সিডনী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


জেনে নিন: কোন জিনিসে কতদিন বাঁচে করোনা ভাইরাস


প্রকাশিত:
২৫ মার্চ ২০২০ ০৫:৫৬

আপডেট:
২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৪১

ফাইল ছবি

প্রভাত ফেরী: করোনা ভাইসরাস নিয়ে আতঙ্কিত সারাবিশ্ব। যারা সচেতন এবং সংক্রমণ রুখতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলছেন, তারা ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিচ্ছেন। বাইরে বার হতে হলে মাস্ক পরে নিচ্ছেন। কিন্তু কোন জিনিসের তলে এই ভাইরাস কতদিন বাঁচে বা সেই পৃষ্ঠদেশের সংস্পর্শে কোনো আক্রান্ত রোগী এলে, কতদিন পর্যন্ত সেই পৃষ্ঠদেশ থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?

দেখা গিয়েছে করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি দিন বাঁচতে পারে পলিপ্রোপিলিনের উপর। পাঁচ দিন পর্যন্ত এর উপর বেঁচে থাকতে পারে করোনা ভাইরাস। পলিপ্রোপিলিন এক ধরনের প্লাস্টিক। এই ধরনের প্লাস্টিক দিয়েই বাচ্চাদের খেলনা থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের টিফিন বক্স তৈরি করা হয়।

দ্বিতীয় যে পৃষ্ঠদেশের উপর করোনা ভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে, তা হলো কাগজ। তবে প্রথমেই বলে রাখা দরকার, গবেষকরা জানিয়েছেন, খবরের কাগজ থেকে কোনোভাবেই এই ভাইরাস ছড়াতে পারে না। কারণ ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক কানাইচন্দ্র পাল বলছেন, ‘কাগজের মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়ানোর কোনো আশঙ্কাই নেই। কাগজ যা দিয়ে তৈরি, বিশেষ করে সংবাদপত্রের প্রক্রিয়াকরণের সময়ে যে সমস্ত রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, তার উপরে ড্রপলেটের বেঁচে থাকা অসম্ভব।’

তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, খবরের কাগজ ছাড়া অন্যান্য কাগজের উপর ৪-৫ দিন বেঁচে থাকতে পারে করোনা ভাইরাস।

তৃতীয় যে পৃষ্ঠদেশের উপর করোনাভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে, তা হলো কাচ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কাচ জাতীয় কোনো পৃষ্ঠদেশের উপর অন্তত চার দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে করোনাভাইরাস। ফলে কাচে হাত দিলে, নিয়ম-বিধি মেনে ভাল করে হাত পরিষ্কার করে নেওয়া প্রয়োজন। বাড়ির জানলার কাচগুলো প্রয়োজনে ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করা দরকার।

একই ভাবে কাচের মতো সমান সংক্রমণযোগ্য হল কাঠ। কাঠের বস্তুর উপর এই ভাইরাস চার দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। তাই গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কাঠের কোনো বস্তুতে হাত দিলে, তার পরই যেন কোনোভাবেই হাত মুখে বা নাকে না যায় এবং ভাল করে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলা জরুরি।

এর পর যে পৃষ্ঠদেশের উপর করোনাভাইরাস বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে, তা হলো স্টেইনলেস স্টিল। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্টেইনলেস স্টিলের উপর এই ভাইরাস ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে।

কোনো আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে যদি করোনাভাইরাসের জীবাণু ড্রপলেটের মাধ্যমে কোনো স্টিলের উপরে পড়ে, তাহলে ৪৮ ঘণ্টা পরও তা থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

সার্জিক্যাল গ্লাভস। প্রধানত চিকিৎসকেরা এই গ্লাভস ব্যবহার করে থাকেন। আর হাসপাতালে এখন সমস্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ভিড়। পাশাপাশি অন্যান্য রোগীরাও সেখানেই রয়েছেন। রয়েছেন তাদের বাড়ির লোকজনও। তাই সার্জিক্যাল গ্লাভস ব্যবহারে ভীষণভাবে সুরক্ষাবিধি মেনে চলা প্রয়োজন। কারণ সার্জিক্যাল গ্লাভসের উপর এই ভাইরাস অন্তত চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। সুরক্ষা-বিধি মেনে না চললে, সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনাও খুব বেশি।

যে কতগুলো ধাতব বস্তু নিয়ে গবেষণা চালানো হয়েছে। তার মধ্যে আর একটি হলো অ্যালুমিনিয়াম। গবেষকরা জানাচ্ছেন, অ্যালুমিনিয়ামের উপর এই ভাইরাস দু’ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

তবে ‘নেকেড’ ভাইরাস কোনো সারফেসেই বাঁচতে পারে না। এদের টিকে থাকার জন্য ড্রপলেটের প্রয়োজন হয়। অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় পদার্থের উপর যদি এই ড্রপলেট পড়ে, তবেই তা সংক্রমণযোগ্য।

এগুলো ছাড়া সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে তামার উপর এবং বাতাসে এই ভাইরাস কতদিন বাঁচতে পারে, তা প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, তামার উপর চার ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে এই করোনাভাইরাস এবং বাতাসে মাত্র তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top