সিডনী শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১

মধুগৃহ : প্রণব মজুমদার


প্রকাশিত:
১ অক্টোবর ২০২০ ২২:২০

আপডেট:
১ অক্টোবর ২০২০ ২২:৩৮

প্রণব মজুমদার

 

কিছুই ভাল লাগে না! ঘুমাতে ভাল লাগে না। খেতে না। না হেঁটে। ভাল লাগে না পড়াশোনাও! তাহলে ভাল লাগেটা কী? শুধু রানুদিকেই ভাল লাগে! তার সব কথা ভাল লাগে। সেটা হোক মন্দ বা তিতা। তার আদর ভাল লাগে। চুমু ভাল লাগে। ভাল লাগে রানুদিকে জড়িয়ে ধরে সারাক্ষণ শুইয়ে থাকতে। কী জাগরণে কী ঘুমে। ভাল লাগে রানুদির উদোম তুলতুলে বুকের নিবিড় ছোঁয়া! শরীরের মাঝখানে থাকা রানুদির আরাম দেয়া অঙ্গটার আনন্দও ভাল লাগে! আহা কী যে আরাম! রানুদির মোলায়েম হাতের নিংড়ানো!
কেমন যেন হয়ে যাই আমি! যেন রানুদিই আমার সব। কিশোর বয়সে শরীরে জাগানো উষ্ণতার পরশ সব এলেমেলো করে দিচ্ছে। যেদিন রানুদি আমার প্যান্টের ওপর ঠিক দুই উরুর সন্ধিস্থলে অবাধ্য মাংসল লজ্জাটাকে হাত দিয়ে স্পর্শ করলো সেদিন থেকে কেন জানি তাকে আপন মনে হয়! তার সব আমার ভাল লাগতে শুরু করে। রানুদি আমাদের মতো দত্ত বাড়ীর ভাড়াটিয়া। বিশাল বাড়ী। দুই ভাড়াটিয়া। আমরা এবং রানুদিরা। দত্ত বাড়ীর সব ঘর টিনের।
কাঠ কারিগর দেব করের স্ত্রী রানু মানে রাজেশ্বরী  । গৌরবর্ণের দেহসৌষ্ঠব। চেহারা ভারি সুন্দর। চতুদর্শী রূপশ্রী রাজেশ্বরীর সঙ্গে অল্প বয়সে ৩৬ বছরের সুদর্শন পুরুষ দেবের বিয়ে হয়ে যায়। অল্প বয়সে বয়স্ক লোকের সঙ্গে রাজেশ্বরীর   বিবাহকে অনেকেই বলে দুর্ঘটনা। আসলেই তাই। শিক্ষক পিতার একমাত্র রূপসী কন্যা ন’ বছর বয়স থেকেই ইচঁড়ে পাকা! কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ে দত্ত হোস্টেলের পাশে রানুদির বাপের বাড়ী। সেখানকার এমন কোন উঠতি ছোঁকড়া নেই যে রূপবতী রানুর দৃষ্টির সীমানায় বাহিরে ছিলো। কিশোর যুবক প্রৌঢ় পুরুষের লোলুপ চাউনি ঋতুমতী রানুর বাড়ন্ত শরীর ও টসটসে লাল পুরু ঠোঁট ও মায়াবী চোখের দিকেই থাকতো। বাড়ীর মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো সে। পথে তাকিয়ে দেখতো সে কে আসে কে যায়। যৌবনারম্ভের সিঁড়িতে পা রাখা উচ্ছল রানুকে নিয়ে মা বাবা ও ভাইদের দুঃচিন্তার অন্ত ছিলো না। উঠতি বয়সের সুন্দরী মেয়ের অনাকাঙিক্ষত নানা ঘটনা ও কাহিনীর কারণে অল্প বয়সেই রাজেশ্বরীকে বিদায় দিলেন বাবা অধীর দত্ত! ঈশ্বর পাঠশালার গণিত শিক্ষক পিতার একমাত্র নাবালিকা মেয়ের ঠাঁই হয় চাঁদপুর শহরের অদূরে কর বাড়ীতে। ব্যথিত বাবাও এ বিয়েতে অপরিতৃপ্ত। পাটিগণিত অংক শিক্ষাদানের মাধ্যমে ছাত্রদের শিক্ষার সমীকরণ মিলান তিনি। অথচ নিজ কন্যাকে শিক্ষার আলো যেমন দিতে পারেননি তেমনি মেলাতে পারেননি জীবনের অংক। রানুদির রূপই কাল হয়ে দাঁড়ায়। গ্রামে শ্বশুর বাড়ীতে ওনার এ বাড়ী ও বাড়ী এবং বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়ানো পছন্দ করতো না কেউ! কাউকে তোয়াক্কা করতো না রানু। স্বামী বাড়ীতে সব সময় থাকে না। শহরের বাসষ্ট্যান্ডে কাঠের নানা আসবাবপত্র এবং ছবি বাঁধাইয়ের দোকান। থাকেন চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া রোড়ের অশিণী মোক্তারের মেসে। মাসে দু’ তিন বার বাড়ী আসেন স্বামী। এসেই শোনেন রানুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ।
বিয়ের চার বছর পর বাধ্য হয়ে দেব শহরে বাসা নেন! দত্ত বাড়ীর দোচালা এই টিনের ঘরের ভাড়া বাসায়ও কতো অম্ল মধুর ঘটনা। দিনে রাতে রানুদি ভালবাসার মঞ্চ সাজান এখানে। যেন মধুমালঞ্চ। মধুমক্ষিকার আনাগোনায় রাত পর্যন্ত মুখর রানুদির ঘর। আসেন শহরের প্রভাবশালী, মাস্তান এবং বখাটেরাও। মধু আহরণ করতে নিয়মিত আসে দিলু, শিব, মশির, মদন ও রফিক। রানুদির রূপে পাগল সবাই। রাজেশ^রীর ধারাবাহিক লীলাখেলার জন্য এ ঘরকে অনেকেই মধুগৃহ বলে। তবে আমি বলি না। রানুদির কোন খারাপ দিক আমার চোখে পড়ে না। বরং রাজেশ^রী দত্তের সম্পর্কে কেউ আজে বাজে কথা বললে তেড়ে যাই। রানুদি আমার আনন্দের উপাদান। যে উপাদান আমাকে মোহাবিষ্ট করে রাখে সারাক্ষণ। কেমন যেন হয়ে যাই আমি। কল্পনায় রানুদিকে মমতার আদরে জড়িয়ে ধরি। তাকে ছাড়া দিন কাটে না। রাত কাটে না। দিনের শুরুতে প্রতীক্ষায় থাকি কখন তার সুশ্রী মুখটার দর্শন পাবো। বাড়ীর ভেতরে পাকা পুকুর ঘাটে যাবার সময় পাশে থাকা রানুদিকে দেখি। উনি এটা ওটা খেতে দেন। জড়িয়ে ধরতে চান আদরে। আমার শরীরে শিহরণ জাগান। দেহে কেমন যেন আবেশ খেলে যায়। বারবার জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে। নিজেকে স্থির রাখতে পারি না।
রানুদির বয়স কুড়ি। মোহনীয় রূপ, কখনও হবেন না যেন বুড়ি। আমি তার ৯ বছরের ছোট। তবে রানুদি আমাকে অত ছোট মনেই করেন না। যেদিন সকালে আমাদের ঘরে প্রথম এলেন, তখন আমি অংক করছিলাম। মাকে বললেন ‘এ বুঝি আপনার ছোট ছেলে?’ এগিয়ে এসে রানুুদি পিঠে হাত রেখে বললেন, ‘কোন ক্লাশে পড় ?’ নরম তুলতুলে হাতের মোলায়েম স্পর্শে একটা অদ্ভূত পুলক আমার শরীরে ঝাপটা দিয়ে গেলো। ফিরে তাকালাম। নেশাগ্রস্থ লোকের মতো নিবিড় চাউনিতে আমার উত্তর- ‘ক্লাশ সেভেন।’ রানুদি মেরুন রঙের তার টসটসে ঠোঁটের ওপর নিচ কামড়াচ্ছেন। অপলক দৃষ্টিতে আমার দিকে চোখ রেখে বললেন, ‘পড়ালেখা করলে আমি তোমার থিক্কা মাত্র তিন ক্লাশ ওপরে থাকতাম নে।’ লক্ষ্য করলাম তার গায়ের রং বেশ ফর্সা। মনে হলো তার সুন্দর দেহের প্রভা বিচ্ছুরিত হচ্ছে ঘরে। কুচকুচে কালো কোঁকড়ানো চুল। ছেঁটে দেয়া মিহি ঘাসের মতো প্রশস্ত ঢেউ খেলানো ভ্রু। কোন চিত্রশিল্পীর আঁকা একজন নারীর চিত্রাংকন দৃশ্য আমি দেখছি যেন। মানুষ এমন সুন্দর হতে পারে! যাবার সময় বললেন, ‘বেড়াতে এসো মিলন।’ যে ঘরটায় রানুদিরা থাকেন তা বাড়ীর পিছনে। ভারি নির্জন। ঘরের পিছনেই নানা ফল গাছের ঘন বাগান। ওনাদের রান্নাঘরের পাশেই বাড়ীর মহিলা ও নাবালক ছেলেমেয়েদের জন্য পুকুর ঘাট। আমরাও তা ব্যবহার করি। একদিন সকালে মুখ ধুয়ে ঘাট থেকে ফিরছি। দেখা হতেই রানুদি ডাকলেন। শাড়ীর আঁচল টেনে তাতে হাত মুছতে মুছতে বললেন, ‘যাও ঘরে গিয়া বও।’ ইতস্তত করছি খালি নীরব ঘরে কি করে প্রবেশ করি।
-‘আরে ভয় কীসের?’ ডান হাত কোমরে রেখে বা হাতে আমার ডান হাত ধরে রানুদি নিয়ে গেলেন তার ঘরে। হালকা কাপড়ে জড়ানো শায়াটা তার অনেক নিচে নামানো। দৃষ্টি যাচ্ছে ওদিকে! বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম রানুদির নাভীটা অনেক গভীর ও প্রশস্ত। মনে হলো এ যেন শরীরের আরেকটি মুখ গহবর! কথা বলার সঙ্গে বারবার ওনার হাত ওদিকেই যাচ্ছে। বুকের কাপড় মাঝে মাঝে অনাবৃত করছেন প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে। চৌকিতে আমার আসন। পাশে বসলেন। মাথায় হাত বুলালেন। তারপর আমার গাল চেপে ধরে একটা রসগোল্লার অর্ধেক অংশ মুখে দিলেন ভরে। কেউ দেখে ফেলতে পারে এই ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। রানুদি উল্লেখ করলেন এ সময় ঘরে তার কেউ থাকে না। ‘অভয়ে থাকো মিলন।’  রান্নাঘরের সামনে এসে দাঁড়াই।
- আমারে আপনি আপনি কইরা বইল্লনা! তুমি কইরা বলবা। আর রানুদি  ডাকবা। কোন লজ্জা কইরো না। বুজ্জনি! সব ঠিক কইরা দিমু।
জলের তৃষ্ণা বাড়ে আমার? রানুদিকে ঘিরে উদ্দীপ্ত হচ্ছি প্রতিদিন। চারদিন পর মা একটা ছবি দেয়ায় জন্য তার কাছে পাঠান আমায়। যেতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না। কি না কি করে বসেন রানুদি! কিন্তু মায়ের আদেশ উপেক্ষা করি কিভাবে? ওনার ঘরের কাছে যেতেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি! মুহূর্তেই মাথা ভিজে গেলো আমার। আমাকে দেখে রানুদির চিৎকার!
- তাড়াতাড়ি ভিতরে ঢুকো! ভিতরে ঢুকো! রোদে শুকাতে দেয়া শাড়ী ও গামছা টেনে নিয়ে তিনি ঘরে ঢুকেন। কাঠের দরজার খিল লাগিয়ে দিতে দিতে বলেন ‘ঘরে জল ঢুকবোত!’ কান গরম হয়ে এলো আমার। বুক ধড়ফড় করছে। নেটের জানালার আবছা আলোয় চৌকিতে বসে ভাবছি কখন বৃষ্টি থামবে। দিবো দৌড়। কিন্তু বৃষ্টি বাড়ছে তো বাড়ছেই। আমার উদ্বেগ কমে না। রানুদির শরীরও ভেজা। সামান্য দুরত্বে থেকে আমার সামনেই তিনি বুকের অন্তর্বাস খুলে ফেললেন। আমারতো চক্ষু চড়কগাছ! পাল্টালেন শাড়ী। লজ্জায় প্রার্থনার ভঙ্গিতে দু’ হাত মুখের সামনে এনে আঙ্গুলের মাঝখান খানিকটা ফাঁকা রেখে আমি মুখ ঢাকি। সেই সরু ফাঁকা আঙ্গুল পথে রানুুদির দেহাবরণ পরখ করি। কী অপূর্ব তার রূপ! রানুদি আমার মুখ লুকানো আচরণে অবাক হয়ে যান। কুটকুট করে হাসেন। শ্রাবণ বর্ষার জলধারা বাড়ছে। টিনের চালে বড় বড় ফোটায় বৃষ্টির প্রচণ্ড শব্দ হচ্ছে। চালের ওপরে গাছঘেরা শাখাগুলো আছড়ে পড়ছে। প্রকৃতির মহাতা-ব! ব্লাউজ ও শায়াহীন কমলা রঙের শাড়ী পরিহিতা রানুদি জানালার কপাটটা লাগিয়ে দিলেন। ভেতরটা ঝড়ে তছনছ করছে আমার। শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত উঠানামা করছে। আমি জানালার একটা অংশ খুলে দিয়ে বললাম ‘রানুদি আমি যাইগো, মা চিন্তা করবো। দাদা রাতে এলে পরে ছবিটা দিয়েন।’ রানুুদির ধমকের স্বরে উত্তর
- মুষলধারে বিষ্টি অইতাছে। এ অবস্থায় কই যাইবা? বিষ্টি থামুক আগে। তারপর।
বসে আছি চৌকির এক কোনায়। গা ঘেষে পাশে বসলেন তিনি।
- হায় হায়! সব ভিজা তমার। জ¦র আইবো ত! সব খুইল্লা লাও। লজ্জা কিয়ের ? তুমিতো অনেক ছোড। রানুদি আমার ইংলিশ প্যান্টের মাঝখানে হাত স্পর্শ করলেন। লাফ দিয়ে উঠলাম!
- আরে আরে কই যাও? এদিকে আইও না। প্যান্টের সামনের বোতাম নেই আমার। তাই ঘরের এক কোনে গিয়ে প্যান্টের মাঝখানে দু’ হাত দিয়ে ঢেকে জড়সড় হয়ে দাঁড়াই। রানুদি এগিয়ে আসে আমার কাছে। শাড়ীর আঁচল দিয়ে আমার মাথা মুছে দেন।
-খুইল্লা লাও প্যান্টটা। জ্বর আইবো ত! আইও খুইল্লা দেই? রানুদির কথা শুনে আমার শরীর শিরশির করে ওঠে। যখনই আমার প্যান্টে হাত দিয়ে আসে তখনই আমি সরে যাই। এভাবে নিজেকে রক্ষার চেষ্টায় আমি অনেকক্ষণ। আমাদের ঝড় থামছে না। আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ি। আমাকে ঝাপটে ধরতে গিয়ে রানুদির প্যাঁচানো শাড়ী আবৃত বুক খুলে যায়। অনেকটা ধস্তাধস্তি! নিজেকে আতœ সমার্পন করি তার কাছে। তুলার মতো নরম আঙ্গুলের পাতাগুলো। সেই হাতের স্পর্শে রানুদি এক ঝটকায় আমার ভেজা প্যান্ট খুলে ফেলেন। আমার শরীরের কেন্দ্রস্থলের জিনিষটা শক্ত হতে থাকে। ওটাকে রানুদি হাত দিয়ে ব্যায়াম করায়। আমি সরে যাই। আবার ধরতে আসে। নিজের লজ্জা ঢাকার জন্য শুকনো কাপড় খুঁজতে থাকি। কিন্তু রানুদির শক্তির কাছে পরাজিত হই। আবারও রানুদি আমার লজ্জাস্থান ছোঁয়। এবার আমি সরে যাই না। বেশ আরাম বোধ করি। রানুদির কোমল আঙ্গুলের ওঠানামায় দেহে কী যে আনন্দ অনুভুতি আমার! নিচে মাটিতে শোয়া রানুদি ঘোঙাতে থাকে ! অস্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করে - ‘মিলনের কেন বয়স কম হয় ? মিলন কেন সংযোগ নাই?’
বৃষ্টি থামছে না। ভাল লাগছে না আমার। কেমন জানি করছে শরীরটা। রানুদির কাছ থেকে সরে গিয়ে ভেজা প্যান্টটা পড়ে নেই তাড়াহুড়ো করে। তারপর দরজা খুলে দৌড়। ঘরে ফিরে ভেজা প্যান্ট পাল্টাই। শুকনো প্যান্ট পরতে গিয়ে টের পাই শরীরের মধ্যস্থলের যে জিনিসটা আমায় আরাম দিয়েছিলো তার মুখের চারপাশটা ভেজা। পাতলা লালা! রানুদির ঘর থেকে ফিরে শরীর কাঁপছিলো আমার। জলের তেষ্ঠায় বুক শুকিয়ে যায়। পরের দিন সকালে ধুমছে জ¦র নেমে এলো আমার। খবরটা পেয়ে ছুটে এলো রানুদি। বাবা পুরোহিত ব্যক্তি। পুজা অর্চনা করেন। গণনা করেন। ঠিকুজি-কুষ্ঠি লিখেন। পিতার কাছে পূর্ণিমা-অমাবস্যার দিনক্ষণ জানতে এসেছেন। আমি জানি রানুদির এটা নিছক অজুহাত। দেখতে এসেছেন আমাকেই। মার কাছে রানুদির জিজ্ঞাসা- মিলনের জ¦র কিভাবে এলো মাসিমা? মার উত্তর - ‘আর বলো না রানু, তোমার কাছে যেতে চায়নি। জোর করে ছবি দিয়ে পাঠালাম। তা দিয়ে কোথায় গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে এলো ছেলেটা! এসেই বলে- শরীর কাঁপছে।’ মার উত্তর শুনে রানুদি আমার শিয়রের কাছে এসে ঠোঁট ভাঙ্গে।
দুই সপ্তাহ পর রানুদি দেখা হতেই ঘরে যেতে বলে। কিন্তু আমার মন কেন জানি টানে না। পরের দিন দুপুরে গিয়ে দেখি ওনার ঘরের দরজা বন্ধ। সেদিন সকালেও ভারী বর্ষণ হয়েছিলো। সিক্ত আবহাওয়া। রানুদির ঘরে টোকা দিতেই দরজা খুলে যায়।
- কেডা রে ?
- আমি মিলন
- বইও টুলডাত।
- কাঁথার নিচে কেগো?
- আরে ভাসুর পুত দিলু।
বললাম জল দাও।
- আরে আমারয় ত শরীরে কাপড় নাই। দিলুরঅ না! তুমি লইয়া খাও পিতলের ঘটিত থিক্কা।
- আমি কী চইল্লা যামু?
- তোমারে দিয়াতো আসল কাম হয় না? দিলুর মতো অইতে পারো না? তয় তিন চার বছর গেলে তোমারে দিয়া ওর থিক্কাঅ বালা কাম অইবো।
আমি আসার পর রমেশ দত্ত ও তার স্ত্রী শান্তি রাণী রানুদির বদ্ধ ঘরে কড়া নাড়েন। দিলু রাজেশ^রীর যুগল শয্যা পুরো দত্ত বাড়ী জানাজানি হয়ে গেলো! শান্তি রাণী চেঁচিয়ে ওঠেন - ছিঃ ছিঃ ছিঃ ! অনাচার। ব্যাভিচার। দত্ত বাড়ীর ইজ্জত মাডিতে মিশাইয়া দিলো দেবের বউডা!
বাড়ীওয়ালা রমেশ দেব করকে ডেকে ঘর ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ক’দিন পর রানুদিকে নিয়েই দেব দত্ত বাড়ী ছেড়ে চলে যান। গণি স্কুলের সামনে নতুন ভাড়া বাসায় রানুদির নতুন মধুগৃহ। এখানেও মৌমাছির আসা যাওয়া কমে না।
দত্ত বাড়ী ছেড়ে যাওয়ার চানুদির প্রতি মায়া আরও বেড়ে গেলো আমার। ঘরে রানুদির প্রসঙ্গ হলেই বাবা ক্ষেপে যান। বলেন - ভ্রষ্টা! পাপীষ্ঠ! কিন্তু মা ওই ঘটনার পরও ভালবাসেন রাজেশ^রীকে। বাবাকে বুঝান - ‘শাস্ত্রের দোহাই দিয়া তোমরা কও পাপকে ঘৃণা কর, পাপী না। তাইলে রানুকে ঘেন্না করা ত শাস্ত্র বিরুদ্ধ?’ রানুদির ব্যাপারে মার এমন যুক্তি আমার পছন্দ হয়।
যে যতই বলুক আমার কাছে রানুদি স্বপ্নময়ী মায়াবতী মেয়ে। যার সবই মেনে  নেয়া যায়। তাকে ছাড়া আমার কিছু ভাল লাগে না। শুধু রানুদির কথা মনে হয়। মন জানি কেমন করে তার জন্য। রাতে রানুদিকে নিয়ে ভাবি। কান্নাও করি। আমার শরীরের ওর ভাললাগার স্পর্শকাতর স্থানে হাত বুলিয়ে ওকে খুঁজে বেড়াই।

প্রণব মজুমদার
গল্পকার, প্রাবন্ধিক, কলাম লেখক, কবি ও সাংবাদিক

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top