সিডনী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


মেসির লাল কার্ডে বার্সেলোনার কফিনে শেষ পেরেক!


প্রকাশিত:
১৮ জানুয়ারী ২০২১ ১৮:০৯

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:১২

 

প্রভাত ফেরী: বার্সেলোনার ঘুরে দাঁড়ানো এমনিতেই ছিল বেশ কঠিন। ২-৩ গোলে পিছিয়ে থাকার পরে আবার নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটালেন লিওনেল মেসি। ডি-বক্সের বাইরে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে অহেতুক মাথায় আঘাত করে বসলেন এবং দেখলেন বার্সেলোনা ক্যারিয়ারের প্রথম লাল কার্ড।

এর ফলে বার্সেলোনার কফিনে শেষ পেরেক বসিয়ে দিলেন মেসি। এর আগেই তাদের শিরোপাস্বপ্ন শেষ করে দিয়েছিল অ্যাথলেটিকো বিলবাও। মূল ম্যাচের ৯০ মিনিটের পর অতিরিক্ত দেয়া ৩০ মিনিটে নিজেদের জয় নিশ্চিত করে রেখেছিল বিলবাও। দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার শিরোপার খুব কাছে গিয়েও রিক্ত হস্তে ফিরতে হয়েছে মেসি-গ্রিজম্যানদের।

রোববার রাতে সেভিয়ার মাঠে স্প্যানিশ সুপার কাপের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল বার্সেলোনা ও অ্যাথলেটিকো বিলবাও। যেখানে স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট ছিল বার্সেলোনা। তার ওপর দুই দলের সবশেষ লড়াইয়েও বার্সার ছিল ৩-২ গোলের সুখস্মৃতি। কিন্তু এবার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বদলে গেল সকল হিসেবনিকেশ।

স্পেনের ঘরোয়া ফুটবল মৌসুমের প্রথম শিরোপা ঘরে তুলেছে বিলবাও। বার্সেলোনাকে তারা হারিয়ে ৩-২ গোলেই। দুইবার এগিয়ে গিয়েও ম্যাচের ফল নিজেদের হাতে রাখতে পারেনি বার্সা। দলের পক্ষে জোড়া গোল করেছেন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। বিলবাওয়ের হয়ে গোল করেছেন অস্কার ডি মার্কোস, আসিয়ের ভিয়ালিবরে এবং ইনাকি উইলিয়ামস।

সেমিফাইনাল ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে এসেছিল বিলবাও। সেই ম্যাচের আত্মবিশ্বাসের ছাপ স্পষ্ট ছিল ফাইনালেও। পুরো ম্যাচে মাত্র এক তৃতীয়াংশ সময় বলের দখল ছিল তাদের পায়ে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেই বার্সেলোনার চেয়ে বেশি আক্রমণ সাজিয়েছে মার্সেলিনোর শিষ্যরা।

ম্যাচের ঘণ্টাছয়েক আগেও মেসির খেলা নিয়ে ছিল অনিশয়তা। তবে শেষপর্যন্ত তিনি মাঠে নামেন, খেলেন পুরো ১২০ মিনিট। কিন্তু খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেননি ম্যাচে। যা কিছু সুযোগ তিনি তৈরি করেছেন, সেগুলো আবার যথাযথ কাজে লাগাতে পারেনি তারা সতীর্থরা। উল্টো শেষদিকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে।

ঢিমে তালে চলতে থাকা ম্যাচে প্রথম গোলের চেষ্টা দেখা যায় ২৬ মিনিটে গিয়ে। শেষমেশ প্রথম গোল আসে ৪০ মিনিটে। মেসির বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়েও শট নেননি জর্দি আলবা। তিনি ফিরতি পাস দেন মেসিকে, জটলার মধ্যে ভালোভাবে শট নিতে পারেননি মেসি। তবে ফাঁকায় পেয়ে যান গ্রিজম্যান এবং এগিয়ে দেন দলকে।

তবে দুই মিনিটের মধ্যেই সমতা ফেরায় বিলবাও। ইনাকি উইলিয়ামসের ক্রসে পাওয়া বল ধরে সহজেই জালে জড়ান মার্কোস। এ গোলে পুরো দায় বলা চলে আলবার। কেননা তিনি প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের দিকে নজর না দিয়ে পুরো সময় ব্যস্ত ছিলেন বলের দিকে খেয়াল রাখতে। সেই সুযোগেই গোল করেন মার্কোস।

দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আবারও গ্রিজম্যানের গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে বাম পাশ থেকে ডি-বক্সের মধ্যে পাস এগিয়ে দেন আলবা। সেটি থেকে প্লেসিং শটে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন ফরাসি স্ট্রাইকার। মনে হচ্ছিল, এ গোলেই হয়তো শিরোপার সুঘ্রাণ পেতে চলেছে কাতালানরা।

কিন্তু না! ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের একদম শেষ মিনিটে আবারও সমতা ফেরায় বিলবাও। এবার ইকার মুনিয়াইনের দারুণ ফ্রি-কিকে জালের খুব কাছ থেকে আলতো পা ছুঁইয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আসিয়ের। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে এবং বিলবাও পেয়ে যায় লাইফলাইন।

অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটের খেলা শুরুর পর মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই লিড নেয় বিলবাও। ইনাকি উইলিয়ামসের কোনাকুনি জোরালো শটে পাওয়া গোলটিই হয়ে থাকে শিরোপা নির্ধারক। এরপর আর চেষ্টা করেও ম্যাচে সমতা ফেরাতে পারেনি বার্সেলোনা। হেরে যায় ম্যাচ। ম্যাচের ১১০ মিনিটের সময় অল্পের জন্য আত্মঘাতী গোল পায়নি বার্সেলোনা।

নির্ধারিত ১২০ মিনিট শেষে যখন চলছিল অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের খেলা, তখন ডি-বক্সের অনেক বাইরে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে অহেতুক মাথায় আঘাত করেন মেসি। ভিডিও এসিসট্যান্ট রেফারির সাহায্য নিয়ে তাকে দেখানো হয় লাল কার্ড। বার্সার হয়ে ৭৫৩তম ম্যাচে এসে প্রথম লাল কার্ড দেখলেন মেসি।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top