামলায় আহত ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনই ছিলেন নারী।এই ঘটনাকে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ কমিশনার ‘নারীদের প্রতি লক্ষ্য’ বলে চিহ্নিত করেন।

মঙ্গলবারের শুনানিতে, ডা. পেগি ডয়ার, যিনি কোর্টে অভিযোগপত্র দাখিল করেন, কাওচির মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ কিছু নিরাপত্তাজনিত গাফিলতির কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, কাওচি ২০১৯ সাল থেকে তার ওষুধ বন্ধ করে দেন এবং বেশ কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন,সেদিন সকালেই কাওচি দুপুর ৩টা ৩০ মিনিটে ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারে প্রবেশ করেন।সেখানে তিন মিনিট পর তিনি একটি বেকারির লাইনে দাঁড়িয়ে ছুরি বের করে আক্রমণ শুরু করেন।প্রথমে ২৫ বছর বয়সী ডন সিংলেটনকে আক্রমণ করেন, তারপর জেড ইয়াং (৪৭) এবং ইয়িক্সুয়ান চেং (২৫)-কে।

এরপর তিনি আশলি গুড (৩৮) নামে একজন নারীকে আক্রমণ করেন এবং তার ৯ মাস বয়সী শিশুকন্যাকেও ছুরিকাঘাত করেন।

আশলি গুড যখন তার শিশুটিকে রক্ষা করতে চেষ্টা করেন, তখন তিনি আরও আঘাতপ্রাপ্ত হন।নিরাপত্তারক্ষী ফারাজ তাহির ও তার সহকর্মীও আহত হন,তাহির পরে তার জীবন দিয়েছিলেন অন্যদের রক্ষা করতে গিয়ে।এর পর কাওচি ৫৫ বছর বয়সী পিকরিয়া ডারচিয়াকে মারাত্মকভাবে আহত করেন, এবং পরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। পুরো হামলার সময়কালে কোনো অ্যালার্ম বাজেনি এবং এটি কেন ঘটে নি তা নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য,এ ঘটনার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি,নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা পরিষেবার প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।

এ ঘটনার পরে অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয়ভাবে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে,যা ভুক্তভোগী পরিবার ও সমাজের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ।

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top