সিডনী সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


মিয়ানমারে রোহিঙ্গা-বিদ্বেষী ঘৃণাত্মক প্রচার বন্ধে ব্যর্থ ফেসবুক


প্রকাশিত:
১৬ আগস্ট ২০১৮ ১২:০৬

আপডেট:
২০ মে ২০২৪ ২০:৫১

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা-বিদ্বেষী ঘৃণাত্মক প্রচার বন্ধে ব্যর্থ ফেসবুক

রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মুসলিমদের হত্যা করার আহ্বানসহ ঘৃণাত্মক নানারকম কথাবার্তার এক হাজারের বেশি পোস্ট গত সপ্তাহ  ধরে ফেসবুকে ঘোরাফেরা করেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের অনুসন্ধানে ওঠে এসেছে। সংস্থাটি বলছে, কিছু কিছু পোস্ট ছয় বছর ধরে অনলাইনে রয়েছে।



রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ ধরনের ঘৃণাত্মক পোস্ট ঠেকানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও, এখনও মিয়ানমারের এই মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেয়ার মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার হচ্ছে।



ফেসবুকে নিয়মনীতি মোতাবেক জাতিগত কোন গোষ্ঠীর ওপর ‘সহিংসতা কিংবা অমানবিক’ আক্রমণ নিষিদ্ধ।



যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক এ ধরনের আক্রমণাত্মক পোস্ট শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সাধারণত সাইট ব্যবহারকারীদের ওপর নির্ভর করে, এর সফটওয়্যার বার্মিজ ভাষা বুঝতে যথেষ্ট দক্ষ নয়।



এর আগে জাতিসংঘের তরফ থেকে সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক, সেইসাথে মার্কিন এবং ব্রিটিশ রাজনৈতিক নেতারাও সমালোচনা করেন।



২০১৭ সাল থেকে ৭০০,০০০ রোহিঙ্গা মুসলিম মিয়ানমার ছেড়েছে যাদের অনেকেই এখন বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পে রয়েছে।তারা জানিয়েছে, বার্মিজ সৈন্যরা এবং সন্ত্রাসীরা তাদের সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।



মিয়ানমারের সেনারা বলছে, তারা রোহিঙ্গা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং রাখাইন রাজ্যে বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ তারা অস্বীকার করেছে।



রয়টার্স বলছে, তাদের হাতে আসা অধিকাংশ রোহিঙ্গা-বিরোধী মন্তব্য, ছবি এবং ভিডিও বার্মিজ ভাষায় পোস্ট করা।



সেগুলোতে যা বলা হয়েছে:

• রোহিঙ্গাদের গুলি করার আহ্বান, আগুন লাগিয়ে দেয়া এবং শুকরকে খাওয়াতে বলা হয়,

• গণহত্যার দাবি, একজন লিখেছেন, ‘আমরা তাদের সাথে লড়াই করবো, ঠিক যেভাবে হিটলার ইহুদির দমন করেছেন।’

• তাদেরকে কুকুর, এবং ধর্ষণকারী হিসেবে তুলে ধরা।



এক বিবৃতিতে ফেসবুক স্বীকার করেছে যে, ঘৃণাত্মক মনোভাব ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে কারা দায়ী সেটি খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে ছিল। এতে বলা হয়, ‘আমরা ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে এবং ঘৃণা উসকে দেয়া ঠেকাতে সাধ্যমত কঠোর পরিশ্রম করছি।’



রয়টার্স বলছে মিয়ানমার সম্পর্কিত বেশিরভাগ তথ্য ফেসবুক আরেকটি ফার্ম অ্যাকেঞ্চার থেকে আউট-সোর্স করেছে, যেখানে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের রিপোর্ট হলে তা যাচাইয়ের জন্য ৬০ জন ব্যক্তির ওপর নির্ভর করা হয়।



মিয়ানমারে ৫০ মিলিয়ন মানুষের বাস, তাদের মধ্যে ১৮ মিলিয়ন নিয়মিতভাবে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে।গত মার্চে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ উসকে দেয়া পেছনে ফেসবুক ব্যবহারের ‘বড় ধরনের ভূমিকা ছিল’।



এরপর ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গকে জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় সামাজিক এই নেটওয়ার্কের সম্পৃক্ততার বিষয়ে মার্কিন সিনেটরদের কাছে জবাবদিহিতার মুখে পড়তে হয়।



সেসময় তিনি স্বীকার করেন যে তার প্রতিষ্ঠানের আরও বেশি কিছু করা প্রয়োজন ছিল এবং দেশটিতে যা ঘটেছে তাতে ‘ভয়াবহ ট্রাজেডি’ বলে বর্ণনা করেন।

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top