আজ থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপি অমর একুশে গ্রন্থমেলা
প্রকাশিত:
২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৯:৩৬
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ২৩:৫৫

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: মাসব্যাপি অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হচ্ছে আজ থেকে।প্রতিবছরের মতো মহান ভাষার মাসে বাংলা একাডেমি চত্বরে রেওয়াজ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধন করবেন। বিকাল ৫টার পর সাধারণ দর্শক-পাঠকের জন্য খুলে যাবে মেলার দরজা। এ বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে তার স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০। তা ছাড়া বাড়ানো হয়েছে পরিসর, রয়েছে বিশেষ আয়োজনও। পরিসর বাড়াতে গতবছরে তুলনায় মেলাস্থানের পরিধি, প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
শনিবার রাত পর্যন্ত মেলার স্টলগুলোর ভেতরে-বাইরে চলেছে হাতুড়ি-পেরেকের ঠোকাঠুকি, রঙ-ব্রাশের মাখামাখি। নির্মাণ, সাজগোজের এই কর্মযজ্ঞের উপলক্ষ একটাই বইমেলা।
১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে একটি বিশাল জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সে উপলক্ষে সাত-আটজন প্রকাশক একাডেমির ভেতরে পূর্বদিকের দেওয়াল ঘেঁষে বই সাজিয়ে বসে যান। সে বছরই প্রথম বাংলা একাডেমির বিক্রয়কেন্দ্রের বাইরে অন্য প্রকাশকদের বই বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৮৩ সালে মনজুরে মওলা যখন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক, তখন তিনি বাংলা একাডেমিতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন সম্পন্ন করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বইমেলা করা সম্ভব হয়নি। ১৯৮৪ সালে সাড়ম্বরে বর্তমানের অমর একুশে গ্রন্থমেলার সূচনা হয়।
এবার বইমেলার পরিসর বাড়ছে। আয়োজনেও আসছে নানা নতুন পরিবর্তন। কেমন হবে নতুন এই বইমেলা? বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বইমেলা আমাদের চেতনার অংশ। সেই চেতনা এবং স্বপ্নকে প্রতিভাত করার জন্য জাতির পিতাকে এই বইমেলা উৎসর্গ করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি সৃজনশীলতার সমন্বয়ে মেলাটি চলবে। প্রতিদিন যে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে সেটা বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে। আমরা নানা মাপে, নানা মাত্রায় বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
আয়োজকরা জানান, এই বছর দ্বিতীয়বারের মতো গ্রন্থমেলার অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা বইমেলা সবার জন্য খোলা। এ ছাড়া শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে সেগুলো হলো শিখর, সংগ্রাম, মুক্তি ও অর্জন।
জানা গেছে, আজ বিকাল ৩টায় গ্রন্থমেলা উদ্বোধন শেষে মেলা পরিদর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আকর্ষণ হিসেবে থাকছে বঙ্গবন্ধু রচিত তৃতীয় বই বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই গ্রন্থ উন্মোচন করবেন।
একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলা একাডেমির ২টি প্যাভিলিয়ন, ৪ ইউনিটের ২টি, একাডেমির শিশুকিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি এবং একাডেমির সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকারের ১টি স্টল থাকবে। এবারও শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। এ কর্নারকে শিশুকিশোর বিনোদন ও শিক্ষামূলক অঙ্গসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।
মাসব্যাপী গ্রন্থমেলায় এবারও ‘শিশুপ্রহর’ ঘোষণা করা হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০-এর প্রচার কার্যক্রমের জন্য তথ্যকেন্দ্র থাকবে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এ ছাড়া মেলায় আগত মানুষের বসার স্থানসহ নান্দনিক ফুলের বাগানও নির্মাণ করা হয়েছে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: