সিডনী শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১

অনুগল্প "রইনু চেয়ে" : ড. মীনা মুখার্জী


প্রকাশিত:
১৫ নভেম্বর ২০১৯ ২১:২৫

আপডেট:
৪ মে ২০২০ ১৩:৩৯

 

কর্তার মৃত্যুর পর বাণু দেবী কোলকাতায় তাঁর ছেলের ফ্ল্যাটে এলেন অবশেষে৷ছেলের একান্ত অনুরোধ ও স্বীয় মন পরিবর্ত্তনের আশায়৷বহু কালের সাথী হারিয়ে স্বভাবতঃই বিষাদার্কীণ মন৷বাবার আদ্য-শ্রাদ্ধের পর বিল্টুর প্রবল জেরাজেরি সত্ত্বেও নানান অজুহাত দর্শিয়ে সে যাত্রা নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন তিনি স্থানান্তরিত হওয়ার হাত থেকে৷
        ছেলের বাড়ীতে স্বাধীনতার বড় অভাব৷তবুও ঘর-দোরের ব্যবস্থা করে স্থায়ীভাবে থাকবেন ভেবে আসা৷নাতি ও ছেলে প্রচন্ড খুশী৷বৌমার বাহ্যিক আচরণ মন্দ নয়৷ছেলেকে দেখিয়ে 'মা,মা' ডাক আর সময়-অসময়ে মিস্টি বকাঝকা বেশ লাগে৷কিন্ত্তু একটা ব্যাপারে প্রচন্ড অসোয়াস্তি বোধ করছেন তিনি৷দীক্ষিত মানুষ তো!ঠাকুর-মা'র ছবিটি নাহয় ফিবারের মত বিছানার একপাশে রাখলেন৷কিন্তুু স্বামীর ফটোটি!এখানের দেওয়ালে প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপন নিষিদ্ধ৷অগত্যা ব্যাগ খোলা আর সংগোপনে জল-মিস্টি দেওয়া!
         নাঃ আর নয়,ছেলেকে বলতেই হবে বাড়ী যাওয়ার প্রস্তাবটা৷
        পরক্ষণেই মনটা একটু দমে যায়৷ছেলে তো এখনও মা জ্ঞানে অস্থির৷নাতিটারও ঠাম্মু অন্ত প্রাণ৷তবুও আসক্তি ত্যাগ বান্ছনীয়৷শ্রীমায়ের কথায় ছায়া -কায়া সমান৷তাই এ গোপন সংরক্ষণ বিসদৃশ!
         দ্বিধা-দ্বন্দ্বের টানা পোড়েনে ছেলের কাছে কথা পাড়তেই বিল্টু বলে —
        —তা বেশ তো মা,এই টিপয়টার উপর রাখোনা ফটোটা৷দেওয়ালে দামী পেন্ট তো!তাছাড়া .....গার্গী.....
         পর্দার পিছনে কর্কশ গলায় গার্গীর তারস্বর —
        —মামদো বাজি পেয়েছো?
        —এ কি পান দোকান নাকি?যত্তো সব জংলিপনা!
      বীণা দেবী হতবাক!
কম্পিত ওষ্ঠে হরি স্মরণ বুঝি বা!

     

ড. মীনা মুখার্জী
লেখক ও সংগঠক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top