নিউজিল্যান্ডে দুই বাংলার প্রবাসীরা উৎযাপন করলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস : মু: মাহবুবুর রহমান
প্রকাশিত:
৬ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৯
আপডেট:
৬ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৯
যথাযোগ্য মর্যাদায় নিউজিল্যান্ডের পামারস্টোন নর্থ শহরে ২৫ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) উদযাপিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানমালা।
পামারস্টোন নর্থ শহরের বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রবাসীদের সংগঠন মানাওয়াতু বাঙালি সোসাইটি আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের শুরুতে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মু: মাহবুবুর রহমান ও তনিমা হোসেইন।
স্থানীয় একটি কমিনউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পামারস্টোন নর্থ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য টাঙ্গি ঊটিকেরি (Tangi Utikere), সিটি কাউন্সিলের সম্মানিত মেয়র গ্রান্ট স্মিথ (Grant Smith), এবং কাউন্সিলর লরনা জনসন (Lorna Johnson) ও ব্রেন্ট ব্যারেট (Brent Barrett) । আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষাভাষী প্রবাসীসহ স্থানীয়রা।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য টাঙ্গি ঊটিকেরি বলেন, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। আর এ দিনটি হলো সকল ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার দিন।
পামারস্টোন নর্থ সিটি কাউন্সিলের মেয়র গ্রান্ট স্মিথ বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এখন আর শুধু বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো দিন নয়, এটি পুরো বিশ্বের সব মানুষের মায়ের ভাষা রক্ষার দিন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় কলেজ স্ট্রীট নরমাল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা পরিবেশন করে মনোমুগ্ধকর “কাপা হাকা” (Kapa haka) যা মাওরি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতীক। নিউজিল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের আদিবাসী জনগোষ্ঠী মাওরিদের ভাষা হলো মাওরি ভাষা যা Te Reo Māori নামেও পরিচিত।
ভাষা আন্দোলন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস - এ বিষয়ে আলোচনা করেন মানাওয়াতু বাঙালি সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও মেসি ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এমেরিটাস শ্রীকান্ত চ্যাটার্জি।
এ বছরের অনুষ্ঠান শুরু হয় সমবেত কণ্ঠে “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী” গান এর মাধ্যমে। সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক রুবাবা রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় বিভিন্ন ভাষার পরিবেশনা।
আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ’র লেখা “মাগো ওরা বলে” আবৃত্তি করে শোনান আশরাফ বিশ্বাস। হিন্দি ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করেন তনুশ্রী বড়ুয়া। ইংরেজি ছড়া “হোল্ড মাই হ্যান্ড” আবৃত্তি করেন আরিশা জুহানা। সংস্কৃত ভাষায় আবৃত্তি করেন শ্রীকান্ত চ্যাটার্জি। কোরিয়ান ভাষায় একটি পরিবেশনা উপহার দেন ইশমাম বিশ্বাস ও আজমাইন ইফরিত। গিটারে নেপালি ভাষার ফিউশন গেয়ে শোনান রিদান্স ছেত্রি।
কবি আল মাহমুদের বিখ্যাত “একুশের কবিতা” আবৃত্তি করেন সামসুল আরেফিন। ছোট্ট মনি আরিবা জাইনা পরিবেশন করে “নোটন নোটন পায়রাগুলো” ছড়াটি।
অনুষ্ঠানে আরবি ভাষায় সূরা ইয়াসিনের প্রথম কয়েক আয়াত পরিবেশন করে রোকাইয়া মামরুর। বাংলা ছড়া “দোয়েল কোয়েল ময়না টিয়া” আবৃত্তি করে নুসাইবা কবির। “বছর ঘুরে আবার এলো” ছড়াটি পরিবেশন করে মারিয়াম তাব্বাসুম।
সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য দেন সোসাইটির সভাপতি ড. আখতারুজ্জামান।
সমবেত কণ্ঠে ‘মোদের গরব মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা’ গানের মাধ্যমে শেষ হয় ২০২৪ এর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আয়োজন। আর সবশেষে ছিল বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম আয়োজন খাবার পরিবেশনা।
মু: মাহবুবুর রহমান
নিউজিল্যান্ডের মেসি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক
বিষয়: মু: মাহবুবুর রহমান
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: