সুখের সন্ধান পেতে বুদ্ধের কিছু মূল্যবান বাণী


প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০১৯ ১৮:৩৩

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:২২

সুখের সন্ধান পেতে বুদ্ধের কিছু মূল্যবান বাণী

গৌতম বুদ্ধ ছিলেন একজন শ্রমণ (তপস্বী) ও জ্ঞানী। যাঁর শিক্ষার ভিত্তিতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তিত হয়। বৌদ্ধধর্ম গৌতম বুদ্ধ কর্তৃক প্রচারিত একটি ধর্ম বিশ্বাস এবং জীবন দর্শন। খ্রিষ্টপূর্ব আনুমানিক ৫৬৩ অব্দে প্রাচীন ভারতের পূর্বাঞ্চলে এক শুভ বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে লুম্বিনী নদীর তীরে জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধ। 



গৌতম বুদ্ধ হলেন বৌদ্ধধর্মের কেন্দ্রীয় চরিত্র। বৌদ্ধরা তাঁকে সেই বোধিপ্রাপ্ত বা দিব্য শিক্ষক মনে করেন, যিনি সম্পূর্ণ বুদ্ধত্ব অর্জন করেছেন এবং নিজের অন্তর্দৃষ্টির কথা সকলকে জানিয়ে চেতন সত্ত্বাদের পুনর্জন্ম ও দুঃখের সমাপ্তি ঘটাতে সাহায্য করেছেন। 



বৌদ্ধরা বিশ্বাস করেন, গৌতম বুদ্ধের জীবনকাহিনি, কথোপকথনের বিবরণ, সন্ন্যাস নিয়মাবলি তাঁর মৃত্যুর পর তার অনুগামীরা সূত্রায়িত করেন এবং স্মরণে রাখেন। প্রায় ৪০০ বছর পরে তাঁর উপদেশ হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন সংকলন মৌখিক প্রথা থেকে প্রথম লিপিবদ্ধ হয়।



গৌতম বুদ্ধ মানুষের জীবনে সুখ প্রাপ্তির সন্ধান ও দুঃখ মোচনের উপায় বাতলে দিয়েছেন। জরা, রোগ, মৃত্যু- এ সবই দুঃখ। বুদ্ধের মতে মানুষের কামনা-বাসনাই দুঃখের মূল। মাঝে মাঝে যে সুখ আসে তাও দুঃখের মিশেলে এবং অস্থায়ী। 



নির্বাণ বা মুক্তি লাভ কিংবা কামনা-বাসনা থেকে মুক্তি লাভের মধ্য দিয়ে দুঃখের অবসান ঘটে বলে মনে করতেন গৌতম বুদ্ধ। নির্বাণ লাভ হলে পূর্ণ শান্তিরও সন্ধান মেলে। সত্যজ্ঞান, আনন্দ ও ইতিবাচকতার জন্য মানুষ বুদ্ধের স্মরণ নেয়। 



জীবনকে দুঃখ ও জরামুক্ত করতে গৌতম বুদ্ধের ৩১টি বাণী তুলে ধরা হলো:



১. অতীতকে প্রাধান্য দিও না, ভবিষ্যত নিয়ে দিবাস্বপ্নও দেখবে না। তার চেয়ে বরং বর্তমান মুহূর্ত নিয়ে ভাবো।



২. সবকিছুর জন্য মনই আসল। সবার আগে মনকে উপযুক্ত করো, চিন্তাশীল হও। আগে ভাবো তুমি কী হতে চাও।



৩. আনন্দ হলো বিশুদ্ধ মনের সহচর। বিশুদ্ধ চিন্তাগুলো খুঁজে খুঁজে আলাদা করতে হবে। তাহলে সুখের দিশা তুমি পাবেই।



৪. তুমিই কেবল তোমার রক্ষাকর্তা, অন্য কেউ নয়।



৫. জীবনের প্রথমেই ভুল হওয়া মানেই এই নয় এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। এর থেকে শিক্ষা নিয়েই এগিয়ে যাও।



৬. অনিয়ন্ত্রিত মন মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে। মনকে প্রশিক্ষিত করতে পারলে চিন্তাগুলোও তোমার দাসত্ব মেনে নেবে।



৭. তোমাদের সবাইকে সদয়, জ্ঞানী ও সঠিক মনের অধিকারী হতে হবে। যতই বিশুদ্ধ জীবনযাপন করবে, ততাই উপভোগ করতে পারবে জীবনকে।



৮. আমরা অনেকেই একটা কিছুর সন্ধানে পুরো জীবন কাটিয়ে দেই। কিন্তু তুমি যা চাও তা হয়তো এরইমধ্যে পেয়েছ। সুতরাং, এবার থামো।



৯. সুখের জন্ম হয় মনের গভীরে। এটি কখনও  বাইরের কোনো উৎস থেকে আসে না।



১০. অন্যের জন্য ভালো কিছু করতে পারাটাও তোমার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।



১১. জীবনের খুব কম মানুষের জীবনে পরিপক্কতা আসে। সঙ্গী হিসেবে এই পরিপক্কতাকে তোমার অর্জন করতে হবে। তবে তা ভুল মানুষকে অনুসরণ করে নয়। এই পরিপক্কতা অর্জনে বরং একলা চলো নীতি অনুসরণ করো।



১২. করুণাই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি।



১৩. সুখ কখনও আবিষ্কার করা যায় না। এটি সবসময় তোমার কাছে আছে এবং থাকবে। তোমাকে কেবল দেখার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।



১৪. রেগে যাওয়া মানে নিজেকেই শাস্তি দেওয়া। 



১৫. সত্যিকারভাবে ক্ষমতা নিয়ে বাঁচতে হলে নির্ভয়ে বাঁচো।



১৬. জীবনে ব্যাথা থাকবেই, কিন্তু কষ্টকেই ভালোবাসতে শেখো।



১৭. অনেক মোমবাতি জ্বালাতে আমরা কেবল একটি মোমবাতিই ব্যবহার করি। এর জন্য ওই মোমবাতিটির আলো মোটেও কমে না। সুখের বিষয়টিও এমনই। 



১৮. যখন আমরা মনের রূপান্তর ঘটাই, আর চিন্তাগুলো বিশুদ্ধ করি, তখন আমরা অন্যায় কাজ থেকে জীবনকে পরিশুদ্ধ করি। এর মাধ্যমে খারাপ কাজের চিহ্নও মুঁছে যায়।



১৯. অন্যকে কখনও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করো না, নিয়ন্ত্রণ করো কেবল নিজেকে।



২০. আলোকিত হতে চাইলে প্রথমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করো।



২১. জ্ঞানগর্ভ জীবনের জন্য মুহূর্তের ইতিবাচক  ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই জন্য ভয়কে তুচ্ছ করতে হবে, এমনকি মৃত্যুকেও।



২২. এই তিনটি সর্বদা দেখা দেবেই: চাঁদ, সূর্য এবং সত্য।



২৩. ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের সমন্বয়ই জীবন। কেবল একটি সঠিক মুহূর্ত পাল্টে দেয় একটি দিন। একটি সঠিক দিন পাল্টে দেয় একটি জীবন। আর একটি জীবন পাল্টে দেয় গোটা বিশ্ব।



২৪. নিজের কথার মূল্য দিতে হবে নিজেকেই। কেননা, তোমার নিজের কথার ওপর নির্ভর করবে অন্যের ভালো কাজ কিংবা মন্দ কাজ।



২৫. ঘৃণায় কখনও ঘৃণা দূর হয় না। অন্ধকারে আলো আনতে তোমাকে কোনো কিছুতে আগুন জ্বালতেই  হবে।



২৬. শুভর সূচনা করতে প্রত্যেক নতুন সকালই তোমার জন্য এক একটি সুযোগ।



২৭. আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন আরেকজনের পরিপূরক। অর্থাৎ সমাজে আমরা কেউ একা নই।



২৮. খারাপটি সর্বদা তুমি নিজেই পছন্দ করছো। সুতরাং, তোমার খারাপ কাজের জন্য তুমি নিজেই দায়ী। এর দায়ভার অন্য কারো নয়।



২৯. তোমার চিন্তাই তোমার শক্তির উৎস। নেতিবাচক চিন্তা তোমাকে অনেক বেশি আঘাত করে যা তোমার ধারণায় নেই।



৩০. নির্বোধ বন্ধু আদৌ কোনো বন্ধু নয়। নির্বোধ বন্ধু থাকার চেয়ে একা হওয়া অনেক ভালো।



৩১. তুমি মুখে কী বলছো সেটি কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো তোমার কাজ। 



(তথ্যসূত্র: সংগৃহিত)


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top