মেয়েকে চিরকাল ‘বাচ্চা’ রাখতে অনাহারে রাখে বাবা-মা
প্রকাশিত:
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪০
আপডেট:
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:০৯

এক অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি তাদের মেয়েকে শিশুসুলভ চেহারা বজায় রাখার জন্য জোরপূর্বক কঠোর ডায়েট অনুসরণ করার জন্য শিশু নির্যাতনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর ইউএস এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী একজন ব্যালেরিনা। নাচে দুর্দান্ত দেখে কঠোর ডায়েট অনুসরণ করানোর জন্য নির্যাতন করেন বাবা-মা। ফলে বয়সের সাথে বেমানান কঠোর ডায়েট মেনে চলার কারণে মেয়েটি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। চিরকাল বয়সে তরুণ দেখার নেশায় বাবা-মা তাদের বিবেক হারিয়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অস্ট্রেলিয়ার পার্থের একটি শহরে বসবাস করেন অভিযুক্ত ওই অস্ট্রেলিয়ান দম্পতি। বয়স অনুপাতে সন্তানকে পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে দম্পতির বিরুদ্ধে। তাদের কন্যা সন্তানের বয়স যখন ১৬ বছর বয়সে, তখন তার ওজন ছিল মাত্র ২৭ কেজি।
মেয়েটি এতটাই রোগা এবং ক্ষীণ হয়ে পড়েছে যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং একটি ফিডিং টিউবে রাখতে হয়েছিলো। এমনকি, মেয়েটির বাবা তার জন্ম সনদে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন, যাতে কাগজে-কলমে কম বয়সী দেখানো যায়।
১৬ বছর বয়সে বাবা-মা তাকে প্রি-স্কুল-বয়সী পোশাক পরিয়ে লোকজনের সামনে বয়সে ছোট মেয়ের মতো দেখানোর চেষ্টা করেন। দম্পতিকে তার মানসিক, সামাজিক এবং কার্যকরী বিকাশে ব্যর্থ হওয়ার জন্যও দোষী সাব্যস্ত করা হয়। কারণ মেয়েটি তার জীবনের বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই পড়াশোনা করেছিলো এবং তাকে সমাজের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখে অভিযুক্ত বাবা-মা।
কিশোরীর ব্যালে শিক্ষকরা যখন তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন, তখন তার অবস্থা প্রথম প্রকাশ্যে আসে। এরপর আদালতে মামলা করা হয়।
আদালতকে আরও জানানো হয়েছে যে কিশোরীর ওপর মানুষিক অত্যাচার করা হয়েছে। এমনকি, শারীরিকভাবে দুর্বল হবার কারণে টয়লেট ব্যবহার করার জন্য সেই কিশোরীর আরেকজনের সাহায্যের প্রয়োজন হতো।
বিচারক লিন্ডা ব্ল্যাক কিশোরীর বাবা-মাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড দেন। সেই সাথে, অভিযুক্ত বাবা-মাকে রায়ের সময় কঠোর ভাষায় তিরস্কার করেন বিচারক।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: