পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আরো ভালোভাবে আসছেন সৌরভ!


প্রকাশিত:
২৫ আগস্ট ২০২০ ২৩:০৪

আপডেট:
২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:২৯

 

প্রভাত ফেরী: রাজ্য সরকারের দেওয়া জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন সৌরভ। স্কুল করার জন্য রাজ্যের তৃণমূল সরকার ওই জমি সৌরভকে দিয়েছিল। বিসিসিআইয়ের একটি সূত্রে পাওয়া এই তথ্য একটি ইংরেজি দৈনিক প্রকাশ করে দেওয়ার পর রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (‌বিসিসিআই)‌ সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। সেই যোগাযোগ সূত্রে এমন কথাও ছড়ায় যে, পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁকে হয়তো ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দেখা যাবে। এই গুজব নিয়ে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতারাও আশ্চর্য রকম নীরবতা পালন করে যান। ফলে ওই রটনার পেছনে ঘটনা কতখানি, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও।

স্বয়ং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না করায় জল্পনার মাত্রা বেড়েই গিয়েছে। এরই মধ্যে সৌরভের স্ত্রীর একটি মন্তব্যে ওই জল্পনা রীতিমতো সীমা ছাড়িয়ে যায়। কিছুদিন আগে সৌরভের জন্মদিনে তাঁর স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে তাঁর রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি। বরং বলেছিলেন, ‘সৌরভ যদি রাজনীতির আঙিনায় পা দেন, তবে তা শীর্ষে পৌঁছনোর জন্যই দেবেন।’ স্বভাবতই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার দৌড়ে সৌরভ রয়েছেন বলে অনেকেই ধরে নেন।

তবে, শুধু বিজেপি নয়, তৃণমূলের সঙ্গেও সৌরভের ঘনিষ্ঠতা কম নয়। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর মধুর সম্পর্কের কথা অজানা নয় কারও। তবে বিষয়টি অনেকে প্রথমে স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছিলেন। কিন্তু জুলাই মাসের প্রথম দিকে আচমকাই সৌরভকে নবান্নে যেতে দেখে জোর চাঞ্চল্য তৈরি হয় রাজ্য রাজনীতিতে। নবান্নে গিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু বৈঠকের বিষয় নিয়ে সৌরভ, মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের তরফে কোনও রকম মন্তব্য করা হয়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়। রাজ্যের ক্রীড়া মহলের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলও নড়েচড়ে বসেছিল তখন। বোর্ড সভাপতি সৌরভ অবশ্য তখন জানিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। তা ছাড়া এই মুহূর্তে রাজনীতিতে আসার কোনও ইচ্ছেই তাঁর নেই।

তবে তার পরও সরকার বা শাসক দলের সঙ্গে সৌরভের কোনও রকম মাখামাখি দেখা যায়নি। পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকার বা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্কের কথাই বেশি শোনা গিয়েছে। যেহেতু ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচন, তাই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর নামই অনেকের মুখে উচ্চারিত হতে শুরু করে। এর মধ্যে সৌরভ রাজ্য সরকারের দেওয়া জমি ফিরিয়ে দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন মহলে। জানা গিয়েছে, নিউটাউনে আইসিএসই বোর্ডের অনুমোদিত একটি স্কুল গড়ার জন্য রাজ্যের তৃণমূল সরকার সৌরভকে ২ একর জমি দিয়েছিল।

কিন্তু বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি জলঘোলা হওয়ার সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছে ওই খবরটিই। জানা গিয়েছে, নিউটাউনে পাওয়া জমিটি নিয়ে মামলার মুখে পড়তে হয় সৌরভকে। কিন্তু সৌরভ আইনি ঝামেলায় জড়াতে চাননি। তাই তিনি সেই জমি রাজ্য সরকারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আরও জানা গিয়েছে, সেই জমি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জুলাই মাসের প্রথম দিকে সৌরভ গিয়েছিলেন নবান্নে। শুধু এই খবরই নয়, এর আগে বাম জমানাতেও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জমি পেয়েছিলেন সৌরভ। সেই জমি নিয়েও মামলা হয়েছিল। তাই সেই জমিও সরকারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

জমি ফেরতের কারণটি প্রকাশ্যে আসায় আবার বিভিন্ন প্রেক্ষিতের কেউ কেউ অন্য প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার সৌরভকে এমন একটি জমি দিয়েছে যে, তা নিয়ে তাঁকে আইনি জটিলতায় পড়তে হল! সৌরভকে জমি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে তাঁরা সংশয়ও প্রকাশ করেছেন।


বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


Top