সিডনী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


হাকিম আল-আরাইবির অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব লাভ


প্রকাশিত:
২৭ মার্চ ২০২০ ০৫:১০

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৫৬

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব হাতে ফুটবলার হাকিম আল-আরাইবি

২০১৯ সালের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক একটি খবর অস্ট্রেলিয়ান গণমাধ্যমে বেশ আলোড়ন তুলে। বাহরাইনি বংশোদ্ভুত ফুটবলার হাকিম আল-আরাইবি থাইল্যান্ডে তার সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর সাথে মধুচন্দ্রিমায় থাকার সময় স্থানীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। হাকিম দীর্ঘদিন যাবত বাহরাইন থেকে
পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে মেলবোর্নে বসবাস করছিলেন। কিন্তু ভুলবশত ইন্টারপোলের মাধ্যমে জারিকৃত একটি নোটিশের কারণে থাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে ব্যাংকক কারাগারে প্রেরণ করে এবং তাকে বাহরাইনে প্রত্যার্পনের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়। বাহরাইনী এ ফুটবলার ২০১২ সালে তার দেশ থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নেন। সে সময় বাহরাইনের একটি পুলিশ স্টেশন ভাংচুরের দায়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিলো এবং তার অনুপস্থিতিতেই বিচারের মাধ্যমে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছিলো। তবে হাকিম আল-আরাইবির ভাষ্য অনুযায়ী তাকে রাজনৈতিক কারণে এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিলো এবং সে কখনোই এ ধরণের অপরাধের সাথে জড়িত ছিলো না।

থাইল্যান্ডে তাকে গ্রেফতারের পর অস্ট্রেলিয়ার নানা নাগরিক সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা তার মুক্তি এবং অস্ট্রেলিয়ায় ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারী পদক্ষেপের দাবীতে আন্দোলন   শুরু করে। তারা হাকিমকে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব দেয়ার আবেদন জানায় যেন সে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসতে পারে। যদিও অস্ট্রেলিয়ান সরকার বাহ্যত এ ধরণের বিশেষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি, তবে গণমাধ্যমে বিষয়টি আসার পর এবং অস্ট্রেলিয়ায় এ বিষয়ে ব্যাপক ক্যাম্পেইন তৈরি হওয়ার পর হঠাৎ করেই থাই সরকার তাকে বাহরাইনে প্রত্যার্পনের প্রক্রিয়া বন্ধ করে কারাগার থেকে মুক্তি দিলে সে প্রায় ৭০ দিন থাইল্যান্ডের কারাগারে থাকার পর অবশেষে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে সকল জল্পনা কল্পনা এবং নানা চড়াই উৎরাই এর পর অবশেষে ১২ মার্চ মঙ্গলবার ২৫ বছর বয়স্ক হাকিম আল-আরাইবি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক হিসেবে শপথ নেয়।

গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, নাগরিকত্ব সংক্রান্ত পরীক্ষাটিতে সে শতভাগ নাম্বার পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। একই দিনে মোট ৪৪ টি দেশ থেকে আসা ২০৭ জন নতুন অভিবাসীদের নাগরিকত্বের শপথ নেয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত হাকিম হাস্যোজ্জ্বল মুখে তার প্রতিক্রিয়ায় জানায়, ‘এখন আর অন্য কোন দেশ আমাকে আটকাতে পারবে না কারণ আমি এখন একজন অস্ট্রেলিয়ান। বাহরাইন, আমার পিছু নেয়ার চেষ্টা করে কোন লাভ নেই! আমি এখন এই দেশে পুরোপুরি নিরাপদ।’ এ সময় সে তার মুক্তির পক্ষে গণসচেতনতা তৈরী এবং অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসতে সাহায্য করার জন্য প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার ক্রেইগ ফস্টার এবং ফরেন এফেয়ার্স মিনিস্টার মেরিস পেইনের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top