আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
প্রকাশিত:
৮ নভেম্বর ২০২০ ২৩:৪৯
আপডেট:
২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৩৩

প্রভাত ফেরী: অবসান হলো টানা চার দিনের উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। এলো সেই কাক্সিক্ষত ঘোষণা। হোয়াইট হাউসে চার বছরের জন্য বসতি গড়লেন জো বাইডেন। পেনসিলভানিয়ায় জয়ের মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়ে আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী জো বাইডেন।
৭৭ বছর বয়সি জো বাইডেন হচ্ছে আমেকিার সবচেয়ে বয়সি প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়া এ নির্বাচনে তিনি যত পপুলার ভোট পেয়েছেন সে পরিমাণ ভোট এর আগে কোনো প্রেসিডেন্ট পাননি। নির্বাচিত হওয়ার পরপরই এক টুইন বার্তায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন রাজনীতিতে অতি সজ্জন ও ভদ্র হিসেবে বিবেচিত জো বাইডেন। তিনি বলেন আমি আমেরিকার সবার প্রেসিডেন্ট। সকালের জন্য সমানভাবে কাজ করব। নির্বাচিত হবার কিছক্ষণের মধ্যে বিশ^ নেতাদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হতে শুরু করেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক। তাকে ইতোমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেস পার্টির নেতা রাহুল গান্ধীসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সবশেষ খবর অনুয়ায়ী বাইডেনের প্রাপ্ত ইলেক্টোরাল ভোট ২৯০টি। প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য তার প্রয়োজন ছিল ২৭০ ভোট। ট্রাম্পের ইলেক্টোরাল ভোট সংখ্যা ২১৪। নির্বাচনে বাইডেন পপুলার ভোট পেয়েছেন ৭ কোটি ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭০টি যা প্রদত্ত ভোটের ৫০ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ভোট পেয়েছেন ৭ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার ১৬৩টি যা প্রদত্ত ভোটের ৪৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
শুক্রবার ভোট গণনা শেষে ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোর কয়েকটিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে আরও এগিয়ে যান তিনি। প্রায় সব জায়গায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। সিএনএনের আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন ‘ডিসিশন ডেস্ক’ ঘোষণা দেয় নির্বাচনি ফলাফল জো বাইডেনের পক্ষে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবেও বাইডেনের নাম ঘোষণা করেছে তারা। এ ঘোষণার বিভিন্ন এলাকায় বাইডেন সমর্থদের উল্লাস করতে দেখা যায়। রীতিমতো নীল উৎসবে মেতে ওঠেন তারা।
‘ডিসিশন ডেস্ক’ এক টুইট বার্তায় জানায়, বাইডেন পেনসিলভানিয়ায় জয়ী হয়েছেন। সেখানে ২০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। আগে এগিয়ে থাকা ২৫৩টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সঙ্গে পেনসিলভানিয়ার ২০টি যোগ করে তারা জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন জয়ী হয়েছেন বলেও ঘোষণা দেয় ডিসিশন ডেস্ক।
এর আগে ডিসিশন ডেস্ক জানায়, ফিলাডেলফিয়া থেকে পোস্টাল ব্যালট আসার পরই পেনসিলভানিয়া রাজ্যে সাড়ে ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে ট্রাম্পকে পেছনে ফেলেন বাইডেন। সেখানে এখনও ১ লাখের বেশি ভোট গণনার বাকি। গণনার বাকি ভোটগুলো বাইডেনের পক্ষে যাবে বলেও দাবি তাদের। এ রাজ্যে ট্রাম্পের জয়ের বাস্তব কোনো সম্ভাবনা নেই। তারপরও গণমাধ্যম এবং পর্যবেক্ষকরা জো বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণায় দ্বিধাগ্রস্ত। বলা হয় ডিসিশন ডেস্কের টুইটে।
য্ক্তুরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ডেলাওয়ারের উইলমিংটন থেকে এক ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘আমার প্রিয় আমেরিকাবাসী, আমরা এখনও বিজয়ের চূড়ান্ত ঘোষণা পাইনি, তবে (ভোটের) সংখ্যাই আমাদের এটা পরিষ্কার করে বলে দিচ্ছে। আমরা এই নির্বাচনে জিততে যাচ্ছি, পরিষ্কার ব্যবধানেই জিততে যাচ্ছি।’
অপরদিকে শুক্রবার এক টুইটবার্তায় ট্রাম্প বলেন, জো বাইডেনের ‘অন্যায়ভাবে’ প্রেসিডেন্টের অফিস দাবি করা উচিত হবে না। আমিও দাবি করতে পারি। আইনি কার্যক্রম এখনই শুরু। ট্রাম্প আরও বলেন, এটা আর কেবল একটি একক নির্বাচনের বিষয় নয়। এটা আমাদের সমগ্র নির্বাচনি প্রক্রিয়ার শুদ্ধতার বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ যেন আমাদের সরকারের ওপর আস্থা পায় তা নিশ্চিত করতে আমরা এই প্রক্রিয়াকে আইনের যতগুলো দিক আছে সবগুলোর ভেতর দিয়ে নিয়ে যাব বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে ট্রাম্পের আর আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু নেই বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা। সিএনএনকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি ছিল এক ধরনের মিথ্যাচার। ওই ঘটনার পর হোয়াইট হাউসের অনেক কর্মকর্তা তাদের বিভাগীয় প্রধানদের কাছে ট্রাম্পের পরবর্তী করণীয় নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানান।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের পরবর্তী করণীয় হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই উপদেষ্টা বলেন, সেটা ঈশ^র ভালো জানেন। এদিকে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের পরামর্শক ম্যাট মরগান বলেছেন, এই নির্বাচন এখনও শেষ হয়ে যায়নি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, চার রাজ্যের ফলের ভিত্তিতে জো বাইডেনের জয়ের যে ভুয়া আভাস দেওয়া হচ্ছে তা বাস্তবতা থেকে বহু দূরে।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: