কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যা, টানা বিক্ষোভে অচল যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশিত:
২ জুন ২০২০ ২২:০১

আপডেট:
২ জুন ২০২০ ২২:০৫

ফাইল ছবি

 

প্রভাত ফেরী: মিনিয়াপোলিস পুলিশ হেফাজতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবারও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। এই নিয়ে টানা ছয় দিন বিক্ষোভ চলছে। অন্তত ৪০টি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিসহ ১৫টি অঙ্গরাজ্যে সেনাবাহিনীকে সক্রিয় করা হয়েছে। মিনিয়াপোলিস ও মিনেসোটার সেন্ট পল এলাকায় আন্তঃঅঙ্গরাজ্য মহাসড়কে কয়েক হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। নিউ ইয়র্কে পুলিশের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে প্রতিবাদকারীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ফ্লয়েড হত্যায় জড়িত চার পুলিশ কর্মকর্তার বিচার। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে ইউরোপের কয়েকটি দেশেও বিক্ষোভ হয়েছে।

ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় মিনিয়াপোলিস পুলিশ বিভাগ তাদের চার কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করে। এদের মধ্যে ফ্লয়েডের ঘাড়ে হাঁটু তুলে দেওয়া ৪৪ বছর বয়সী ডেরেক চৌবিনও আছেন। গ্রেফতারের পর ডেরেকের বিরুদ্ধে ফ্লয়েডকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় মিনেসোটার রাজধানী সেন্ট পল-এ বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন এবং মিছিল করেন। সন্ধ্যার শেষ দিকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী কালো পোশাক পরে আরেকটি মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় তারা স্লোগান দেন ‘ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার’ ও ‘জর্জের জন্য ন্যায়বিচার’। মহাসড়কেই হাঁটু গেড়ে বসে বিক্ষোভকারীরা কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করে।

জেসমিন হওয়েল নামের ২৭ বছরের এক বিক্ষোভকারী বলেন, এটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ। নীরবতাও শক্তিশালী হতে পারে। ঐক্য, ক্ষমতা ও সংগঠনের পাশাপাশি এই একটি বার্তাও আমরা ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছি। তিনি জানান, সবাইকে শান্ত মনে হচ্ছে এবং এটি খুব ভালো সময়। শেষ পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি থাকার বিষয়ে আশাবাদী তিনি। 

মিনিয়াপোলিসের বিক্ষোভ ধীরে ধীর কম সহিংসতার দিকে গড়ালেও অন্যান্য শহরে তা বাড়ছে। রবিবার রাতে বেশ কয়েকটি শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা বিক্ষোভ অবলোকন ও টহল দিয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাসভবন ও কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। এখানে সড়কে আগুন লাগিয়ে বিক্ষোভ করেন প্রতিবাদকারীরা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন’র সরাসরি প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, নিউ ইয়র্ক সিটিতে পুলিশ বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে জোর করে সরানোর চেষ্টা করছে। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে উত্তেজনাকর মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছেন।

শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক: দেশজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ চলার মধ্যেই জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার প্রথমে ওভাল অফিসে অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। এরপর রাতে গভর্নর, আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্য ও জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত ট্রাম্পকে সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি। শুধু একের পর এক টুইট করেছেন তিনি। ট্রাম্পের দাবি, যারা কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু নিয়ে প্রতিবাদ করছেন, তারা নৈরাজ্যবাদী। তার অভিযোগ, বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গিয়ে দেশের প্রগতিশীল বামপন্থী শক্তিগুলি দেশের মধ্যে নৈরাজ্য চালাচ্ছে। সমালোচকদের অভিযোগ, ট্রাম্প পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পরিবর্তে তা আরও উত্তপ্ত করে তুলছেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top