সিডনী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

কিশোর গল্প

বঙ্গবন্ধু কত বড় : ফারুক নওয়াজ


প্রকাশিত:
৩১ মার্চ ২০২১ ২০:১০

আপডেট:
৩১ মার্চ ২০২১ ২০:২৭

 

রিভু। ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেলে ক্লাস ফোরে পড়ে। ছবি আঁকে। আবৃত্তি করে। আর বইপোকা খুব। অনেক বই তার। জন্মদিনে উপহার পাওয়া বইগুলো তো আছেই, বাবাও তাকে  বই কিনে দেন। সে বাবার সঙ্গে একুশের বইমেলায় যায়। সেখান থেকে বেছে বেছে বই কেনে।

তিনশ এগারোটা বই তার সংগ্রহে আছে। বিজ্ঞান-কল্পকাহিনি আর মুক্তিযুদ্ধের গল্প তার বেশি পছন্দের। তো, তার প্রিয় একটি বই শেমুর। বিজ্ঞান-কল্পকাহিনিও বলা যায়, আবার অ্যাডভেঞ্চারও বলা যায় এ-বইয়ের গল্পটাকে। এমনিই কাইজার চৌধুরী তার প্রিয় লেখক। হাসির গল্প লেখেন। তার সে-সব গল্পের মানুষগুলো চোর-ডাকাত। আর অদ্ভুত ভূতগুলো তো থাকেই তার গল্পের ভেতরে ঘাপটি মেরে। অবশ্য, তার চোর-ডাকাতরা সাহসী, তবে বোকা। ওরা সহজেই ধরা পড়ে যায়। মজার সব চরিত্র। ভূতগুলোও তেমন। যেমন বোকা, তেমন ভালো। 

হ্যাঁ, ‘শেমুর’ বইটা কতবার যে পড়েছে তা সে-ই জানে না। এই কাহিনির নায়ক শেমুর এক অসাধারণ শক্তিধর মানুষ। সাহস, সততা, দেশপ্রেমে তার জুড়ি মেলা ভার। শেমুর মানুষের বন্ধু, আর অত্যাচারীদের যম। অপার রহস্যে ভরা এর কাহিনি। যারা বোঝার তারা বুঝে যায় এই ‘শেমুর’ আসলে কে? রিভু মেধাবি, তাই সে বুঝে যায় শেমুর আর কেউ না, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। স্বাধীনতার মহানায়ক। বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

যখন সে ক্লাস থ্রিতে পড়ত, তখন ইশকুলের রচনা লেখা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়।  সেখানে পুরস্কার হিসেবে পায় এ-বইটি। এ-বইটি পড়েই  রিভু বঙ্গবন্ধুকে গভীরভাবে ভালোবেসে ফেলে।

 এরপর থেকে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বই সংগ্রহে সে মনোযোগী হয়। এ-ধরনের ২২২টা বই তার বুকসেল্ফে আছে। ৯ বছরের রিভর ছোট্ট অনেক স্বপ্নের আঁকিবুকি। তার স্বপ্নগুলো আকাশ ছুঁতে চায়। তাই মন দিয়ে সে পড়াশোনা করে। তার মনে এত স্বপ্ন কে জাগিয়ে দিয়েছে, জানো? তিনি আমাদের বঙ্গবন্ধু।

তার একটা লাল নোটবুক আছে। সেখানে শুধু বঙ্গবন্ধুর বাণীগুলো টুকে রেখেছে। নোটবুকের প্রথম পাতায় লাল কালিতে লিখে রেখেছে-- বঙ্গবন্ধুর বাণীগুচ্ছ। জাতির পিতা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ছোট ছোট অমূল্য কথা বলেছিলেন। এসব বাণী রিভুর অনুপ্রেরণার উৎস।

ঐতিহাসিক সাতোই মার্চের মহাভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ রিভুর মধ্যে অপার সাহস ভর করে তাঁর এই কথাটি মনে পড়লে।

যখন বাংলাদেশের টাইগাররা অন্য দেশের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে, তখন সাকিব, মুশফিকরা  দু-একটা বাউন্ডারি হাঁকালেই রিভু লাফিয়ে উঠে বলে, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আর পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা থাকলে তো  কথাই নেই। সে বলতেই থাকে, তোমরা কী ভেবেছো? তোমরা জানো না.. আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে না।

বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘গরিবের উপর অত্যাচার করলে আল্লাহর কাছে তার জবাব দিতে হবে।’ এ-কথাটি তার মনে গভীরভাবে দাগ কেটেছে। সে তার ক্লাসের গরিব বন্ধুদের  খুব ভালোবাসে। তাদেরকে কলম, ইরেজার উপহার দেয়। টিফিন ভাগাভাগী করে খায়। এ-জন্য রিভুকে ওরাও খুব ভালোবাসে।

রিভু জানে, বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘মানুষকে ভালোবাসলে মানুষও ভালোবাসে।’

 

আর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠজনরা যা বলেছেন, সেগুলোও তার নোটবুকে টুকে রেখেছে। সে অবসরে নোটবুকটা খুলে সেই কথাগুলো পড়ে। তো সেদিন ছিল, ১৫ই আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। খুবভোরে দূর থেকে ভেসে আসে-- ‘যদি রাত পোহালেই শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই..’ মমতা আর বেদনার সুরে গাওয়া গানের কথা ভেসে আসতেই রিভুর ঘুম ভেঙে যায়।

ডরভু ছুটে যায় আম্মুর কাছে। আম্মু কিচেনে নাস্তার আয়োজনে ব্যস্ত। রিভু গিয়ে বলল, আম্মু, শুনছ? বঙ্গবন্ধুর কথা বলছে গানে। মা মাথা নেড়ে বললেন, হুম।

আচ্ছা আম্মুৃ, যদি সত্যিই বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকেন, তাহলে?

আম্মু হাসেন,। বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন।

তাই! তো আজ পনেরো আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস আমরা পালন করি। এদিনই তো বঙ্গবন্ধু শহীদ হয়েছেন। আমাদের বইয়েও তো তাই লেখা আছে।

আম্মু রিভুর দিকে চেয়ে, ওর মাথায় হাত রেখে বলেন, মহান মানুষের মৃত্যু হয় না। তাঁরা বেঁচে থাকে মানুষের হৃদয়ে। এই-যে তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করলে, ‘যদি সত্যিই বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকেন, তাহলে!’ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এটা তুমি ভাবলে, এতেই বোঝা যায় বঙ্গবন্ধু তোমার মনের মধ্যে আছেন।

ঠিক বলেছ আম্মু। আমার না সব সময় মনে হয় বঙ্গবন্ধু আছেন। কথাটা বলেই রিভু তার পড়ার ঘরে যায়। গিয়ে ড্রয়ার থেকে লাল নোটবুকটা বের করে চোখ বুলোতে থাকে।

তার চোখ যায় বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে করা এক মন্তব্যে।-- ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি।’ কথাটা বলেছেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো।

 নোটবইটা নিয়েই সে আম্মুর কাছে ছুুটে যায়। সে বেশ অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করে, আচ্ছা আম্মু, হিমালয় তো পাহাড়, তাই না?

একটা পাহাড় না, অনেক, মানে অনেক পর্বত নিয়ে হিমালয় পর্বতমালা। এই পর্বতমালার সবচেয়ে উচুঁ পর্বত শৃঙ্গটির নাম মাউন্ট এভারেস্ট। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু এর চূড়া। কত উঁচু আম্মু?

সে অনেক, অনেক..। শুনেছি ২৯ হাজার ২৯ ফুট। তা-হলে বোঝো কত উঁচু তার শৃঙ্গ। তা এ-প্রশ্নটা তোমার মাথায় এলো কী করে এই সাতসকালে?

রিভু নোটবুকে টুকে রাখা কথাটা আম্মুকে দেখায়।

আম্মু, ওটায় চোখ বুলিয়ে বললেন, হ্যাঁ, উনি ঠিকই বলেছেন। ফিদেল ক্যাস্ত্রো। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এক বিপ্লবী রাষ্ট্রনায়ক। উনি হচ্ছেন, কিউবার প্রেসিডেন্ট।

তা, আম্মু বঙ্গবন্ধু তো মানুষ, আর পাহাড় তো পাহাড়। পাহাড় অনেক বড়, অনেক উঁচু..! বঙ্গবন্ধু কী ওতো উঁচু, ওতো বড় ছিলেন? উনি তাহলে কেন বললেন, আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি?

 

আম্মু হাসেন। হেসে বলেন, উনি ঠিকই বলেছেন, হিমালয়ের চেয়েও বড় বঙ্গবন্ধু। আকাশের মতো তাঁর হৃদয়, আর হিমালয়ের চেয়েও দৃঢ় তাঁর মনোবল, সাহস, দেশপ্রেম।

মায়ের কথা আরো ভাবিয়ে তুলল রিভুকে। ঠিক কথাটা সে বুঝে উঠতে পারল না। একটা ঘোরের মধ্যে দেুলতে থাকে তার মনের পেন্ডুলামটা। বার বার একই কথা ভাবতে থাকে- ‘হিমালয়ের চেয়েও বড়! উঁচু..! মা কী আর ভুল কথা বলবে? কিন্তু মানুষ কী অতো বড় হয়?,

 

তার খুব সাধ হয় হিমালয়টা দেখে আসতে। কিন্তু হিমালয় তো অনেক দূরে! মনে-মনে ভাবে, আব্বু তো একদিন বলেছিল, সবাই মিলে কাছে কোনো দেশে বেড়াতে যাবে সামনের ঈদের ছুটিতে। তো আব্বুকে সে বলবে, হিমালয়ের দেশে বেড়াতে নিয়ে যায় যেন।

 

দিনভর এ-কথা ভাবল সে। চিন্তায় সে এতোই মগ্ন ছিল যে রাতের খাবার খেতে ডেকে-ডেকে আম্মু হন্যে। তো খেলোও চাট্টিখানি।

কাল শুক্রবার, ইশকুল ছুটি। তাই আজ পড়ার ওতো চাপ নেই। সে আজ আগেভাগেই শুয়ে পড়ল। নোটবুকটা সে হাতছাড়া করেনি। ওটা বুকের ওপর রেখেই, কীসব ভাবতে-ভাবতে একসময় চোখজুড়ে ঘুম নামলো তার।

 

ঘুমের মধ্যেই অপরূপ এক পর্বতের দেশে হারিয়ে গেল সে। সে একাই। অবশ্য, দূরে আরো অনেকে ঘুরে-ঘুরে পর্বত দেখছে। রিভুর গায়ে বড় মোটা জ্যাকেট। মাথা-গলা ঢাকা টুপি। হঠাৎ তার ঘাড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেল সে। একটু আঁতকে উঠে মুখ ফেরালো।-- ‘এত ভয় তোমার? তুমি না বাংলাদেশের ছেলে! তোমাদের জাতির পিতা তো বঙ্গবন্ধু.. আর তুমি...?

হঠাৎ রিভুর বুকে ভয়তাড়ানো সাহস ভর করল। বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়লেই এমন সাহস তার মধ্যে ভর করে। সে লালজ্যাকেট পরা, বড় টুপিতে মাথা ঢাকা  লোকটার কথায় জবাব দিলো, ‘না, ভয় পাবো কেন? খুব ঠাÐা পড়েছে। হিম-হিম হাওয়াও খুব। তাই একটু কেঁপে উঠেছিলাম।’

‘তা হিমালয় দেখতে এল বুঝি?’

‘হ্যাঁ, অনেক দিনের ইচ্ছা হিমালয়টা ঘুরে-ঘুরে দেখবো।’

লোকটা মিচ মিচ হেসে বলল, ‘হিমালয় ঘুরে-ঘুরে দেখা কী সম্ভব বোকা ছেলে? এটা অনেক বড়্ কয়েকটা দেশের সমান। ওর এক-এক পা এক-এক দেশে।  ভারতের নানা-রাজ্যে তার শরীরের ছোটখাটো অংশ ছড়িয়ে আছে, এই নেপালে তার অনেকাংশ ভর করে আছে, তিব্বত যাও, সেখানেও..., চীনেও পা মেলে আছে।। অনেক পর্বত নিয়ে এই হিমালয়।’ লোকটা আঙুল উঁচিয়ে বরফে ঢাকা রোদচকচকে সবচেয়ে উঁচু চূড়াটা দেখালো রিভুকে। বলল, ‘ওটাই মহাপর্বত এভারেস্টের শীর্ষ শিখর।’

‘তাই?’ রিভু অবাক চোখে দেখতে থাকে।

‘আরো অনেক পর্বত আছে এখানে। কাঞ্চনজঙ্ঘার নাম শুনেছ? নাম  শুনেছ কৈলাশ পর্বতের?’

‘নাতো! শুনিনি, শুধু জানি এভারেস্টের নাম।’  

‘তা হিমালয় দেখার ইচ্ছা জাগল কেন হঠাৎ?’

‘না, মানে.. বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে একটা কথা বলেছেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো নামে একজন বড় মানুষ আছেন না.. তিনি। তাই..!’

‘ও বুঝেছি, তিনি বলেছেন, আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তাই তো!’

‘হ্যাঁ-হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন আপনি।’

লোকটা কিছুকখন চুপ থেকে বললেন, ‘উনি ঠিকই বলেছেন। তোমাদের জাতির পিতা, মানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হিমালয়ের চেয়েও বড় ছিলেন। হিমালয় তো নিশ্চল। ওটা থেমে থাকে। তবে, সব ঝড়-ঝঞ্ঝা সে বুক দিয়ে ঠেকিয়ে আমাদের জীবন রক্ষা করে। তোমাদের বঙ্গবন্ধুও হিমালয়ের মতো তার জাতিকে পাকিস্তানি শাসকদের সব অত্যাচার থেকে রক্ষা করছেন। সব অত্যাচারই সয়েছেন তিনি নিজে। আজ তোমরা স্বাধীন। এই স্বাধীনতা তারই সারাজীবনের আত্মত্যাগের ফসল। তার হৃদয় ছিল আকাশের মতো বিশাল, উদার। তিনি জাতিকে, মাতৃভূমিকে নিজের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। অসীম সাহসী আর মহান দেশপ্রেমী ছিলেন তিনি। তাঁর জন্ম না হলে তোমরা আজো পরাধীনতার যন্ত্রণা পোহাতে। এমন মানুষ তো হিমালয়ের চেয়ে বড় হবেনই। ফিদেল ক্যাস্ত্রো ঠিকই বলেছেন। তোমরা সত্যিই ভাগ্যবান জাতি। অমন এক নেতা তোমাদের জাতির পিতা।’..

 

‘কোথায় গেলেন আপনি?’.. হঠাৎ রিভু দেখে লোকটা তার পাশে নেই। মুহূর্তেই উধাও হয়ে গেল। আর তার নামটাও তো শোনা হলো না। নাক চ্যাপ্টা, দেখতে হালকা-পাতলা, কিন্তু কথা বলে গুছিয়ে সুন্দর করে।  রিভুর মনে হলো, তিনি হয়তো তেনজিং নরওয়ে। প্রথম এভারেস্ট-চূড়ায় ওঠা  মানুষ। হয়তো তিনি তেনজিং, নয়তো অন্যকেউ। যেই হন তিনি, তবে অনেক জ্ঞানী মানুষ এতে কোনো সন্দেহ নেই।

রিভু ঘুমের মধ্যেই বিড়বিড় করে কীসব বলছিল। এমন সময় মাথায় আব্বুর হাতের আদুরে ছোঁয়া পেয়ে চোখ মেলে চাইলো।

‘ঘুমের মধ্যে তুমি কী যেন বলছিলে রিভু!

আব্বুর কথায় রিভু কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল। তারপর বলল, ‘আচ্ছা আব্বু, তুমি না বলেছিলে সামনের ঈদের ছুটিতে কোনো দেশে বেড়াতে যাবে। তা যাবে তো!’

‘অবশ্যই যাবো। তা কোথায় যাওয়া যায় বলো তো?’

‘তুমিই বলো।’

‘ভাবছি কাটমানডু, মানে নেপালে যাবো। খুব সুন্দর দেশ ওটা।’

‘হ্যাঁ, আব্বু, হিমালয়ের দেশ। মাউন্ট এভারেেেস্টর দেশ।’

‘বাহ, তুমি তো অনেককিছু জানো!’

‘আব্বু, হিমালয় অনেক বড়। আর আমাদের বঙ্গবন্ধু তার চেয়েও বড়!’

‘সত্যিই..., সত্যিই-- মোটেও ভুল নয় তোমার কথাটি। কিন্তু কে তোমাকে এটা ভাবালো?’

‘কে আর.., ফিদেল ক্যাস্ত্রো, আর তেনজিং নরওয়ে হবেন হয়তো তিনি!

কী বলছে ছেলেটি! একটু অবাক হলেন তিনি। কিন্তু বিস্ময়ভাবটা ছেলেকে বুঝতে দিলেন না। তিনি রিভুর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন. ‘তাদের কথা শতভাগ ঠিক। হ্যাঁ, সেজন্য তোমাকে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। বড় হতে হবে অনেক। বঙ্গবন্ধুর মতো কাজের মধ্যদিয়ে  দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণসাধন করতে হবে।..’

বাবা কথাটা বলে ডাইনিঙে গেলেন। ডাকলেন রিভুকে, ‘ওঠো, খাওয়াদাওয়া করে রেডি হয়ে নাও। আজ শিশু একাডেমির বাগানে যাবো। শুনলাম সেখানে উদয়-পদ্ম ফুটেছে।’

‘তাই,  কী-মজা..!. বলে রিভু বিছানা থেকে নেমে পড়ার টেবিলের কাছে দাঁড়ালো। সে নোটবইটা খুলে ফিদেল ক্যাস্ত্রোর কথাটায় আর একবার চোখ বুলালো-- ‘আমি হিমালয় দেখিনি, কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি..।’

রিভু মৃদুস্বরে নিজেকেই প্রশ্ন  করল, ‘তাহলে বঙ্গবন্ধু তাহলে কত বড়? তাঁর মাথা কী আকাশ ছুঁয়ে থাকত?’

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top