সিডনী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


করোনার প্রকোপ: কলকাতায় দীর্ঘ ৬ মাস পর চালু হলো মেট্রো রেল


প্রকাশিত:
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:১৭

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩৯

 

প্রভাত ফেরী: করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) ঝুঁকির মুখে ২১ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় কলকাতা শহরের মেট্রো রেল চলাচল। এ ধাক্কায় প্রায় ছয় মাস বন্ধ থাকল ট্রেন। অবশেষে সোমবার থেকে ফের চাকা ঘুরল কলকাতা মেট্রোর।

দীর্ঘদিন পর মেট্রোর কামরায় উঠে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন অনেক অফিস যাত্রী। তাঁদের অনেকের কাছেই করোনাভাইরাসে থমকে যাওয়া জীবনকে ছন্দে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকেত দিল মেট্রোর চাকার আওয়াজ। সোমবারের চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে রবিবারই সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষার (নিট) পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের সঙ্গী অভিভাবকদের নিয়ে ‘সেমিফাইনাল পর্ব’ মসৃণ ভাবেই উতরে দিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

১৭৭ দিন বন্ধ থাকার পর মেট্রো চালুর আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, স্টেশনে ঢোকার জন্য আগে থেকে যাত্রীদের নিতে হবে ই-পাস। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পরিষেবা চালু থাকবে। এই ১২ ঘণ্টাকে ভাগ করা হয়েছে ১ ঘণ্টার ১২টি স্লটে। সেই স্লট বুক করে আগে যাত্রীদের ই-পাস জোগাড় করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

রবিবার রাত ৮টায়, প্রথম মেট্রো পরিষেবার ঠিক ১২ ঘণ্টা আগে রাজ্য সরকারের পরিবহণ বিভাগের ‘পথদিশা’ অ্যাপে চালু করা হয় ই-পাস বুকিং। বোঝার সুবিধার জন্য ১২টি স্লটের ই-পাস করা হয়েছে আলাদা আলাদা রঙের। সেই পাস মোবাইলে নিয়ে সোমবার সকাল ৭টার আগে থেকেই দমদম মেট্রো স্টেশনে দেখা গেল অফিস যাত্রীদের লাইন।

অনেক দিন পর ফের গোটা স্টেশন চত্বরে ব্যস্ততা। যাত্রীরা পৌঁছনোর আগেই চলে এসেছিলেন মেট্রো কর্মী, স্থানীয় থানার পুলিশ এবং রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (আরপিএফ)-এর জওয়ানরা। মেট্রো কর্মকর্তারা তাঁদের প্রথমে একদফা বুঝিয়ে দেন, কীভাবে যাত্রীদের পরীক্ষা করতে হবে। কোন স্লটের জন্য কী রঙের পাস। এর পর একে একে যাত্রীদের ই-পাস পরীক্ষা শুরু হয়। সকালে দমদম থেকে সকাল ৮-৯টার স্লটের ই-পাসের রং যেমন ছিল উজ্জ্বল হলুদ। মোবাইলে সেই পাস দেখানোর পর পুলিশকর্মীরা যাত্রীদের দেহের তাপমাত্রা মেপে তবেই স্টেশন চত্বরে ঢুকতে দেন।

এরপর অবশ্য পুরনো নিয়মেই স্মার্ট গেটে স্মার্ট কার্ড ঠেকিয়ে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছনো। তবে তার আগে বাধ্যতামূলক দেওয়ালে লাগানো পেল্লায় জীবাণুনাশক তরলে (স্যানিটাইজার) নিজের হাত ধুয়ে নেওয়া। তবে তার আগে অনেককেই দেখা গেল নিজের স্মার্ট কার্ড এখনও সচল আছে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী হতে।

যাত্রীদের নানা অসুবিধা, অনুযোগের মধ্যেই কাঁটায় কাঁটায় সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে প্ল্যাটফর্মে হাজির হল কলকাতার ‘লাইফ লাইন’ মেট্রো। মূল রুটের পাশাপাশি এ দিন চালু হয়েছে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবাও। তবে সেখানে ভিড় এমনিতেই কম। তাই সেখানে ই-পাসের বালাই নেই। দমদম থেকে ৪ মিনিট পর সকাল ৮টায় চাকা গড়াল প্রথম মেট্রোর।

কামরায় উঠেই নাকে এল স্যানিটাইজারের ঝাঁঝালো গন্ধ। বোঝা যাচ্ছিল আগেই সমস্ত কামরা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ববিধি মাথায় রেখে একজন অন্তর একজনের বসার ব্যবস্থা। সাতজনের সিটে বসতে পারবেন চারজন। সিটের মাঝে মাঝে ‘ক্রস’ চিহ্ন দিয়ে নির্দিষ্ট করা হয়েছে কোথায় যাত্রী বসা নিষেধ।

মেট্রোর অনেক কর্মকর্তাই উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বড় স্টেশনে। তাঁদের মধ্যে একজন বললেন, ‘‘রবিবার রাতে প্রায় ৬ হাজার ই-পাস ইস্যু করা হয়েছে।’’ তাঁদের দাবি, অনেকদিন পর মেট্রো চালু হল। ফলে সকলে নয়া ব্যবস্থায় সড়গড় হননি। তাই প্রথমদিন ভিড় কম। ক’দিন গেলেই যাত্রী বাড়বে। তবে আপাতত অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে যে এই ব্যবস্থাই চালু থাকবে, সেটিও তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন। ভিড় বাড়লে এই ব্যবস্থা কি এ দিনের মতো মসৃণ ভাবে চালানো সম্ভব হবে? সংশয় আছে। তবে এক মেট্রো কর্তা বললেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। সূত্র : আনন্দবাজার।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top