সিডনী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


বছরের শেষ দিকে পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত বান্দরবান


প্রকাশিত:
২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৯

আপডেট:
২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:১৫

মেঘের রাজ্যে বান্দরবান   ছবি: সংগৃহীত

প্রভাত ফেরী ডেস্ক: প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজানো বান্দরবানের পরিবেশ-প্রতিবেশ সব বয়সী মানুষকে আকৃষ্ট করে। যেদিকে চোখ যায় শুধু পাহাড়, টিলা সবুজের মহাশান্ত সমাহার। মনভরে এসব উপভোগ করতে তাইতো শীত মৌসুমের শুরুতেই সবুজে ঘেরা বান্দবানে ভিড় করছে পর্যটকরা। জেলার নীলাচল, মেঘলা, নীলগিরি, প্রান্তিক লেক, চিম্বুকসহ সবকটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের উপস্থিতিতে এক ধরনের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে বিচিত্র গাছ-গাছালি আর বনের মধ্যে বন্যপ্রাণীর দেখার সৌভাগ্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মোহিত পর্যটকরা।

নীলাচল ও নীলগিরির মেঘ যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা শহরের কোলাহল থেকে স্বস্তির সন্ধানে ছুটে আসেন বান্দরবানে। তারা মুগ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ান বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, নীল দিগন্ত, স্বর্ণমন্দির, রামজাদি, সাঙ্গু নদী, শৈলপ্রপাত ও নীলগিরিতে। এমনকি একটু বেশি সময় নিয়ে যারা ঘুরতে আসেন তারা ছুটে যান থানচির রেমাক্রি, বড়পাথর, নাফাখুম ঝরনা ও আমিয়া কুম দেখতে।

শীতের আমেজ শুরু হতেই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরাও আশা করছেন এ মৌসুমে সারা বছরের মন্দার প্রভাব কাটিয়ে ওঠার। আর দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে সতর্ক প্রশাসন।

কয়েক মাস আগের বন্যা, ডেঙ্গু ও সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী হানাহানির কারণে বান্দরবানে পর্যটকের আনাগোনা অনেকটা কম ছিল। তবে সবকিছুর রেশ কাটিয়ে শীত যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বান্দরবানের পর্যটনশিল্পের জন্য। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে মুগ্ধ হয়ে ঘুরে বেড়ান এদিক-ওদিক। কেউ এসেছেন সপরিবারে আবার কেউবা এসেছেন বন্ধুবান্ধব নিয়ে। পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের ভেলা ভেসে যাওয়ার দৃশ্য অনেকে বন্দি করেন তার মোবাইল ফোনে। কেউ মেঘলার লেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোট ছোট রাইডে চড়ে উপভোগ করেন প্রকৃতির শোভা। আবার কেউ ঝুলন্ত সেতুতে হেঁটে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে মুগ্ধ হন। আবার কেউবা বসে বসে সময় কাটান।

ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মোহাম্মদ সেলিম, আবদুর রহিম ও জাফর আহমেদ জানান, আমাদের দেশের ভেতরে যে এত সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে সেগুলো আমরা কখনও দেখিনি। দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। এখানের নীলগিরি, নীলাচল আর শৈলপ্রপাত অনেক সুন্দর। তারা আরও জানান, এখানে পরিবেশ বড়ই মনোমুগ্ধকর। রাস্তাগুলো অনেক চমৎকার। পাহাড়ের ওপর থেকে নিচে তাকালে দেখা যায় পাহাড় আর মেঘের লুকোচুরি খেলা। তাছাড়া পাহাড়ে রাস্তার দু’পাশের ছোট কুটিরগুলো অনেক সুন্দর।

রাজশাহী থেকে বান্দরবানের মেঘলা ভ্রমণে আসা আসলাম বলেন, আমরা পরিবারের সব সদস্য নিয়ে মেঘলা ঘুরতে এলাম। প্রতিবছরই বান্দরবান বেড়াতে আসি, বান্দরবান আমাদের খুবই ভালো লাগে।

ঢাকা থেকে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্র নীলাচলে বেড়াতে আসা পর্যটক নুরজাহান জানান, আমার বান্দরবান খুবই পছন্দীয় একটি পর্যটনস্পট। ঈদ, পূজা বা যেকোন বন্ধ পেলেই আমিই এখানে ছুটে চলে আসি। আবাসিক হোটেল মালিক সমিতি বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, এই শীত মৌসুমের শুরুতেই বান্দরবানে পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে পর্যটনশিল্প। চাঙ্গা হয়ে উঠছে পর্যটনশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্যও। তিনি বলেন, পর্যটনশিল্পের বিকাশে বান্দরবানে আবাসিক হোটেলগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রেস্টুরেন্ট, পাশাপাশি পাহাড়িদের তৈরি হস্তশিল্প শোপিস ও তাঁতের কাপড়ের দোকানসহ পর্যটনশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও।

অন্যদিকে বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের উপপরিদর্শক সুহৃদ চাকমা জানান, পর্যটক যারা এসেছেন বা আসবেন ওনারা যাতে নিরাপদে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভ্রমণ করতে পারেন সেজন্য আমাদের সর্বাপেক্ষা প্রচেষ্টা চলছে। নিরাপত্তার বিষয়ে কারও কোনো সমস্যা হবে না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top