সিডনী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


ঘূর্ণিঝড় আম্ফান: লণ্ডভণ্ড পশ্চিমবঙ্গ, নিহত ১২


প্রকাশিত:
২১ মে ২০২০ ১২:৫৬

আপডেট:
২১ মে ২০২০ ১২:৫৮

ফাইল ছবি

 

প্রভাত ফেরী: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় 'আম্ফান'। বুধবার দুপুরের পর রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানে আম্ফান। সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের সৈকত নগরী দিঘা, মান্দারমনি, শঙ্করপুর, তাজপুর, হলদিয়াসহ একাধিক উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো বাতাস শুরু হয়। উত্তাল হয়ে ওঠে সাগর। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঝড়ে পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষয়ক্ষতি করোনাভাইরাসের মহামারি থেকেও মারাত্মক হবে বলে মনে করছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব শুরুর পর বুধবার (২০ মে) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক লাখ কোটি রুপিতে পৌঁছাতে পারে। ঝড়ের তাণ্ডবলীলা বোঝাতে গিয়ে বারবারই তিনি রাজ্যের সর্বনাশ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বলে খবর দিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।

তিনি আরো বলেন, ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। ঝড়টি পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এতে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভূমিতে ঢুকে পড়তে শুরু করে এবং সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন উপকূলে আছড়ে পড়ে আম্ফান। কলকাতায় ঘণ্টায় প্রায় ১৩৩ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় ঝড়ো হাওয়া।

সারা দিন রাজ্য সরকারি সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমে বসেছিলেন মমতা। দিন শেষে মমতা বলেন, দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গা শেষ হয়ে গেছে। দুই ২৪ পরগণা, দুই মেদিনীপুরসহ একাধিক অংশে ধ্বংসলীলা চলেছে। 'সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। সব ব্রিজ বন্ধ। ইলেকট্রিসিটি পুরো শেষ, পানির সংযোগ শেষ। কৃষি ক্ষেত্র সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত।'

তিনি বলেন, রাজ্যে তিনটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রথমত করোনা, দ্বিতীয়ত পরিযায়ী শ্রমিক ও তৃতীয় হলো এই আম্ফান। এতটা ক্ষতি হবে, এমনটা আশা করেননি বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতি না করে কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের দাবিও জানান তিনি। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করার জন্য আগামীকাল বেলা ৩টার সময় মিটিং ডেকেছেন মমতা।

এদিকে, উপকূল অতিক্রম করে এরইমধ্যে স্থলে ভাগে উঠে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ভারতের পশ্চিবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবলভাবে বয়ে গেছে। ঝড়টি শুরুর গতিপথ বদলে ফেলায় এ ঝড়ের কবল থেকে বেঁচে গেছে বাংলাদেশের অনেকগুলো উপকূলবর্তী জেলা। তবে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন সাতক্ষীরা ও সুন্দরবনে ঝড়ের প্রবল প্রকোপ পুরোপুরি এড়াতে পারেনি। পারেনি খুলনা জেলাও, যদিও সাতক্ষীরা তুলনায় খুলনায় ঝড়ো হাওয়ার গতি ছিল সাতক্ষীরার থেকে তুলনামূলক কম। এরপর রাতেই ঝড়ের বাংলাদেশ অংশের প্রভাব পড়েছে যশোর ও নড়াইল জেলায়। এভাবে এখন পর্যন্ত এর গতিপথ আছে জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার দিকে। তবে এটি বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে আজ রাজশাহীতে গিয়ে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অধিদফতর।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Developed with by
Top