সিডনী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

নীলাম্বরী অস্ট্রেলিয়া : শাহান আরা জাকির


প্রকাশিত:
১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৪

আপডেট:
১৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০৪

ছবিঃ শাহান আরা জাকির

 

অস্ট্রেলিয়া যাবার প্রস্তুতি:
অস্ট্রেলিয়ার স্থায়ী নাগরিক আমার একমাত্র কন্যা শ্রাবন্তী কাজী!স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করছে!
সেখানে যাবো যাবো ভাবছি অনেকদিন থেকেই ! যে সময়ের কথা বলছি,সেটা ছিল 2013 সালের কথা! ২০১৩ সালে আধুনিক জীবনযাত্রার সব কিছুই অস্ট্রেলিয়ায় ছিল সহজলভ্য। তাই সেসময় বিশ্বের এক নম্বর সুখী দেশ ছিল অস্ট্রেলিয়া। সমৃদ্ধ অর্থনীতি এবং উন্নত জীবনযাত্রার কারণে সুখী দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে স্বীকৃতি দিয়েছিল অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) সংস্থাটি। বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশের জনগণের আয়, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও গৃহায়ন ব্যবস্থার ওপর জরিপ চালিয়ে এই তালিকা তৈরি করা হয়।

প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে এর আগের দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্ট্রেলিয়া তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছিল। ২০০৯ সালে বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও যে কয়টি উন্নত দেশ তাদের আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া তাদের অন্যতম।
সে সময় অস্ট্রেলিয়ার ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চাকরি করে আয় করে থাকে, যা ওইসিডির গড়ের চেয়েও বেশি। আর দেশটির গড় আয়ু হচ্ছে ৮২ বছর।

এসব সম্মিলিত কারণেই অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষের দেশ হিসেবে উঠে এসেছিল।
এ সব খবর শুনে শুনে আরো বেশি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য মনটা খুব খচ খচ করতো!
অবশেষে তিনমাসের ভিসা পেলাম আমরা!
যাবার প্রস্তুতি চলতে থাকলো নিরব আনন্দে!


ঢাকা টু সিঙ্গাপুরঃ
মার্চ
২০১৩ আমরা যাবার দিনক্ষণ ঠিক করলাম!
নির্দিষ্ট তারিখে আমরা দুজনে রওয়ানা হলাম সিডনীর উদ্দেশ্যে!
যথাসময়ে পৌছে গেলাম ঢাকা শাহজালাল এয়ারপোর্টে!ঢাকা টু সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স এ আমরা যাবো!কর্তা সরকারী পাসপোর্ট ধারি !সরকারী পাসপোর্ট এর একটা মর্যাদা আছে বোঝা গেলো !তারপর তিনি একজন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা !একটা বিষয় লক্ষ্য করলাম ,এতদিন যা বুঝতে পারিনাই ,আজ তা অদ্ভুতভাবে বুঝলাম ۔۔۔۔এয়ারপোর্টে কর্তৃব্যরত সকল কর্মকর্তা এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বারংবার স্যালুট দিচ্ছে!গর্বে আমার অনেকদিনের ক্ষোভকে দূর করে দিলো!
এতদিনে যেন এই মুক্তিযোদ্ধা প্রকৃত মূল্যায়ন পেলো!
তারপর সরকারি পাসপোর্টধারী!
খুব যত্ন সহকারে কর্তব্যরত কর্মকর্তা হুইল চেয়ারে তাকে বিমানের সকল প্রয়োজনীয় কাজে সহায়তা করলেন! সিঙ্গাপুর এ দুইঘন্টার ট্রানজিট!
রাত দশটা পঁয়তাল্লিশ মিনিট এ বিমান আকাশে উড়াল দিলো !দেশের বাইরে বিমানে আরোহন এই জীবনের প্রথম!
জানালার পাশে আমাদের সিট!
সব ধরনের জার্ণিতেই জানালার পাশে আমার সিট চাই!প্রকৃতি দেখতে কার না ভালো লাগে !
বিমান উড্ডয়ন করলো!আলো ঝলকানির ঢাকা শহরটা উপর থেকে দেখলাম দুচোখ ভরে!উপর থেকে ঢাকা শহর অন্যরকম লাগছিলো দেখতে !দেখছি দুনয়ন ভরে আমার সোনার বাংলাদেশকে!ধীরে ধীরে পুরো বাংলাদেশ নিয়ন আলোর সরু ঝলমল আলোর আঁকাবাঁকা পথে মিলিয়ে গেলোএকসময়!
আকাশের উপর দিয়ে উড়ছি!সাদা সাদা মেঘ আর মেঘ!
রাতের আকাশ আরো অপরূপ মনে হলো!
একটা অদ্ভুত পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম নিজের
মধ্যে!সাধারণতঃ একটা ব্রিজ এর উপর দিয়ে স্থলপথে যাবার সময় আমার সারা শরীর কেমন একটু কাঁটা দিয়ে উঠতো!অথচ আজ কত হাজার হাজার মাইল উচ্চতায় উড়ে যাচ্ছি কোন ভয় ভীতিই কাজ করছেনা আমার মনের মধ্যে !
অন্যরকম একটা আমেজ অনুভব করছিলাম ۔۔যেন পরী হয়ে তারা খচিত মেঘের মধ্য দিয়ে উড়ে উড়ে যাচ্ছি কোন তেপান্তরের দেশে! কিছুক্ষন পরপর এয়ারহোস্টেজ মিষ্টি মেয়েরা চা নাস্তা ফলের জুস যাত্রীদের সরবরাহ করছে!
কর্তাবাবু খুব মজা করে করে খাচ্ছে আর আমার জন্য রেখে দিচ্ছে!বারেবারে খাওয়া দাওয়া, স্ক্রিনে টিভি দেখা, ম্যাগাজিন পড়া, ভিন্নরকম ভালো লাগছিলো!
কখন সময় কোনদিক দিয়ে পার হয়ে গেলো বুঝলামই না !
মাত্র চার ঘন্টা হতে না হতেই বিমান সিঙ্গাপুরে পৌছে গেলো!
তখন সময় বা ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তন হয়েছে! সিঙ্গাপুর সময় ভোর সাড়ে পাঁচটা!
দুঘন্টার ট্রানজিট! অপেক্ষা করতে হবে!
আমরা এয়ারপোর্ট এ ওয়েটিং রুম এ চলে এলাম!ফ্রেস হয়ে হালকা কিছু খেয়ে নিলাম!
বাইরে একটু ঘুরাঘুরি করতেই চেয়ে দেখি, ভোরের সূর্যটা কি অপরূপই না দেখাচ্ছে!
হেঁটে হেঁটে আমি দুচোখ ভোরে সিঙ্গাপুরের সকালটা দেখছি আর ছবি তুলছি মোবাইল এ!
কর্তা বসে আছেন চেয়ারে হেলান দিয়ে !
আমার দেখাদেখি সে ও হেঁটে হেঁটে চারদিকটা দেখতে থাকলো!আর্টিফিসিয়াল পা পরে একটি হ্যান্ড স্টিক হাতে হাঁটা দেখে কেউ কেউ জিজ্ঞেস করলেন তার পায়ের কি সমস্যা !আমি বুঝিয়ে বলতেই হাতজোড় করে স্যালুট ও হ্যান্ডশেক কোরলেন অনেকেই!বিদেশের মাটিতেও একজন বীর দেশপ্রেমিকের এমন শ্রদ্ধা ও অভিবাদনে আমার চোখে পানি এসে গেলো!
মনে মনে আমার সকল প্রবঞ্চনাকে থু মেরে উড়িয়ে দিলাম۔۔۔۔
দুঘন্টা পার হয়ে গেলো!আমরা বিমান চেঞ্জ করে সিডনীর পথে রওয়ানা হলাম!


শুভ সন্ধ্যা সিডনীঃ

সিঙ্গাপুর থেকে সিডনীর ফ্লাইট প্রায় সাত ঘন্টা!
কখনো সাড়ে সাত /আট ঘন্টাও লেগে যায়!
সিঙ্গাপুর সময় সকাল সাড়ে সাতটায় ফ্লাইট!
অন টাইম!
প্রায় চৌদ্দ /পনেরো ঘন্টার জার্নির অভিজ্ঞতা জীবনে এই প্রথম!তাও বিমানপথে!
বেশ মজাই লাগছিলো!
ক্ষণে ক্ষণে চা কফি জুস নানান পদের খানাদানা!
সিটপকেটে হরেক রকম ম্যাগাজিন!
কর্তা খুব মন দিয়ে ম্যাগাজিন পড়ছিলো আর সিটের সামনে টিভি স্ক্রিনে হিন্দি মুভি দেখছিলো!টিভি দেখা তার দারুন নেশা!ফাকে ফাকে অরেঞ্জ জুস কফি নাস্তা খাচ্ছেন!আর আমি দেখছিলাম আমার টিভি স্ক্রিনে বিমান কোথা দিয়ে উড়ে উড়ে যাচ্ছে!
তখন দিনের আলোয় পুরো পৃথিবীটা যেন দেখতে থাকলাম জানালা দিয়ে !মেঘের উপর দিয়ে ভেসে যাচ্ছি !
কিযে অপরূপ আকাশটা ۔۔যেন থোকা থোকা তুলার পাহাড়!
আর নিচে মহাসাগরের
বরফাচ্ছিদ পাহাড়ের স্তূপ ۔۔۔রাব্বুল এর অপরূপ সৃষ্টি দেখে চোখ যেন ভরছিল না !
আমি জানালা দিয়ে এসবই দেখে যাচ্ছিলাম!
আর আমার ভোজনরসিক কর্তা মশাই খুব মজা করে নানান পদের খাবার খাচ্ছিলেন!
দীর্ঘ প্লেনযাত্রায় খাবার অভিজ্ঞতাও মন্দ নয়!
প্লেনজার্নিতে খাওয়াটাও বেশ আনন্দের!
কিছুক্ষন পরপরই এয়ার হোস্টেজ খাবারের ট্রলি এনে জিজ্ঞেস করেন,কি খাবেন?
নানান পদের মেন্যু থাকে!যার যেটা পছন্দ!
ঢাকা থেকে আসার পথে
কর্তা চিকেন বিরিয়ানী খেয়েছে!আর আমি শুধু অরেঞ্জ জুস আইসক্রিম কাজুবাদাম পাস্তা এসব খেয়েছি!
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স এর খাবার আরো মুখরোচক লাগলো আমার কাছে!
ঐ একই খাবার আমার পছন্দ ۔۔۔পাস্তা চিকেন ব্রেড ভেজিটেবল কাজুবাদাম আইসক্রিম এসব!
সিডনী পৌছাতে এখনো অনেক দেরি আছে!
দুপুরের লাঞ্চ সেড়ে কর্তা দেখি নাক ডাকিয়ে ঘুমুচ্ছে!
আমি খুব আরাম করে জানালায় চোখ মেলে বাইরের দৃশ্য দেখতে থাকলাম!
তখন পড়ন্ত বেলা !
কি অদ্ভুত যে দেখাচ্ছে নিচের দিকে !যেন পুরো পৃথিবীটা একটা পেজা পেজা তুলোর মতো মেঘের পাহাড়!চোখ ফেরাতে পারছিলামনা!
অবশেষে বিমান সিডনী পৌছুলো স্থানীয় সময় সন্ধ্যে সাতটায়!
সাড়ে সাতটায় পৌঁছানোর নির্ধারিত সময় থাকলেও আধা ঘন্টা আগেই পৌছে গেছে!
ঢাকার সময় তখন দুপুর দুইটা!
অর্থাৎ ঢাকার সাথে তখন সিডনীর সময়ের দূরত্ব পাঁচ ঘন্টা প্লাস!পরে জেনেছি এপ্রিল মাসের তিন তারিখ থেকে অক্টবর মাসের প্রথম রবিবার পর্যন্ত সময়ের তফাৎ চার ঘন্টা!বাকি সময় শীতকালে ইউরোপ আমেরিকার মত অস্ট্রেলিয়াতেও একঘন্টা ডে লাইট পেতে সময় এগিয়ে দেয়া হয়!তখন সময়ের দূরত্ব হয় চার ঘন্টা!

সিডনি বিমানবন্দর হল বিশ্বের যে কোনো স্থানে ক্রমাগতভাবে পরিচালিত বাণিজ্যিক বিমানবন্দর। অন্যান্য সব অধ্যুষিত মহাদেশ থেকে সিডনিতে সরাসরি সংযোগকারী ফ্লাইট রয়েছে।
সেদিন এয়ারপোর্টে প্রচুর যাত্রী ছিল!সম্ভবত একাধিক ফ্লাইট ল্যান্ড করেছে!আমরা ইমিগ্রেশান লাইনে দাড়ালাম!
অস্ট্রেলিয়াতে আসার সময় লাগেজে কোন খাদ্যদ্রব্য,বীজ,কাঠের তৈরী জিনিস যদি কেউ আনে,তাহলে কাস্টমস এ ঘোষণা দিতে হয়!
না হলে ধরা পড়লে জরিমানা এমনকি ভিসা বাতিল হওয়ার ও সম্ভাবনা থাকে!আমাদের লাগেজ এ ওসব কিছুই ছিল না!
লাগেজ স্ক্যান করার পর বেড়িয়ে
এলাম!বেটা ও ছোট্ট তাসুমনি আমাদের রিসিভ করতে এসেছে!আমাদের দেখে তাসুমনি লজ্জায় শেষ!আঙ্গুল মোচড়াতে লাগলো
ঝকঝকে আবহাওয়া!
সন্ধ্যে হয়ে আসছে!
প্রায় এক ঘন্টা ড্রাইভ করে দানী বেটা আমাদেরকে কুয়াকার্স হিল,নিউ সাউথ ওয়েলস এ তাদের বাসায় নিয়ে এলো!দৌড়ে এলো মনা!প্রায় তিনবছর পর দেখা!
বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলাম!মুহূর্তে যেন বিশাল ওজনের কোন পাথর আমার বুক থেকে সরে গিয়ে আমার নিঃশ্বাস প্রশ্বাস শান্তির পরশে ভরে গেলো!
দূরে দাঁড়িয়ে তাসুমনি ও আমার গুড়িয়া রাজকন্যা বড় বড় গোল চোখে অবাক হয়ে দেখছিলো আমাদের!তার জন্ম এ দেশের মাটিতে!
এই প্রথম দেখা!
মনে পড়ে গেলো তার জন্মের খবর শুনেই একটি ছড়া লিখেছিলাম ۔۔۔টুনটুনি তুই কোথা থেকে কেমন করে এলি,
মিষ্টি হাসি দিয়ে সবার মন যে কেড়ে নিলি ۔۔
তোকে ছাড়া কেমনে থাকি শেকল দিলি মনে,
আটকে গেলো হৃদয়খানি মায়ার বাঁধনে ...
তুলতুলে তোর শরীরখানা একটুখানি দেহ,
সকল মায়া ছিনিয়ে নিলি পারলো না আর কেহ ..
তুই যে আমার হীরামানিক ছোট্ট চাঁদের বুড়ি,
হটাৎ এসে সব আদর যে তুই করলি চুরি ..
নরম কোমল দেহখানা এত্তোটুকু এই,
ভাবি আমি অবাক চোখে তোর তুলনা নাই...
কাছে টেনে আদর করতে চাইলাম!
ওরেব্বাবা ...তাসুমনির মতোই ঐ একই অবস্থা!লজ্জায় টুসটুসে মুখটা লাল হয়ে গেল!
বেশ রাত হয়ে গেছে !
মনা বিভিন্ন পদের মাছ মাংস রান্না করে রেখেছে!
অবাক হয়ে আগে তার রান্না দেখলাম!কিছুই রাঁধতে পারতোনা সে বিয়ের আগে আমার মতোই!আমি কত যে রান্নার বই তাকে কিনে দিয়েছিলাম এখানে আসার সময়!ফোনে রান্নার রেসিপি বলে বলে দিতাম!টেবিলে সাজানো খাবার দাবার দেখে মনে হলো , আমার সেই জাদুটা আজ পাকা রাঁধুনি!
ভেসে উঠলো আমার হারিয়ে যাওয়া বাবার প্রানবন্ত মুখখানা!আমার বিয়ের পর আমার রান্না দেখেও বাবা এমনি করে আমার মুখের দিকে
অবাক হয়ে চেয়ে থাকতেন আর মিটি মিটি হাসতেন খুশিতে!
ফ্রেস হয়ে খেতে বসলাম পরানবন্ধু ও আমি!
কিন্তু কি আশ্চর্য্য সব খাবারেই কেমন যেন গন্ধ লাগছে !এমনকি পানিতেও! অবশ্য লম্বা জার্নিতেও পেটে তেমন ক্ষুধা ছিলোনা!ভাবলাম প্লেনে বারেবারে নানান পদের খাবার খেয়েছি!সেজন্য হয়তো এমন লাগছে!
দেখি পরানবন্ধুও কেমন কাচুমাচু করছে!
পরে মনা ও বেটা বললো এখানে এলে সবারই নাকি প্রথম প্রথম এমন হয় !ফলমূল ছাড়া সব ধরনের খাবারে গন্ধ লাগে!
কিছুদিন থাকার পর ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়!
(চলবে)

 

শাহান আরা জাকির পারুল 
নাট্যকার, লেখক ও গবেষক

 

এই লেখকের অন্যান্য লেখা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top