সিডনী সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১


নিজস্ব অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে চাই আমরা: প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
১০ জানুয়ারী ২০২০ ১০:৩৯

আপডেট:
১০ জানুয়ারী ২০২০ ১২:০৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০১৯ উৎযাপন’ উপলক্ষে বক্তৃতা প্রদান করেন

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: শিল্প মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা যে যে সেক্টরে উৎপাদন করেন সেই পণ্যের বাজার খুঁজবেন। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করে রফতানি করবেন। আমরা নিজস্ব অর্থনীতির ওপর দাঁড়াতে চাই। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই।

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বস্ত্রমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র মেলার উদ্বোধন করেন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮১ সালে আমি দেশে আসার পর সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। আমি দেখেছি এ দেশের মানুষের কী অবস্থা। মানুষের পরণে ছিল জীর্ণশীর্ণ কাপড়। বিদেশ থেকে পুরোনো কাপড় এনে এদেশের মানুষের চাহিদা মেটানো হয়েছে। অধিকাংশ মানুষের ঘরবাড়ি ছিল না। চিকিৎসা ছিল না, ছিল না অন্ন বা খাবার। এমনই একটা অবস্থায় দিনযাপন করত এ দেশের মানুষ। সেই দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

পাট ও বস্ত্র শিল্পের কথা উল্লেখ করে অত্যন্ত আক্ষেপের সঙ্গে তিনি বলেন, সরকারিভাবে কোনো শিল্প চালাতে গেলে সেটা আলোর মুখ দেখে না। কিন্তু বেসরকারি শিল্প ঠিকই লাভ করে বছরের পর বছর টিকে থাকে। তিনি বলেন, সরকারি শিল্পে সমস্যাটা কোথায় বুঝি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের তৈরি পোশাকশিল্প বিশ্ববাজারে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। বাজার ধরে রাখতে হলে কোন দেশে কোন ধরনের পোশাকের চাহিদা রয়েছে, তাদের পছন্দের রং কী, কোন সিজনে কোন পোশাক তারা পরে, কোন ডিজাইন কোন দেশের মানুষের পছন্দ, এগুলো খুঁজে বের করতে হবে। শুধু পোশাক শিল্প নয়, অন্যান্য শিল্পের সঙ্গেও যারা জড়িত আছেন, তারা সারা বিশ্বে বাজার খুঁজবেন। কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে, সে অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে বিদেশে রফতানি করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র মেলায় বঙ্গবন্ধু কর্ণার ঘুরে দেখেন

আমরা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। যারা এ পোশাক ক্রয় করেন তারা যদি এক ডলার করেও দামটা বাড়ান তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটা মজবুত হবে। আমি জানি না, যারা রফতানি করেন তারা এটা করেন কি না। তবে আমি যখন কোনো দেশে যাই তখন আমাদের তৈরি পোশাক এবং অন্যান্য গুণগত যেসব পণ্য আছে, সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে এসব পণ্যের কথা তুলে ধরি। তারা যেন আমার দেশ থেকে পণ্য ক্রয় করেন, সে বিষয়েও তাগিদ দেই। তবে আমি একা তুলে ধরলে হবে না। আপনারা যারা ব্যবসায়ী আছেন, তাদের এই দায়িত্ব নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০১৯ উৎযাপন’ উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠনকে ক্রেস্ট উপহার দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার গঠন করার পর থেকেই আমরা বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দিচ্ছি। বিদ্যুৎ খাত থেকে শুরু করে সব খাতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দিয়ে আসছি। তার শুভ ফল দেশবাসী পাচ্ছে। আমরা বাজেট প্রায় ৯ গুণ বৃদ্ধি করেছি। বাজেটের ৯০ ভাগ বাস্তবায়ন করছি নিজস্ব অর্থায়নে। তৈরি পোশাক শিল্পে আমাদের ব্যাপকহারে মেয়েদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। দেশের উন্নয়নে তৈরি পোশাক শিল্প যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। শুধু পোশাক খাত নয়, অন্যান্য শিল্পেও আমরা সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করছি। তারা যেন আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের বাজারে তাদের তৈরি পণ্য এক্সপোর্ট করতে পারে। সাথে সাথে বাংলাদেশে একটা বিশাল বাজার রয়েছে। এ বাজারটার চাহিদাও যেন মেটাতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বস্ত্র মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাল (শুক্রবার) মুজিববর্ষের কাউন্টডাউন শুরু হবে। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ পালন করব। এ ছাড়া আগামী বছরে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। ২০২১ থেকে ৪১ সাল পর্যন্ত আমরা একটা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা তৈরি করেছি। এ ছাড়া বাংলাদেশ যেহেতু একটি বদ্বীপ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমরা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হই, সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ হাতে নিয়েছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ দেশের মানুষ যেন সুখে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে, সেই কর্মসূচি গ্রহণ করে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top