দূর্নীতির অভিযোগে কানাডা অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ


প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২০ ২২:২০

আপডেট:
২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৯

 

প্রভাত ফেরী: দূর্নীতির অভিযোগে কানাডার অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিল মরনো। তবে তাঁর পদত্যাগের কারণ এখনো পর্যন্ত খুব স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা একটি চ্যারিটি প্রকল্পের সঙ্গে তিনি যুক্ত। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায়, প্রধানমন্ত্রীর চাপে পদত্যাগ করেছেন তিনি। তবে বিল মরনো নিজে সে কথা স্বীকার করেননি।

সোমবার নিজেই পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, নিজের ইচ্ছেতেই প্রধানমন্ত্রী কাছে পদত্যাগপত্র পেশ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী তা গ্রহণ করেছেন। ফলে আপাতত তিনি আর মন্ত্রিসভার অংশ নন। নিজের কেন্দ্র থেকেও সাংসদ হিসেবে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পদত্যাগের কারণ ব্যক্তিগত বলেই জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, দ্বিতীয়বার নির্বাচনে লড়াইয়ের কোনও ইচ্ছা তাঁর ছিল না। সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। সে কারণেই দ্রুত পদত্যাগ করলেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও জানিয়েছেন, বিলের সঙ্গে তাঁর পেশাদার এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। তা বজায় থাকবে। কানাডার অর্থনীতিতে বিলের অবদানের কথাও স্বীকার করেছেন ট্রুডো।

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই অস্থির সময়ে বিলের আচমকা পদত্যাগের নেপথ্যে অন্য কারণ রয়েছে। করোনাকালে একটি চ্যারিটি প্রকল্প শুরু হয়েছে ক্যানাডায়। বহু তারকা এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। উই চ্যারিটির উদ্দেশ্য বিশ্ব জুড়ে ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করা। বিশেষ করে করোনা-কালে যে সব দেশে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়েছে, পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তাদের সাহায্য করা উই চ্যারিটির অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো এবং অর্থমন্ত্রী বিল দুই জনেই এই চ্যারিটির সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয়, অর্থমন্ত্রী দুই মেয়েও এই চ্যারিটির অংশ বলে শোনা গিয়েছে। একজন বেতন পান সেখান থেকে। অভিযোগ এই চ্যারিটির টাকায় পরিবার নিয়ে কেনিয়ায় গিয়েছিলেন উই। সেই টাকা ফেরত দেননি তিনি। এটা একপ্রকার দুর্নীতি। এই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।

তবে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, শুধু বিল নন, প্রধানমন্ত্রীও আতসকাচের বাইরে নন। তিনি কী ভাবে এই চ্যারিটির সঙ্গে যুক্ত, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ক্যানাডার শাসক বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। নিউ ডেমোক্যাটিক দলের নেতা জগমিত সিং বলেছেন, ''ক্যানাডার এমন এক শাসক দরকার, যারা দেশের মানুষের সমস্যা নিয়ে কথা বলবে, নিজেদের দুর্নীতি নিয়ে নয়।'' কনসারভেটিভ দল এর জন্য সরাসরি ট্রুডোকেই দায়ী করেছেন। তাদের বক্তব্য, বিলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন ট্রুডো। বস্তুত, বিরোধীরা প্রায় সকলেই ট্রুডোকেই এর জন্য দায়ী করছেন।

সরকারপন্থীদের একটি অংশের বক্তব্য, ট্রুডোর সঙ্গে বিলের মতবিরোধ চলছিল। সম্প্রতি ট্রুডো ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড এবং ব্যাঙ্ক অফ ক্যানাডার প্রাক্তন গভর্নর মার্ক কার্নের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। করোনা-কালে তাঁর কাছে পরামর্শ চেয়েছেন। যা ভালো চোখে দেখেননি বিল। শুধু তাই নয়, অনেকের বক্তব্য, মার্ককেই পরবর্তী অর্থমন্ত্রী করার পরিকল্পনা করছিলেন ট্রুডো। যদিও বিল জানিয়েছেন, পরবর্তী নির্বাচনে দাঁড়ানোর কোনও পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর। ট্রুডো তাঁকে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো অপারেশন এবং ডেভেলপমেন্টের সেক্রেটারি জেনারেল হওয়ার অনুরোধ করেছেন বলেও জানিয়েছেন বিল। তাঁর সঙ্গে ট্রুডোর দূরত্ব তৈরি হওয়ার যে আলোচনা বিভিন্ন মহলে হচ্ছে তা ঠিক নয় বলেই দাবি করেছেন বিল।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top