সিডনী বুধবার, ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০শে মাঘ ১৪৩১


অভিবাসন নীতির প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে জার্মানিজুড়ে


প্রকাশিত:
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:৪২

আপডেট:
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৪১

ফাইল ছবি

জার্মানির অভিবাসন নীতি কঠোর করতে দেশটির পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে। বিক্ষোভ থেকে সিডিইউর এই প্রস্তাবের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি প্রস্তাবিত আইনটির পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত এই আইনের বিরুদ্ধে জার্মানির উত্তরের কিল শহর থেকে দক্ষিণের ফ্রাইবুর্গ শহর পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। জার্মানির বেশ কয়েকটি রাজ্যের রাজধানী সিডিইওর দপ্তরের সামনে জড়ো হয়ে অনেক মানুষকে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, মিউনিখে দলটির সদর দপ্তরের সামনে প্রায় সাত হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া কিয়ল শহরে প্রায় দুই হাজার মানুষ, মাইঞ্জ শহরে চার হাজার, ডুসেলডর্ফে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ ও ফ্রাইবুর্গ শহরে ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেন। রাজধানী বার্লিনে সিডিইউর সদর দপ্তরের সামনে ১৩ হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।

ভোটাভুটির আগে প্রস্তাবটি নিয়ে পার্লামেন্টে বিতর্ক চলছে। এর প্রতিবাদে স্থানীয় সময় শুক্রবার পার্লামেন্টের আশপাশে বেশ কিছু সংগঠন মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে।

অভিবাসন নীতি কঠোর করতে সিডিইউ ২৯ জানুয়ারি পার্লামেন্টে এই প্রস্তাব দেয়।

প্রস্তাবটি পার্লামেন্ট থেকে পাস করিয়ে আনতে সহায়তা করছে জার্মানির কট্টর রক্ষণশীল দল অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ড (এএফডি)। দলটি অভিবাসীবিরোধী হিসেবে পরিচিত। অনেকে এএফডিকে ‘নব্য নাৎসি’ হিসেবেও বর্ণনা করে থাকেন।

জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর দল সিডিইউর তোলা এ প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এমন প্রস্তাব পাসের চেষ্টা গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিপন্থী। এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এএফডির মতো একটি দলের সহায়তা দিয়ে এ ধরনের প্রস্তাব পাসের চেষ্টা করার জন্য সিডিইউর বর্তমান প্রধান ফ্রিডরিখ মের্জেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জার্মানির ২১তম সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা। এ নির্বাচনে সিডিইউর চ্যান্সেলর প্রার্থী ফ্রিডরিখ মের্জ। তিনি জার্মানির চ্যান্সেলর হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কাল শুক্রবার খসড়া এ প্রস্তাব নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে। খসড়া প্রস্তাবে ‘জার্মানিতে তৃতীয় দেশের নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশ সীমিত করার’ কথা বলা হয়েছে। সেই অনুসারে, ‘অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার লক্ষ্যে’ বেশ কিছু নতুন আইন প্রণয়নের কথা রয়েছে। যেমন কোনো সুরক্ষাপ্রাপ্ত শরণার্থী বা অভিবাসীর সঙ্গে পারিবারিক পুনর্মিলনের যে সুযোগ ছিল, তা বন্ধ করার প্রস্তাব রয়েছে।

নতুন প্রস্তাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য নয়, এমন দেশের নাগরিকদের ভ্রমণ নথিপত্র হারিয়ে গেলে বা যাঁরা ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁদের জন্য যে সহনশীলতা দেখানো হতো, তা বাতিল করার প্রস্তাব রয়েছে। এ ছাড়া সীমান্তে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

জার্মানিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব জুলিয়া ডুচরোভ খসড়া আইনটি প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই আইন স্পষ্টতই ইউরোপীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। তিনি বলেন, এই আইন জার্মানিতে আইনের শাসন, ইউরোপীয় ধারণা ও সর্বজনীন মানবাধিকারের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

 


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top