দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার


প্রকাশিত:
৩০ মে ২০২২ ১৯:১৭

আপডেট:
১৫ মার্চ ২০২৫ ২০:৩১

 

২০২৫ সালের মধ্যে দেশের ৪৬টি গ্যাস কূপ ওয়ার্কওভার তথা পুনঃখনন, অনুসন্ধান ও উন্নয়নের মাধ্যমে দৈনিক ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এই কূপগুলো থেকে এখন দিনে ৮৬৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে।

পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের সব গ্যাসক্ষেত্র থেকে দিনে দুই হাজার ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হয়। দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা তিন হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট।


তবে পেট্রোবাংলা সর্বোচ্চ তিন হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে থাকে। চাহিদার বাকি ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে পূরণ করা হচ্ছে।
স্বল্পমেয়াদি এই পরিকল্পনার আওতায় উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে এলএনজি আমদানি অনেক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। তাতে বর্তমান বাজার দরে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার কোটি টাকার এলএনজি সাশ্রয় হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) ২০টি কূপ, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কম্পানি লিমিটেডের (বিজিএফসিএল) ১২টি কূপ এবং সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) ১৪টি কূপ ওয়ার্কওভার ও ড্রিলিংয়ের কাজ করা হবে। নিজস্ব ২০টি কূপসহ বিজিএফসিএলের ১২টি কূপ ওয়ার্কওভার ও ড্রিলিংয়ের কাজ করবে বাপেক্স। এসজিএফএলের ১৪টি কূপ ওয়ার্কওভার ও ড্রিলিংয়ের কাজ করবে বাপেক্স এবং বাংলাদেশে তেল, গ্যাস অনুসন্ধান ও উন্নয়নে নিয়োজিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক তেল কম্পানি শেভরন।

দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ছে। ফলে বাড়ছে গ্যাসের চাহিদা। কিন্তু গত দুই দশকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় নতুন গ্যাসক্ষেত্র বাড়েনি। ফলে গ্যাসের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে। চাহিদা সামাল দিতে সরকারকে ব্যয়বহুল এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। দেশীয় গ্যাস উৎপাদনে যে খরচ হয়, এলএনজি আমদানিতে তার ৭ থেকে ১০ গুণ বেশি খরচ হয়। এতে জ্বালানি বিভাগের ওপর ভর্তুকি চাপ বেড়েই চলেছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেরিতে হলেও পুরনো কূপগুলো ওয়ার্কওভার ও ড্রিলিং করে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাঁরা বাপেক্সকে গ্যাস অনুসন্ধানে আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন। তাঁরা বলছেন, সরকারকে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে গ্যাস উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে বাপেক্সের নিজস্ব কূপের পাশাপাশি বিজিএফসিএল এবং এসজিএফএলের কূপ ওয়ার্কওভার ও ড্রিলিংয়ের কাজ করা হবে।

মোহাম্মদ আলী বলেন, বাপেক্স গভীর কূপ খননের পরিকল্পনাও করছে। এরই মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় বিদেশি কম্পানির সঙ্গে যৌথ সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে একটি আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিদেশি চার-পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমাও দিয়েছে। সেগুলো এখন মূল্যায়নের পর্যায়ে আছে। গাজীপুর, কাপাসিয়া ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ করতে জাপানের মিটসুই অয়েল এক্সপ্লোরেশন কম্পানির সঙ্গে সমঝোতা সই (এমওইউ) হয়েছে। বিদেশি এই কম্পানির সঙ্গে বাপেক্স যৌথভাবে কাজ করবে।

 

যে কূপগুলো ওয়ার্কওভার ও ড্রিলিং করা হবে

বাপেক্সের নিজস্ব কূপ সেমুতাং-৫, ৬ ও ৭, শ্রীকাইল নর্থ-১, শরীয়তপুর-১, টবগী, সুন্দলপুর-৩, মুলাদী বা হিজলা-৩, বেগমগঞ্জ-৪ ওয়েস্ট, ইলিশা-১, ভোলা নর্থ-২, দোয়ারাবাজার ইস্ট-১, জকিগঞ্জ-২, ফেঞ্চুগঞ্জ সাউথ-১, শাহবাজপুর-৬, শ্রীকাইল ডিপ-১, শ্রীকাইল-৫, শাহবাজপুর-৭, ভোলা নর্থ-৩, মোবারকপুর ডিপ-১।

বিজিএফসিএলের কূপ তিতাস-৮, ১৪, ১৬, ২৪, তিতাস-২৮ ও ২৯, তিতাস ডিপ-১, হবিগঞ্জ-৬, বাখরাবাদ-৭, মেঘনা-১, কামতা-২, বাখরাবাদ ডিপ-১।

এসজিএফএলের কূপ বিয়ানীবাজার-১ ও ২, কৈলাশটিলা-২, কৈলাশটিলা-৮, রশীদপুর-২, ৩, ৫, ৬, ১১, ৯, ১৩, সিলেট-৭, ১০ ও ১১, ডুপিটিলা-১।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top