সিডনী শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১

বিস্মৃত পলক : প্রণব মজুমদার


প্রকাশিত:
১৭ আগস্ট ২০২১ ১৯:০৬

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ১৬:১৫

 

- এসকিউজ মি ? হাউ মাচ দিস ওয়ান ?
- ফাইভ রিঙ্গিত অনলি!
খাওয়ার আগে জিজ্ঞেসা করে নেয়াই উত্তম! বিদেশ বলে কথা! বিপদে পড়লে অচেনা স্থানে কে এসে সমাধান দিবে ? অনীকের বৈশিষ্ট্যও তাই। ক্রয়ের আগে পণ্যের মূল্য জিজ্ঞাসা করে নেয়া। তাতে শংকা আর থাকে না! দাম জেনে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। অনীকের কাছে আছে তিরিশ রিঙ্গিত! সদ্য মালয়েশিয়া ফেরত বান্ধবী ইয়াসমিন রীমা। যাত্রার দুইদিন আগে ওর কাছ থেকে সে রিঙ্গিত নিয়ে এসেছে। বিমানে ওঠার নির্গমন পথের পাশেই সুসজ্জিত হালকা খাবার দোকান। দোকানের কিশোরকে সে অর্থ পরিশোধ করলো! তারপর ওভেনে গরম করা ভেজিটেবল নুডলস ও পানীয় বোতলটা নিয়ে খাবার চেয়ারে বসলো। টেবিলে রাখা সস খাবারে মিলিয়ে নিলো অনীক। খুব ক্ষিদে পেয়েছে! ফ্লাইট অবতরণের পরপর ক্ষীণকায়া গৌরবর্ণের তরুণী ক্রু রুটি, সবজি, সিদ্ধ ডিম ও আপেল জুস যা দিয়েছে তা পরিমাণে কমই ছিলো। নির্ঘুম রাতে অনীকের খিদে পায় বেশি। পুরুষদের রিফ্রেশমেন্ট রুম থেকে বেরিয়ে সারিবদ্ধ মনোরম প্যাসেঞ্জার্স লাউঞ্জের আসনে এসে বসলো সে। মাঝখানের আসনটি ফাঁকা। সে আসনে আরাম করে বসা মধ্য বয়সী এক থাই নারী বই পড়ছিলেন! অনীকের এটাচীটা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বোডিংয়ের সময় ল্যাগেজ বেল্টে দেয়া হয়েছে! তাই ভারী বোঝা বহনের ঝামেলা নেই। কাঁধে ঝোলানো ব্যাগ থেকে ল্যাপটপটা বের করলো সে। তারপর বিভিন্ন ফোল্ডারে রাখা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র দেখতে লাগলো!
আর ভালো লাগছে না একা একা! কেলিয়ায় আরও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা! ঢাকা থেকে সিংগাপুর। অফিসের প্রতিনিধি হিসেবে কষ্ট ম্যনেজমেন্টের ওপর এক ওয়ার্কশপে চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট অনীকের একা সফর। কুয়ালালামপুর ট্রানজিট। মালেয়শিয়ান এয়ারলাইন্সেই সিংগাপুর যেতে হবে।
- ক্যায়া মে আপকে পাছ বেট সাকতা হু ? সন্ন্যাসীনীর মতো তুষার ধবল পোশাকে মধ্য বয়সী একজন নারী অনীককে প্রশ্ন করলো! ল্যাপটপটার পাওয়ার বন্ধ করতে করতে তাকালো সে। বললো
- সিউর ম্যাম!
হিন্দী কথা শুনে মনে হলো ভদ্রমহিলা ভারতীয়! কিন্তু তার চাউনি নিশ্চল! অপলক! বিস্ময়ের ঢেউ ঝাপটা মারে অনীকের চোখমুখে! লজ্জাও পেলো সে।
কী মহিলারে বাবা! অনীক লক্ষ্য করলো সন্নাসীনীর চোখ ভারী সুন্দর! মনে হলো কী জানি ভাবছেন তাকে নিয়ে! না হলে চোখের মায়াজাল তৈরি করবেন কেন ? অতি উৎসাহী হয়ে মহিলা বললেন
- আপনি কি বাংলাদেশী স্যার ? কোথায় যাচ্ছেন ? মহিলার প্রশ্ন শুনে বেশ উৎসাহী হয়ে উঠে অনীক ! মহিলা বাংলা বলেছেন স্পষ্ট করে। তাহলে ওনার দেশও কী বাংলাদেশ ?
- ঠিক ধরেছেন ! যাচ্ছি সিংগাপুর।
মহিলার বলার ভঙ্গি ও কণ্ঠটা চেনা চেনা মনে হলো অনীকের! সাহস হলো না তা বলার! বরং অনীককে হতবাক করে দিয়ে সন্নাসীনী বললেন
- বাংলাদেশে আপনার বাড়ী কী কুমিল্লায় ?
এবার আরো আগ্রহী হয়ে উঠে অনীক!
অনীকের মুখোমুখি মহিলা। তর্জনী তাক করে বললেন
- আপনার নাম পালা ? কান্দিরপাড় রামঘাট বাড়ী ? অনীক আসন ছেড়ে ওঠে দাঁড়ায়।
- আপনার নাম কী নন্দা ?
মহিলা অনীকের হাত স্পর্শ করে বললো
- আমায় চিনতে পারলে না পালা ? হাত ধরলো অনীকও!
- আপনি কি আসলেন না যাচ্ছেন ?
- আপনি আপনি করছো কেন ? অনীকের জড়তা ভাঙ্গে এবার। অনুরোধের সুরে বললো
- গন্তব্য কোথায় তোমার ?
- মুম্বাই! আসলাম ব্যাংকক থেকে! হোমসের কাজে গিয়েছিলাম।
- চলো ওই কফি সপটাই গিয়ে বসি ! নন্দাকে পালার অনুরোধ।
এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট করে নন্দা থাইল্যান্ড থেকে ভারত যাচ্ছে! ওরও কুয়ালালামপুর ট্রানজিট। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আড়াই ঘন্টার যাত্রা বিরতি তার। নন্দিতা রায়ের এয়ার এশিয়ার একে ১৭৭৮ ফ্লাইটে ওঠার নির্গমন গেট জি ১০। বিমান ছাড়ার মালয়েশিয়ার সময় রাত ২টা ১০ মিনিট। অনীক মুখার্জী মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এম এইচ ৫৭৮ ফ্লাইটটি সিংগাপুর যাত্রা করবে রাত সাড়ে ৩ টায়! অনীক লক্ষ্য করলো এখন বাজছে রাত একটা ৫ মিনিট। সামনেই কফি শপ। পালা নন্দাকে নিয়ে ঢুকলো সেখানে। দু'জনে মুখোমুখি বসে একটি টেবিলে! পেমেন্ট দিয়ে ড্রাই কেক ও কফির অর্ডার দিলো নন্দা। ভ্রু কুঁচকে বিস্ময়ের সঙ্গে পালা বললো
- তা কত বছর পর দেখা হলো ?
- ৩০ বছরতো হবেই!
- স্বামী সন্তান ঘর সংসার ? জীবন সুখ ইত্যাদি ?
দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে নন্দা! কফি মগের প্রান্তে সে ভারী ঠোঁট স্পর্শ করে। নিশ্চল চোখের পাতা! সরাসরি নিবিড়ভাবে তাকায় পালার চোখে। ভেতরটা ঝড়ে তছনছ হয়ে যাচ্ছে নন্দিতার! আড়াই যুগের এ মন বেদনা। তিরিশ বছর ধরে পালার জন্য অনেক প্রশ্ন জমা ছিলো নন্দার! ভাবেনি পালার সঙ্গে দেখা হবে কোনদিন। সে কষ্ট তার ভেতরেই ছিলো। আজ এ মুহূর্তে ওর কাঠগড়ায় অনীক! অভিযোগের সুরে অনীকের উদ্দেশ্যে নানা প্রশ্ন।
- সুখ কাকে বলে ? জীবনের সংজ্ঞা তুমি জানো ? সুখ মানে কী ভালোবাসায় আকুল কাউকে এড়িয়ে যাওয়া ? সারাক্ষণ বইমুখী হয়ে থাকা! সুখ মানে কি শুধুই বিদ্যার ভারবাহী প্রাণী! তুমিতো সুখ বুঝোনি! জীবনের মানে তুমি বুঝতে চেষ্টাও করোনি! একটি মনের অতলে আরেকটা মন থাকে! সেটা হোক মেয়ে কিংবা ছেলে। মন কী চায় সেটাও জানা প্রয়োজন! তোমার ভালোবাসার মন কখনোই ছিলো না।
বাম গালে হাত রেখে অনীক ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। কফির পেয়ালা থেকে মুখ সরিয়ে নেয় সে। তারপর নন্দিতার উদ্দেশ্যে সে ধীরে ক্ষুদ্র একটি বাক্য নিক্ষেপ করে।
- তুমি কী সত্যি আমায় পচ্ছন্দ করতে ?
- বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনের সেই সময়গুলো কী মিথ্যে ? রবীন্দ্র, নজরুল ও সুকান্ত জন্মজয়ন্তীতে আমার নৃত্যনাট্যের অনুষ্ঠান ? মনে পড়ে তোমাকে দেখার অজুহাতে আমার বান্ধবী অর্থাৎ তোমার ছোট বোন অনিন্দিতার কাছে কত্তো গিয়েছি! রামঘাটের পাড়েই আমাদের বাসা। পাশেই লাগোয়া। তোমাদেরও ছিলো টিনের ঘর।
অনীকের এখন সব মনে পড়ছে! গান বাজনায় বেশ পারদর্শী ছিলো নন্দিতা। ওর প্রায় অনুষ্ঠানেই ছোট বোন অনুর সঙ্গে সে টাউন হলে যেতো।
তখন ছিলো গ্রীষ্মকাল। বৈশাখী ঝড়! এর আগে সে বিকেলে বসে অংক করছিলো পালা! সামনে মেট্রিক পরীক্ষা। আরেক ঘরে সবাই। একটা কাগজের ওপর লাল রঙ আঁকা গোলাপ ফুল ও গাছ! ফুলের পাশে ইংরেজি বর্ণমালা 'এন' আর গাছের সঙ্গে 'পি'! আঁকা সে টুকরো কাগজটা কে যেন জানালা দিয়ে ছুঁড়ে পালালো। ওটা এসে পড়লো পালার কোলের ওপর। বৃষ্টি থামার পর হারিকেনের আলোতে মোড়ানো কাগজটা খুলে পালা বুঝতে পারেনি এটা কার কা-! অনু মানে অনিন্দিতাকে পালা জিজ্ঞাসাও করেছিলো। অনু পালাকে বলেছিলো, তুই কিছু বুঝিসনি ছোড়দা ? নন্দা অনুর কাছে প্রায়ই আসতো। ছোট বোনের সঙ্গে প্রায় সব বিষয়েই কথা বলতো পালা। পড়াশোনা, টিউশনি ছাড়া অন্য কিছু ভাবতো না সে। অনু প্রায়ই নন্দার নানা গল্প করতো ছোটদার কাছে। পালাদের টিনের পাঁচিলে বিভিন্ন স্থানে খড়িমাটির সাদা চকে লেখা ‘এন’ যোগ ‘পি’ ! তা দেখিয়ে অনু বলতো ছোড়দা এর অর্থ জানিস ? বোকার মতো পালা উত্তর - ‘নারে।’ অনু রেগে পালাকে বলেছিলো ‘তুই আসলেই একটা হাঁদারাম।’
পরে অনুকে সঙ্গে নিয়ে নন্দা একদিন দুপুরে পালার কাছে আসে! পালার থেকে দুই বছরের ছোট। অনু ও নন্দা সহপাঠী! পড়ামগ্ন পালাকে বলে তোমার সঙ্গে কথা আছে ? পাশে দাঁড়ানো অনু তখন মিটিমিটি হাসছিল।
পালার অনাগ্রহ বুঝতে পেরে নন্দা ওদের বাসা থেকে বের হয়ে যায়। অনু পরে জানিয়েছিলো ওকে লেখা নন্দার চিঠিটির কথা। কিন্তু বিষয়টি তখন গায়েই মাখেনি পালা। জিলা স্কুল থেকে এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করে ঢাকা কলেজে এসে ভর্তি হয় পালা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অনার্সে ভর্তি হয়ে বাড়ীতে যায় অনীক। অনুর কাছে জানতে পারে নন্দিতাদের পুরো পরিবার চলে গেছে নেপাল ! ওর বাবার কর্মস্থল কাঠমান্ডু।
পালার মগের মধ্যে কফির অবশিষ্ট ঠা-া হয়ে গেছে ! ওর কেকের বাকি অংশটুকু নন্দার সামনে ঠেলে দেয় সে।
- নষ্ট করো না, নাও! তোমার প্রস্তাব আমাকে সরাসরি বলতে ?
-অনেকবার চেষ্টা করেছি তা বলার ! তুমি আমলই দাওনি। চিঠিও দিয়েছি একাধিকবার। তোমাকে লেখা আমার সর্বশেষ চিরকুটটা তুমি দেখোনি বলে অনু আমাকে তা ফেরত দিয়েছিল! আজও সেই স্মৃতিচিহ্ন রেখে দিয়েছি! প্রমাণগুলো বয়ে যাচ্ছি অনন্তকালের গন্তব্যে! জানি এর কোন সুখ ঠিকানা নেই! চোখ ছলছল নন্দিতা রায় ওর পার্সটা টেনে নেয় ওর তুফান বিধ্বস্ত বুকে! কম্পিত হাত! তা ঢুকিয়ে বের করে আনে পালার একটি রঙিন ছবি আর একটি চিঠি!
- এই দেখো! সুদর্শন এই তরুণকে চিনো ?
হতচকিত হয়ে যায় পালা! ছবিটা হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে সে!
- আরে এইটাতো আমার মেট্রিক পরীক্ষায় ফরম ফিলাপের আগে তোলা ছবি! তুমি পেলে কোথায় ?
- মনোহরপুর আজহার স্টুডিও থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। তোমার ছবিটি দীর্ঘদিন সেই দোতলার স্টুডিওতে বাধাঁই করা কাঁচের ফ্রেমে টাঙ্গানো ছিলো। আমি ছবিটা ওয়াশ করে নিয়েছিলাম। এই ধরো বাকি কথাকাব্য।
বুক পকেট থেকে চশমাটা বের করে চোখে তা পরে নিলো অনীক। চিঠির সাদা রঙটি ধূসর হয়ে গেছে! হালকা হলুদ রঙের দিকে যাচ্ছে স্মৃতিবাহী লিপিটা। কালিতে আঙুলের স্পর্শে লেখা শব্দগুলো মলিন। অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। হৃদয় ঘাতকের আঘাতে নন্দিতা রায়ের বিক্ষত মৃত মনের মতো এ চিরকুটটা একদিন নষ্ট হয়ে যাবে। এসব ভাবতে লাগলো অনীক। হাত দিয়ে চোখ মুছতে লাগলো সে। দেখলো কাগজের মাঝখানে মাত্র দুইটি বাক্য লেখা। চিঠির পুরো সম্বোধন নেই ! শুধু ‘পি’ বলে আহবান, সমাপ্ত ‘এন’ দিয়ে। তোমাকে নিয়ে সুন্দর একটি নীড় গড়ার স্বপ্নে বিভোর আমি। অপেক্ষায় থাকবো শেষ নিঃশ্বাস অবধি। প্যান্টের পকেট থেকে রুমাল বের করে অনীক। চশমা খুলে রুমাল দিয়ে চোখ মুছে সে আবার! চিঠিটা অনীকের কাছ থেকে নিয়ে নন্দিতা তা পার্সে রাখে। অপরাধীর মতো নতমুখে অনীক বলে
- আমায় ক্ষমা করে দিও নন্দিতা! জীবন সংসারে এক ব্যর্থ পুরুষ আমি।
নন্দিতা কৌতুহল মন নিয়ে সঙ্গে অনীকের মুখের দিকে তাকায়।
- তোমার কয় ছেলেমেয়ে ? গিন্নি ?
- দুই ছেলে এক মেয়ে। ওরা একজন অস্ট্রেলিয়া ও দুইজন কানাডায় বৃত্তি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করছে। স্ত্রী চলে গেছে আমাকে ছেড়ে। তোমার তো কিছুই জানা হলো না ?
- আমার ছেলেমেয়ে অনেক! সহস্্রাধিক। ওরা এখন মুম্বাইয়ের পুনোতে মাহের অনাথ হোমসে আছে।
ওদের সঙ্গে থাকি আমি দু’ যুগ ধরে।
- বাট ইয়োর হাসব্যান্ড ? ওয়াটস হি ?
- হিজ নেম ইজ- পি ! লিভস ইন দ্য হেভেন ডার্ক। মাই লেটার্স রিসিপ্যান্ট! হুইচ লেটার আই হ্যাভ বিন ক্যারিং অল দ্য টাইম স্যার!
নন্দিতা রায় উঠে দাঁড়ালো। আস্তে আস্তে হেঁটে যায় ১০ নম্বর ডেপার্টচার প্যাসেজের সামনে! পিছনে অনীক। পাশের যাত্রীর লাউঞ্জের আসনে বসে ওরা। মুম্বাইয়ে ফ্লাইটের জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই অপেক্ষমান যাত্রীদের চেকিং শুরু হবে। অনীক নন্দিতার কাছ থেকে ওর যোগাযোগ নম্বর ও ঠিকানা চেয়ে নেয়! আর ওর অফিসের নেম কার্ড ওর হাতে গুঁজে দেয়। তারপর ক্লোজ হয়ে অনীক ওর আইফোন সেটে কয়েকটা সেলফি তুলে রাখে।
- আসি তাহলে! এসো আমাদের মাহের আশ্রমে।
- তোমার আর কিছুই বলার নেই নন্দা ?
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্র সংগীতের ওপর স্নাতক নন্দিতা রায় বলে ওঠে
- বড্ড দেরি হয়ে গেছে! সূর্য অস্তাচলে। সুললিত কণ্ঠে আবৃত্তির ঢঙে বলে
- প্রহর শেষে আলোয় রাঙা, সেদিন চৈত্র মাস, তোমার চোখে দেখেছিলুম আমার সর্বনাশ!
নন্দিতার নরম হাতটা আবারও স্পর্শ করলো অনীক!
- গুডবাই! চশমা খুলে চোখের জল মুছে সে। পিছন দিকে তাকাচ্ছিলো নন্দিতা। দূর থেকে লক্ষ্য করলো ওর পদযাত্রার গতিটা! নন্দিতা রায়ের ছায়াটাও যাত্রীদের ভিড়ে এক সময় মিলিয়ে যায়।             

 

প্রণব মজুমদার
লেখক গল্পকারকবিপ্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক
শান্তিনগরঢাকা

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top