অস্বাভাবিক আকৃতির কিছু একটা রেক্টামে পুশ করা হয়েছে, স্বাভাবিক মিলনে নয় : ফরেনসিক প্রধান
প্রকাশিত:
১৩ জানুয়ারী ২০২১ ০০:১৮
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৯:১৪

রাজধানীর কলাবাগানে নিহত শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনের (১৭) শরীরে বি’কৃত যৌ’না’চারের আলামত মিলেছে। বড় আকৃতির কিছু একটা ভিক্টিমের রেক্টামে পুশ করানোর ফলে তার যৌনাঙ্গ ও রেক্টাম ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং সে মারা যায় বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনুশকার ময়নাতদন্ত হয়। সেখানকার ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্বাভাবিক পেনিস দ্বারা রেক্টাম ও যৌনাঙ্গ ব্যবহার করলে এতটা ভয়া’বহ পরিণতি হওয়ার কথা নয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে ‘কোন ফরেন বডি সাইজ’ কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় সেখানে বি’কৃ’ত যৌ’না’চার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার পোস্টমর্টেম জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, পেনিস (পুরুষাঙ্গ) দ্বারা এই ইনজুরি মোটেও সম্ভব না। ওটা পেনিসের বাইরে অন্য কিছু ছিল।
তার পরিবার আরো দাবি করছে যে এ ঘটনায় শুধু দিহান নয়, তার আরও তিন বন্ধু জড়িত ছিল। এখন আনুশকার পরিবার দিহানের তিন বন্ধুকেও আসামী করার কথা বলছে। তবে পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর এ ঘটনায় তিন বন্ধুর কোন সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আনুশকার মা সোমবার (১১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার সময় দিহানসহ চারজন সেখানে উপস্থিত ছিল। ঘটনা শুনে হাসপাতালে যাওয়ার পর দিহানের কাছে জানতে চাইলে সে জানায়, চার বন্ধু তার বাসায় ছিল। দিহানকে আগে থেকে চিনতাম না। ওই দিন ফোন করে সে তার পরিচয় দিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, বন্ধুদের অপরাধ আড়াল করতে একাই দায় মাথায় নিয়েছে দিহান। হয়তো ওরা জোর করেই আমার মেয়ের ওপর নির্যাতন চালায়। কিছু খাইয়ে ওকে অচেতন করা হতে পারে। ঘটনার পর আমার মেয়ের পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। প্রভাবশালী হওয়ায় তিন বন্ধু পার পাচ্ছে বলে অভিযোগ তার।
ছাত্রীর মা আরও বলেন, ঘটনা শুনে আমি হাসপাতালে যাওয়ার পরই দিহান আমার পা জড়িয়ে ধরে। সে বলতে থাকে- আমাকে বাঁচান। তিনি বলেন, পুলিশের পরামর্শে তারা মামলায় একজনকে আসামি করেছেন। এখন দিহানের আরও তিন বন্ধুকে আসামি করতে চান। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তার মেয়েকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া দিহানের কলাবাগান বাসার পলাতক দারোয়ান দুলালকে আটক করে পুলিশ। ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার ডিসি মো. সাজ্জাদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় আনুশকার ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে তার শরীরে বিকৃত যৌনাচারের আলামত মিলেছে। বড় আকৃতির কিছু একটা ভিক্টিমের দেহে পুশ করানোর ফলে তার বিশেষ অঙ্গ ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এবং সে মারা যায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্কে এতটা ভয়াবহ পরিণতি হওয়ার কথা নয়। শরীরের নিম্নাঙ্গে কোন ফরেন বডি কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় সেখানে বিকৃত যৌনাচার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে বন্ধু দিহানের মোবাইল কল পেয়ে বাসা থেকে বের হন রাজধানীর ধানমন্ডির মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ও লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নুর আমিন। এরপর কিশোরীকে কলাবাগানের ডলফিন গলির নিজের ফাঁকা বাসায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন দিহান।
অসুস্থ হয়ে পড়লে দিহানসহ চার বন্ধু তাকে ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন। ধর্ষণের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় আনুশকার বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনার মামলায় দিহান গ্রেফতার রয়েছেন। তিনি ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: