ফরমালিনের বিষক্রিয়ায় জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি: রাষ্ট্রপতি
প্রকাশিত:
৯ জানুয়ারী ২০২০ ০৭:৫৫
আপডেট:
১০ জানুয়ারী ২০২০ ১২:০৭

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর বুকে শান্তিপূর্ণ উন্নয়নশীল একটি দেশ। দারিদ্র্য নিরসনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নে বহির্বিশ্বে দেশটি এখন রোল মডেল। বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের ওপর। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, ২০২৪ সাল নাগাদ এ হার হবে ১০ শতাংশের ওপর।
ফরমালিনের বিষক্রিয়ার ফলে জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘ফলমূল, শাকসবজিসহ সবকিছুতেই এখন ফরমালিন। এসব খাওয়ার ফলে দেশে ক্যান্সার রোগী বাড়ছে। গত ২০-৩০ বছর আগেও এত ক্যান্সার রোগীর কথা আমরা শুনতাম না। অথচ বর্তমানে ফরমালিনযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের এ সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে ধীরে-ধীরে আমরা জাতি হিসেবে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি।’
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তনে সভাপতির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সময় এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার। সময় এখন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার, পথ চলার। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষের অবদান খুবই প্রশংসনীয়।
গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেকোনো দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনে তরুণ সমাজই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। সুতরাং আজ তোমরা যারা গ্র্যাজুয়েট হলে, আমার সামনে এই যে তরুণ প্রজন্ম, তোমরা এক একটি আলোর প্রদীপ। তোমাদের সকলকে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসতে হবে। কাঁধে নিতে হবে দেশ ও জাতির দায়ভার। তোমাদের মেধা ও শ্রমেই গড়ে উঠবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একজন মানুষকে হত্যার অপরাধে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদণ্ড হয়। অথচ কিছু মানুষ খাবারে ফরমালিন দিয়ে ব্যবসার নামে লুটপাট ও গণহত্যা চালাচ্ছে। দেশের সার্বিক বিষয় চিন্তা করে এদের বিরুদ্ধে সরকারি পদক্ষেপ ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মন-মানসিকতা উঠে গেছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (র.)সহ অসংখ্য ওলি-আউলিয়ার পুণ্যভূমি সিলেট। অথচ এখানকার রাস্তাঘাট দেখে মনে হচ্ছে আমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মন-মানসিকতা উঠে গেছে। পলিথিন, কাগজপত্র, পেপার যাচ্ছেতাই পড়ে আছে রাস্তায়। অথচ বিদেশে থুথু ফেলারও সুযোগ নেই। আমরা যারা আছি তারা স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে মোটিভেট করতে হবে। আমরাসহ যারা দেশের বিভিন্ন স্তরের নেতারা আছেন, তারা দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে।’
লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন,‘দেশের উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তনে তরুণ সমাজই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে থাকে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। সুতরাং আজ তোমরা যারা গ্র্যাজুয়েট হলে আমার সামনে এই যে তরুণ প্রজন্ম, তোমরা এক একটি আলোর প্রদীপ। তোমাদের সবাইকে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় এগিয়ে আসতে হবে। কাঁধে নিতে হবে দেশ ও জাতির দায়ভার। আমি মনে করি, তোমাদের মেধা ও শ্রমেই গড়ে উঠবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’। বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর জ্ঞান তপস্যা ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে তোমরা ডিগ্রি অর্জন করেছো। তোমরা ভালো করেই জানো তোমাদের বিদ্যালাভ ও সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পেছনে যারা শক্তি, সাহস ও অর্থ জুগিয়েছেন তারা হচ্ছেন এ দেশের জনগণ। তাই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি জীবনব্যাপী তোমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা জাতি প্রত্যাশা করে।’
বিষয়: রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ সিলেট
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: