সিডনী সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে চ্যাম্পিয়ন জেমকন খুলনা


প্রকাশিত:
১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:০৫

আপডেট:
৬ মে ২০২৪ ১৭:৩৮

 

প্রভাত ফেরী: মাত্র চারটি ম্যাচ জিতেই প্লে-অফ খেলার সুযোগ পেয়েছিল জেমকন খুলনা। সেই তারাই পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দলকে পর পর দুইবার হারিয়ে শিরোপা জিতলো। প্রথম কোয়ালিফায়ারে গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামকে ৪৭ রানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল খুলনা। শুক্রবার জমজমাট ফাইনালেও খুলনার কাছে পাত্তা পায়নি চট্টগ্রাম। ৫ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম শিরোপা ঘরে তোলে জেমকন খুলনা। দলকে শিরোপা জেতাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ ও শহীদুল। ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহর পর বোলিংয়ে শহীদুল ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখেন।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। ক্রিজে মোসাদ্দেক-সৈকত আলী। মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহ মিলে শহীদুলকে খানিকক্ষণ বোঝালেন! পুরো ওভারটিই অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারের কথামতো করলেন এই পেসার। ১৬ রানের জায়গায় মিঠুনরা নিতে পারলেন ১০ রান। খুলনা জয়ী ৫ রানে।

সাকিব-মাহমুদউল্লাহ-ইমরুল-এনামুল-আল আমিন-শুভাগতদের নিয়ে শক্তিশালী দলই গড়েছিল খুলনা। টুর্নামেন্টের শেষের দিকে মাশরাফির অন্তর্ভুক্তি খুলনাকে আরও শক্তিশালী করেছে। তবু লিগ পর্বে প্রত্যাশা মতো পারফরম্যান্স করতে পারেনি খুলনা। ৮ ম্যাচের চারটিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে থেকে প্লে-অফ খেলে মাহমুদউল্লাহর খুলনা। কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলে আগের ব্যর্থতা ভুলিয়ে দেন তার। ফাইনালে টপঅর্ডার ব্যর্থ হলেও মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ব্যাটিং চট্টগ্রামকে ১৫৬ রানের সন্তোষজনক লক্ষ্য দিতে সক্ষম হয়।

১৫৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে চট্টগ্রামের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই দলের প্রাণভোমরা হয়ে ছিলেন সৌম্য-লিটন। দলীয় ২৬ রানে সৌম্যর বিদায়ে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন বিপিএলে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের শিষ্যরা। এরপর ৫ বলে ৭ রান করে আল আমিনের লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে মিঠুন বিদায় নিলে আরও চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম।

তৃতীয় উইকেটে সৈকত আলীকে সঙ্গে নিয়ে ভালো শুরু করেছিলেন লিটন। কিন্তু ১৬ রানের জুটিতে আবারও ভাঙন ধরে চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইনে। শহীদুলের দুর্দান্ত এক থ্রোতে ২৩ বলে ২৩ রান নিয়ে বিদায় নেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান করা লিটন। শুরুতে ধীর-স্থির ব্যাটিং করা সৈকত আলী অবশ্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে গেছেন। যদিও সেই চেষ্টা সফল হয়নি। ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রান তুলে চট্টগ্রামের ইনিংস থেমে যায়। লিটনের বিদায়ের পর শামসুরকে নিয়ে ৪৫ রানের জুটি গড়েন সৈকত। শামসুর ২১ বলে ৩ চারে ২৩ রান করে আউট হন। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রানের ইনিংসটি খেলেন সৈকত। ৪৫ বলে ৪  ছক্কায় সৈকত ৫৩ রানে আউট হন। এর আগে মোসাদ্দেক আউট হয়েছেন ১৯ রান করে।

খুলনার বোলারদের মধ্যে মাশরাফি আজকে ছন্দে ছিলেন না। ৪ ওভার বোলিং করে ৪০ রান খরচায় উইকেট শূন্য ছিলেন মাশরাফি। শহীদুল ৩৩ রান খরচায় সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন। শুভাগত হোম, হাসান মাহমুদ ও আল আমিন একটি করে উইকেট নিয়েছেন। এর আগে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৫৫ রান। শেষ ৫ ওভারে মাহমুদউল্লাহর ঝড়ে খুলনার স্কোরবোর্ডে জমা পড়ে ৪১ রান। টুর্নামেন্টের বেশিরভাগ ম্যাচেই টপঅর্ডারের ব্যর্থতায় কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল খুলনাকে। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের ৭০ রানে মান বাঁচে খুলনার।

ইনিংসের প্রথম বলে ওপেনার জহুরুল মিডঅফে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। শূন্য রানে উইকেট হারানো খুলনা পুরো ইনিংসজুড়েই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। চতুর্থ উইকেটে কেবল আরিফুলকে সঙ্গে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ তাদের ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি গড়েন। এর আগে ইমরুল ৮ বলে ৮ এবং জাকির হাসান ২০ বলে ২৫ রান করে আউট হয়েছেন। এরপর আরিফুল ২৩ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিলে মাহমুদউল্লাহ-আরিফুলের ৪০ রানের জুটি ভাঙে।

এক চার ও এক ছক্কায় ভালো শুরু পাওয়া শুভাগত হোমও ইনিংসটি বড় করতে পারেননি। শরিফুলের বলে লংঅনে ক্যাচ দিয়ে বিদায়ের আগে ১২ বলে ১৫ রান করেন এই অলরাউন্ডার। এদিকে এক প্রান্ত আগলে রাখা মাহমুদউল্লাহ টুর্নামেন্টের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলেছেন। শরিফুলকে স্কুপ করে চারের সাহায্যে হাফসেঞ্চুরির কোটা পূর্ণ করেন এই অলরাউন্ডার। তার ব্যাটের ওপর ভর করে খুলনা ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান তোলে। ইনিংসের শেষ ওভারে সৌম্যকে ২ চার ও এক ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ তোলেন ১৭ রান। নয়তো খুলনার ইনিংস দেড়শ’র নিচেই আটকে যেত! মাহমুদউল্লাহ ৪৮ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৭০ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন।

চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে নাহিদুল ১৯ রানে দুটি এবং শরিফুল ৩৩ রানে দুটি উইকেট নেন। এছাড়া মোস্তাফিজ ও মোসাদ্দেক একটি করে উইকেট নিয়েছেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top