সিডনী সোমবার, ২০শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


রোজা পালনকারীদের জন্য ১১টি পরামর্শ


প্রকাশিত:
১৭ মে ২০১৮ ২০:০৫

আপডেট:
২০ মে ২০২৪ ১৫:৫১

রোজা পালনকারীদের জন্য  ১১টি পরামর্শ

রমজান মাসে ধর্মীয় বিধি বিধানের পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য স্বাস্থ্য ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারণেই পুষ্টিবিদরা বলছেন, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার পর সেহরি ও ইফতারে খাদ্যদ্রব্য বাছাইও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। জীবনাচরণেও কিছুটা পরিবর্তন এসে থাকে এই সময়ে, পরিবর্তন আসে নিয়মিত কাজের ধরণেও।



ভাজাপোড়া খাবার নয়   



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক গোলাম মাওলা বলছেন, মাছ ডাল ভাত আদর্শ খাবার। ভোররাতে গরুর মাংস এড়িয়ে মুরগী খেলে ভালো হবে। তবে প্রয়োজন শাক সবজি ও ডাল শরীরের জন্য ভালো হবে। পুষ্টিবিদ অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলছেন, ব্যক্তিকেই আগে বুঝতে হবে কোনটি তার শরীরের জন্য ভালো হচ্ছে না। যেটি ক্ষতিকর মনে হবে সেটিকে এড়াতে হবে।  



খাদ্য তালিকায় যা থাকবে



পানি, ফল, চিড়া, রুটি, ভাত, সবজি, ডাল, ডিম, হালকা খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারে। গোলাম মাওলা বলছেন মানসম্পন্ন হালিম শরীরের জন্য উপকারী হবে। এটি শক্তি বাড়ায়।



সতর্ক হয়ে খেতে হবে



বিরিয়ানি, তেহারির মতো খাবারকে ভারী খাবার হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়। অধ্যাপক গোলাম মাওলা বলছেন, মাঝে মধ্যে ইফতারির পর হালকা কম তেলযুক্ত তেহারি খাওয়া মন্দ না।



নিয়মিত খাবারকে গুরুত্ব দিতে হবে



পুষ্টিবিদ নাজমা শাহীন বলছেন, সাধারণত একজন মানুষ নিয়মিত যেসব খাবার খান রোজার সময়েই সেগুলোই তার জন্য যথেষ্ট। তবে সারাদিন রোজা পালন শেষে পানি খেতে হবে পর্যাপ্ত। আর বেশি গরম পড়লে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।



শারীরিক পরিশ্রম কমানো ও শান্ত থাকা



রোজার সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম সমস্যার কারণ হতে পারে। গোলাম মাওলা বলছেন, একেবারে অলস থাকাও যেমন ক্ষতিকর তেমনি অতিরিক্ত পরিশ্রমও ক্ষতিকর হবে। তাই এসব বিষয়ে সাবধান হতে হবে।



সহজে যাতে হজম হয়



অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলছেন, রোজা পালনকারী ব্যক্তিকে বুঝতে হবে কোন খাবারগুলো তার সহজে হজম হয়। এসব খাবারকেই বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যেসব খাবার হজমে সমস্যা করে সেগুলো না খাওয়াই ভালো। কারণ রোজার সময় শরীরের এনজাইম যা হজর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয় সেটি বন্ধ থাকে।



একবারে বেশি খাবার থেকে বিরত থাকা



অধ্যাপক গোলাম মাওলা বলছেন, সারাদিন রোজা পালনের পর একবারে অনেক খাবার খেলে সেটি ক্ষতিকর হতে পারে। তাই কোনভাবেই অতিরিক্ত খাবার খাওয়া যাবেনা। বরং ফল ও সবজি দিয়ে পরিমাণ মতো ইফতার করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।



খাবার যেভাবে খাবেন



গোলাম মাওলা ও নাজমা শাহীন দুজনই বলছেন, ধীরে ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে। ইফতারির শুরুতেই পানি শরীরের জন্য উপকারী। পাশাপাশি খেজুর শক্তি যোগাতে ভূমিকা রাখে।



স্যুপ হতে পারে দারুণ খাবার



রোজার সময় সারাদিন পর স্যুপ শরীরকে সতেজ করতে পারে এবং খাবার হজম প্রক্রিয়া ঠিক রাখতেও এটি কাজে লাগে। অধ্যাপক গোলাম মাওলা বলেন, শাক সবজি তবে বাধা কপি বাদ দিয়ে ফুলকপির স্যুপ বা লেটুস পাতার স্যুপ অনেক উপকারী। লেটুস পাতায় কোন গ্যাস হয়না। আর গাজর খেলে সেটি হালুয়া বানিয়ে অল্প খাওয়া যেতে পারে।



খাবার ও জীবনাচরণ ঠিক রাখা



অধ্যাপক গোলাম মাওলা বলছেন, শুধু খাবারই নয়, বরং এর পাশাপাশি প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। আর কঠিন শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। ইফতারের পর বা সেহেরীর পর ধূমপান থেকেও বিরত থাকা উচিত।



যারা ঔষধ সেবন করেন তারা রোজা করবেন যেভাবে



রমজানে সাধারণত কিছু সমস্যা হয় যার মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা, ক্লান্তি কিংবা অ্যাসিটিডি। আর যারা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা কিডনি জটিলতায় ভুগছেন তাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। অধ্যাপক গোলাম মাওলা ও অধ্যাপক নাজমা শাহীন দুজনই এসব বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মাওলা বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রোজা রেখেও ওষধ সেবন করা সম্ভব। কারণ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইফতার থেকে সেহরির সময়ে ওষধ সেবন করা যায়।



সূত্র: বিবিসি


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top