মৃত্যু ঝুঁকিতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ


প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৭

আপডেট:
৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৪৩

মৃত্যু ঝুঁকিতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

বিশ্বজুড়ে সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের স্বাস্থ্য মারাত্মক খারাপ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তার এক আইনজীবী। অস্ট্রেলিয়ার আইজনজীবী ও উইকিলিকসের উপদেষ্টা গ্রেগ বার্নস বলেছেন, লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে মুক্ত না হলে তার স্বাস্থ্যের এমন অবনতি পারে যেখানে তার মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।



অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম আইটিওয়ারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী দলের সদস্য বার্নস এই মন্তব্য করেন। বিগত ছয় বছর ধরে চিকিৎসার সুযোগ বঞ্চিত অ্যাসাঞ্জের স্বাস্থ্যের খবর জানতে ওই আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আইটিওয়ার।



গত ছয় বছর ধরে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে বসবাস করছেন অ্যাসাঞ্জ। যুক্তরাজ্য সরকার তাকে গ্রেপ্তার করা ছাড়া ওই দূতাবাস ভবন ত্যাগ করতে বাধা দিয়ে আসছে। এমনকি চিকিৎসকের কাছে গেলেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে তাকে। এমন আশঙ্কায় দূতাবাস ছাড়তে পারছেন না গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষমতাধর দেশের সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দেওয়া অ্যাসাঞ্জ।



গ্রেগ বার্নস বলেন, প্রকাশ্যে উদার গণতন্ত্রের কথা বলা একটা সরকারের এটা নিষ্ঠুর ও অমানবিক অবস্থান।



গত জুনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মরেনো অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুরক্ষার অবসান ঘটাতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। তবে এখনো সেরকম কিছু ঘটেনি।



চলতি বছরের মার্চে স্বাধীনতার দাবিতে কাতালোনিয়াবাসীর বিক্ষোভে স্পেন সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলার পর অ্যাসাঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ইকুয়েডর। তারপর থেকেই ইন্টারনেট বিহীন অবস্থায় রয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া ও ইকুয়েডরের নাগরিকত্বের অধিকারী অ্যাসাঞ্জ ২০১২ সাল থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে অবস্থান করছেন।



গ্রেগ বার্নস বলেন, উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো অ্যাসাঞ্জকে সবসময় মানসিকভাবে এতবেশি সতর্ক থাকতে হয় যাতে করে ছয় বছর ধরে নিরবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক আলো ও মুক্ত বাতাস বঞ্চিত থাকার অলঙ্ঘনীয় প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে শরীরবৃত্তীয় কার্যক্রম সচল থাকতে পারে।



তিনি বলেন, এই মামলায় যদি কোনো সমাধান না হয়-অন্য কথায় যুক্তরাজ্য সরকার যদি তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে না দেওয়ার নিশ্চয়তা না দেয়-তাহলে বাস্তবতা হলো অ্যাসাঞ্জের স্বাস্থ্য এমন পর্যায়ের খারাপ হয়ে পড়তে পারে যাতে তার জীবন মারাত্মক বিপদের মুখে পড়বে।



উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৯ জুন জামিনের শর্ত ভঙ্গ করে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে ঢুকে পড়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জানান। ব্রিটিশ পুলিশ দূতাবাস ভবন ঘিরে রেখে তার বাইরে বের হওয়ার যাবতীয় সুযোগ বন্ধ করে রাখে। জামিনের শর্ত ভঙ্গ করায় ব্রিটেনের আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। ২০১২ সালের আগস্টে অ্যাসাঞ্জের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর। তখন থেকেই দূতাবাস ভবনের চার দেওয়ালের ভেতরে বন্দি জীবন কাটছে তার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইকুয়েডরের সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফায়েল করিয়া অ্যাসাঞ্জকে দেশটির নাগরিকত্ব দেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top